ওপেনার বুচাথামকে ব্যক্তিগত ১৭ রানে সাজঘরে ফিরিয়ে শুরুটা করেন ফাহিমা খাতুন। এরপর চানিডা ও টপ অর্ডারের আরেক ব্যাটার নান্নাপাট কনচারোয়েনকিকেও আউট করেন তিনি। মিডল অর্ডারে ধস নামান জান্নাতুল ফেরদৌস সুমনা। ওপেনিংয়ের পর শুধু চতুর্থ জুটিতে কিছুক্ষণ উইকেটে ছিলেন থাইল্যান্ডের ব্যাটাররা। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জুটি আসে চতুর্থ উইকেট জুটিতে, ১৮ রান। এর বাইরে কোনো জুটি দুই অঙ্কের ঘরেও যেতে পারেনি। প্রায় সাত বছর পর ওয়ানডে খেলতে নেমে একপর্যায়ে ১ রানে ৫ উইকেট নিয়ে নেন সুমনা। পরে আরও ৬ রান খরচ করেন তিনি। আর ফাহিমার খরচ ২১ রান। ম্যাচ শেষে ফাহিমা বললেন, বল হাতে নিয়েই বুঝতে পেরেছিলেন বিশেষ কিছু অর্জন করতে পারেন। তবে আলাদা কোনো ভাবনা ছিল না সুমনার।
লাহোরে বৃহস্পতিবার নিগার সুলতানার ৮০ বলে ১০১ ও শারমিন আক্তারের অপরাজিত ৯৪ রানের সৌজন্যে নিজেদের রেকর্ড ২৭১ রান করে বাংলাদেশ। পরে ফাহিমা ও সুমনার দুর্দান্ত বোলিংয়ে ৯৩ রানে গুটিয়ে যায় থাইল্যান্ড। বাংলাদেশ পায় ১৭৮ রানের রেকর্ডগড়া জয়। ছেলেদের ওয়ানডেতে এক ইনিংসে দুই বোলারের ৫ উইকেটের ঘটনা স্রেফ একটি। ১৯৭৭ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৫টি করে উইকেট নিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার গ্রেগ চ্যাপেল ও গ্যারি কোজিয়ের। ফাহিমা ও সুমনার হাত ধরে প্রায় ৪৮ বছর পর আবার এমন কিছুর দেখা পেল ওয়ানডে ক্রিকেট। ম্যাচ শেষে বিসিবি’র ভিডিওবার্তায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে ফাহিমা বলেন,
‘আলহামদুলিল্লাহ্?। অবশ্যই ভালো লাগার অনেক বড় একটা বিষয়। বিগত সময়ে অনেকবার আমার এই সুযোগটা এসেছিল, ৫ উইকেট নেওয়ার। এবারই প্রথম নিতে পারলাম। বিগত সময়ে ৪টা উইকেট পেয়েছি। এখন ৫ উইকেট নিতে পেরে অনেক ভালো লাগছে। আমি যেই প্রান্ত থেকে বোলিং করছিলাম, প্রথম বলটা ধরেই আমার মনে হচ্ছিল, আজকে আমার দিন হতেও পারে। উইকেট নেওয়ার সুযোগটা আমার অনেক বেশি ছিল। সেদিক থেকে আমি বলব, আলহামদুলিল্লাহ।’
তবে ফাহিমার মতো আগেভাগে তেমন কিছুর আভাস পাননি সুমনা। তিনি বলেন, ‘এটা আমার প্রথম ৫ উইকেট। আমার জন্য অনেক বিশেষ একটা ব্যাপার। সারাজীবন মনে রাখার মতো স্মৃতি। আমি একটু দেরিতেই বোলিংয়ে আসি। তখন চিন্তা ছিল না যে ৫ উইকেট পাব কিনা। শুধু প্রক্রিয়াটা অনুসরণের চেষ্টা করছিলাম। আলহামদুলিল্লাহ্? ফল এসেছে। সত্যি বলতে, কখনও এভাবে (৫ উইকেট বা কোনো লক্ষ্য) আমি চাই না। এই ম্যাচেও চাওয়া হয়নি। চেষ্টা করছিলাম, কোচ যেভাবে বলেছেন উইকেট টু উইকেট বল করতে। সেটাই চেষ্টা করছিলাম। আলহামদুলিল্লাহ্? সফল হয়েছি।’
দুই স্পিনারের অনন্য কীর্তির আগে বাংলাদেশের হয়ে ওয়ানডেতে সেঞ্চুরি করা দ্বিতীয় ব্যাটার হয়ে যান নিগার সুলতানা জ্যোতি। মাত্র ৭৮ বলে তিন অঙ্ক ছুঁয়ে দেশের দ্রুততম সেঞ্চুরিয়ানও এখন তিনি। ম্যাচ শেষে জ্যোতি বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ্?! টুর্নামেন্টের প্রথম জয়। দলের জন্য অবদান রাখতে পেরে অনেক ভালো লাগছে। দ্রুততম সেঞ্চুরির কথা আসলে ওইভাবে মাথায় ছিল না যে, দ্রুততম সেঞ্চুরি হতে পারে বা এমন কিছু। লক্ষ্য ছিল দলের রান যেন অন্তত আড়াইশ’র বেশি হয়। (ফারজানা) পিংকি আপু ও (শারমিন) সুপ্তা আপু যখন ব্যাটিং করছিলেন, তখন মনে হচ্ছিল আমি ভালো স্ট্রাইক রেটে দ্রুত রান ওঠানোর চেষ্টা করব। যাতে পরবর্তীতে যারা যাবে ব্যাটিং করতে তারা যেন আড়াইশর বেশি রানের লক্ষ্য পূরণ করতে পারে। আলহামদুলিল্লাহ্?! সুযোগ ছিল। কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছি। হয়ে গেছে। আল্লাহ্?র কাছে লাখ লাখ শুকরিয়া।’