বার্সেলোনার পানশালায় এক তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে এক বছরের বেশি সময় কারাবন্দি আছেন ব্রাজিলের সাবেক ফুটবলার দানি আলভেজ। তবে শুরু থেকে নিজের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি। সর্বশেষ সোমবার শুরু হওয়া বিচারকার্যের শেষদিন বুধবার আদালতে একইভাবে জবানবন্দি দেন আলভেজ। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আদালত চূড়ান্ত রায় দিতে পারেন। এদিন কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে আলভেজ বলেন, ‘যদি সে চলে যেতে চাইতো, তাহলে যেতেই পারতো। কারণ, সে সেখানে থাকতে বাধ্য নয়। আমি কোনো হিংস্র প্রকৃতির মানুষ নই।’ নিজে কথা বলার বাইরে পুরোটা সময় বিচারক অন্যদের বয়ান শোনার সময় আলভেজ সামনের সারিতে চুপচাপ বসে ছিলেন। এ সময় তাকে হাতকড়া পরিয়ে রাখা হয় এবং পাশে একজন পুলিশ কর্মকর্তা দাঁড়িয়ে থাকেন। শুধু ধর্ষণই নয়, তরুণীকে আঘাত করা ও তার চুল টেনে ধরার মতো শারীরিক নির্যাতন করেছিলেন বলেও অভিযোগ রয়েছে আলভেজের বিরুদ্ধে। বুধবার পরিচয় গোপন রাখতে পর্দার আড়ালে থেকে এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে সাক্ষ্য দেন ভুক্তভোগী তরুণী।
এদিন ভুক্তভোগীর এক বন্ধু ও কাজিনও আদালতে হাজির হন। ধর্ষণের পর ওই তরুণীকে কতোটা যন্ত্রণাদায়ক অবস্থার মধ্যদিয়ে যেতে হয়েছে, সে বিষয়ে তারা আদালতে সাক্ষ্য দেন। ধর্ষণের অভিযোগ তোলা তরুণীর চিকিৎসা করেছেন একজন মনোবিজ্ঞানী। তিনি আদালতকে বলেন, এই নারীর মধ্যে বিপর্যস্ত ভাবের লক্ষণ দেখা গেছে। তবে আলভেজের আইনজীবীরা যেসব বিশেষজ্ঞকে নিয়ে আসেন, তাদের দাবি, মামলা ঘিরে সংবাদমাধ্যমের তুমুল আগ্রহের কারণে মেয়েটি উদ্বিগ্ন হয়ে থাকতে পারেন। গত মঙ্গলবার বিচারকার্যের দ্বিতীয় দিন প্রায় ২০ জন প্রত্যক্ষদর্শী আদালতে সাক্ষ্য দেন। এর মধ্যে আলভেজের একজন ব্রাজিলিয়ান বন্ধুও বলেন, পানশালায় প্রবেশের আগে আলভেজ প্রচুর পরিমাণে অ্যালকোহল পান করেন। এর আগে অবশ্য একবার যৌন সম্পর্কের কথা স্বীকার করে আলভেজ বলেন, সবকিছু দুজনের ইচ্ছাতেই হয়েছে। তবে স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে যাবে এ শঙ্কায় তিনি মিথ্যা বলেছিলেন বলেও পরে দাবি করেন। বুধবার আদালতে আলভেজের স্ত্রী জোয়ানা সাঞ্জও উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলে সেদিন রাতে বাড়ি ফেরার পর আলভেজ কথা বলার মতো পরিস্থিতিতে ছিলেন না বলে সাঞ্জ সে রাতে তার কাছ থেকে কিছু জানতে চাননি। ২০২২ সালের ৩০শে ডিসেম্বর বার্সেলোনার সাটন নামে একটি পানশালার ভিআইপি সেকশনের বাথরুমে আলভেজ তাকে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ করেন সেই তরুণী। তিন সপ্তাহ পর আলভেজকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর থেকেই স্পেনে কারাবন্দি বার্সেলোনা, জুভেন্টাসের সাবেক এই ফুটবলার। স্পেনের কৌঁসুলিরা আলভেজের ৯ বছর কারাদণ্ড দাবি করেছেন। এ ছাড়া ভুক্তভোগীর জন্য ১ লাখ ৫০ হাজার ইউরো (১ কোটি ৭৭ লাখ টাকা) ক্ষতিপূরণ চেয়েছেন।