জাপা চেয়ারম্যান জি এম কাদের সহ ৯ জনের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মনোনয়ন বানিজ্য ও ডাকাতি মামলায় দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা, সকল আসামীর ব্যাংক হিসাব জব্দ ও আগামী ৩ কার্যদিবসের মধ্যে স্ব-শরীরে বিচারিক আদালতে উপস্থিত হওয়ার আদেশ দেওয়া হয়েছে। মামলার তদন্ত পিবিআই দক্ষিণকে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
আজ ২৬ মে মূখ্য মহানগর হাকিমের আদালত জাপা চেয়ারম্যান জি এম কাদের সহ ৯ জনের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মনোনয়ন বানিজ্য ও ডাকাতির মামলায় দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা, সকল আসামীর ব্যাংক হিসাব জব্দ ও আগামী ৩ কার্যদিবসের মধ্যে স্ব-শরীরে বিচারিক আদালতে উপস্থিত হওয়ার আদেশ দেন। মামলার তদন্ত পিবিআই দক্ষিণকে নির্দেশ প্রদান করেন।
গত শনিবার (১৭ মে) ঢাকার বিজ্ঞ মূখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য ও মানবাধিকার কর্মী নাজমিন সুলতানা তুলি এই মামলা করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে অভিযোগটি পরবর্তী আদেশের জন্য অপেক্ষ্যমান রাখে।
মামলার অপর আসামিরা হলেন- জাপার মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, সাবেক ডিআইজি ডিবি প্রধান হারুন অর রশিদ, জাপার অতিরিক্ত মহাসচিব রেজাউল ইসলাম, জাপার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নেওয়াজ আলী ভূইয়া, জিএম কাদেরের স্ত্রী শেরিফা কাদের, সাবেক ডিসি আকরাম, সাবেক এডিসি নাজমুল, এসআই পবিত্র সরকার।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, বাদিনী জাপার কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য এবং মানবাধিকার কর্মী নাজমিন সুলতানা তুলি। অপরপক্ষে আসামীরা বিগত আওয়ামী সরকারের সাবেক এমপি,মন্ত্রী ও পুলিশ প্রশাসনের সাবেক কর্মকর্তা। তারা দুর্নীতিবাজ এবং জাতীয় পার্টির বিভিন্ন দায়িত্বশীল জায়গায় থেকে পদ বানিজ্য ও মনোনয়ন বানিজ্যের মতো অপরাধে লিপ্ত। ১ নং থেকে ৬ নং আসামীগন বাদিনীর উপর নানাভাবে নির্যাতনের জন্য হুকুমদাতা এবং বাকিরা মাঠ পর্যায়ে হুকুম বাস্তবায়ন করেন।
অভিযোগে বাদিনী আরো উল্লেখ করেন যে, আমি জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে যোগদান করার পর থেকেই সংগঠনের প্রচার ও প্রসারের জন্য সারা দেশ ব্যাপি সাংগঠনিক কার্যক্রমে অংশগ্রহন শুরু করি। আমার নিজস্ব বাগ্মিতা ও কর্মদক্ষতায় অল্প সময়ের মাঝেই জনপ্রিয় হয়ে উঠি। যা ১নং আসামি ভালোভাবে গ্রহন করেন নি এবং আমার কার্যক্রম সীমিত করার অপচেষ্টা করতে থাকেন। পরবর্তী সময়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে এলে তাদের দুর্নীতি, মনোনয়ন বানিজ্যের মতো নানা অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা বাদিনীর সম্মুখে প্রকাশ পায়। ১নং আসামির প্রত্যক্ষ মদদে অন্য আসামিগন ২০২৪ সালের ডামি নির্বাচনে মনোনয়ন বানিজ্য লিপ্ত হয়, এবং বাদিনীকে মনোনয়ন দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ৫০ লক্ষ টাকা দাবি করে মেসেজ দেয়। এসব নিয়ে কেন্দ্রীয় কমিটির মিটিংয়ে বাদিনী প্রতিবাদ করলে এক উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় এবং তাতে দলের অভ্যান্তরীন কোন্দল বৃদ্ধি পায়। বিশেষ করে অর্থের ঝনঝনানিতে দলের ত্যাগী ও পরিশ্রমী নেতা কর্মীগন ক্ষুব্ধ হয়ে বাদীনিসহ অনেকেই পদত্যাগ করেন। সেই দিকে ভ্রুক্ষেপ না করে ১নং থেকে ৬নং আসামিগন বাদীনির উপর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য পুলিশ প্রশাসনের কতিপয় দুর্নীতিবাজ সাবেক কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় এবং আরো অজ্ঞাতনামা ৪০/৫০ জন লোক সাথে নিয়ে ১০/১০/২০২৩ ইং তারিখে রাত ৮.৩০ ঘটিকায় বাদিনীর বাসার দরজা ভেঙে প্রবেশ করে বাসার আসবাবপত্র, ৭ ভরি স্বর্ণাংকার, নগদ ৩ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা গুরুত্বপূর্ণ কাগজ, মোবাইল, ল্যাপট্যাপসহ আসবাবপত্র নিয়ে যায়। বাদিনী এসব নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করার প্রস্তুতি নিলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি প্রদান করে।
নাজমিন সুলতানা তুলি বলেন, আওয়ামী সরকারের পতন হলেও এখনো তারা বিভিন্ন ভাবে শক্তি সঞ্চয় করার চেষ্ঠায় লিপ্ত। আমি দীর্ঘদিন ট্রমায় ভুগেছি এবং সামাজিক ভাবে হেয়োপ্রতিপন্নের স্বীকার হয়েছি। যারা রাজনীতিকে কলুষিত করেছে আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।