গেল বছর, ২১শে আগস্ট দায়িত্ব নেয়ার পরই ঘোষণা দিয়েছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিবি) দুর্নীতিমুক্ত করার। শুধু তাই নয়, দেশের ক্রিকেটে দীর্ঘ ১৬ বছরে হওয়া অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে যারা জড়িত তাদের মুখোশ উন্মোচন করাও। কিন্তু নয় বিসিবি সভাপতি ফারুক এখন আছেন কঠিন চাপে। তাকেই নিয়ে উঠছে নানা রকম অনিয়মের অভিযোগ। তার বিপক্ষে আনা তিনটি অভিযোগ বেশ গুরুতর। এরই মধ্যে অন্যতম বোর্ডের অনুমতি ছাড়া এফডিআর অন্য ব্যাংকে রাখা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা এখনো থামেনি। এর রেশ কাটতে না কাটলে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের সঙ্গে তার যোগাযোগ সখ্যতার খবর নতুন করে আলোচনায়। এ ছাড়াও অভিযোগ, তিনি বিসিবি পরিচালনা করছেন একক স্বেচ্ছাচারিতায়। তবে বিসিবি সভাপতি এই সব অভিযোগই অস্বীকার করে আসছেন। দৈনিক মানবজমিনকে তিনি জানিয়েছেন, বিসিবি’র দুর্নীতি নিয়ে কঠোর অবস্থানের কারণে একটি দুষ্টচক্র তাকে নিয়ে নানা রকম মিথ্যা প্রচার করছেন। এর মধ্যে পতিত ফ্যাসিস্ট  সরকারের সঙ্গে তার সম্পর্ক নিয়ে ফারুক বলেন, ‘আমার ফ্যাসিস্টের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নাই। যদি থাকতো, আমি আজকে আপনার সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলতাম না। আমি কিন্তু প্রেসিডেন্ট এই নতুন সরকারের। এটা কিন্তু আপনাদের বুঝতে হবে। নতুন সরকার যদি দেখে বিন্দুমাত্র সংশ্লিষ্টতা থাকতো আমার, তাহলে কিন্তু আমি এখানে আসতাম না আজকে।’  অন্যদিকে, ব্যাংক থেকে এফডিআর সরানোর বিষয়ে বিসিবি থেকে ফারুক আগেই ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, ১২০ নয় ২২৮ কোটি টাকা তিনি বিসিবি’র অতিরিক্ত মুনাফা ও ভালো ব্যাংকে আর্থিক নিশ্চয়তার জন্যই স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যা বোর্ড সভা না করলেও প্রভাবশালী পরিচালকদের জানিয়েই তিনি করেছেন। বিশেষ করে দুই পরিচালক মাহবুবুল আনাম ও ফাহিম সিনহার স্বাক্ষর নিয়েই ১৩টি ব্যাংকে এফডিআর রাখা হয়েছে। যদিও পরে এই দুই পরিচালকই অভিযোগ করেছেন যে, তাদের সঙ্গে আলোচনা না করেই বিসিবি সভাপতি এককভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে তাদের জানিয়েছেন। এ ছাড়াও পরিচালকদের মতামতের গুরুত্ব তিনি দেন না এমনটাই অভিযোগ করা হয়। অন্যদিকে, এক পক্ষের দাবি বিসিবি’র সাবেক সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের চেয়ে দুর্নীতিতে তিনি এগিয়ে। নিজের সম্পর্কে নানা অভিযোগ নিয়ে ফারুক বলেন, ‘এটা তো বলা খুব মুশকিল। কেননা, এই জায়গাটা ক্রিকেট বোর্ডের প্রেসিডেন্টের তাই  অনেকের অনেক ইন্টারেস্ট এখানে। তারাও হতে পারে এবং আমরা আসলে অনেক সময় আমি জানি না ভালো কাজগুলো নিচে পড়ে যায় এক্সটার্নাল ইনফ্লুয়েন্সে। সো আমরা চেষ্টা করবো, দুইটাই। ভালো কাজের প্রশংসা করবো, খারাপ কাজের সমালোচনা হবে। এটাই কিন্তু স্বাভাবিক। কিন্তু মাঝে মাঝে ভালো কাজগুলো নিচে চাপা পড়ে যায় এই খারাপ কাজের ভিড়ে। আপনাদের কাছে অনুরোধ করবো, যদি সত্যিটা তুলে ধরেন আমরা সমালোচনামুক্ত হতে পারি। এটা আমার সবার কাছে রিকোয়েস্ট থাকবে, কেননা আমি এমন একজন মানুষ, আপনারা গঠনমূলক সমালোচনা করেন। আমার মেইন দায়িত্বটা কী? বাংলাদেশ ক্রিকেটকে এগিয়ে নেয়া। ওইগুলোতে যে আমার ক্রটিগুলো আছে, সেগুলো তুলে ধরার চেষ্টা করবো, তারপরে বাকি কাজ।’  

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here