এবার ট্রাম্প প্রশাসনের কাছে ক্ষতিপূরণ চেয়েছেন ফিলিস্তিনিপন্থী অধিকার বিষয়ক কর্মী মাহমুদ খলিল। তিন মাস ধরে অন্যায়ভাবে আটক রাখার অভিযোগে ২০ মিলিয়ন ডলারের ক্ষতিপূরণ চেয়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবার আদালতে দায়ের করা মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে যে, ট্রাম্প প্রশাসন তার সুনাম ক্ষুণ্ন করেছে, তার বিরুদ্ধে বিদ্বেষপূর্ণ মামলা করেছে। এছাড়া তাকে বেআইনিভাবে কারাবন্দি করেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ, অভিবাসন ও শুল্ক প্রয়োগকারী সংস্থা (আইসিই) এবং পরররাষ্ট্র দপ্তরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন খলিল। কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভের মুখপাত্র খলিল বলেছেন, তিনি যে অর্থ পাবেন তা দিয়ে অন্য কর্মীদের সাহায্য করবেন। যাদেরকে ডনাল্ড ট্রাম্প দমনের চেষ্টা করেছেন। এছাড়া ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসন নীতি বিবেচনার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা। এতে বলা হয়েছে, খলিলের জন্ম সিরিয়ার দামেস্কে। তার পিতা-মাতা দুজনই ফিলিস্তিনের। ২০২৩ সালের অক্টোবর গাজায় ইসরাইলের যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে বিভিন্ন আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন তিনি।
এদিকে জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞ ও মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো সতর্ক করে বলেছে যে, গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরাইল। আরও বলেছে, কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বব্যাপী ছাত্র নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। ২০২৪ সালের মে মাসে আল জাজিরাকে খলিল বলেছেন, ফিলিস্তিনিদের অধিকারের বিষয়ে আওয়াজ তুলতে পেরে আমি নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করি। তবে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর অভিবাসীদের ওপর খড়গহস্ত হন ডনাল্ড ট্রাম্প। এছাড়া ইহুদি বিদ্বেষীদেরকেও দমনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেন তিনি। এক আদেশে এ ধরনের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদেরকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতাড়িত করতে ফেডারেল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন তিনি। এছাড়া হামাসের প্রতি সহানুভূতিশীল শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিলের হুমকি দেন ট্রাম্প। এর পরিপ্রেক্ষিতে ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় প্রথম খলিলকে গ্রেপ্তার করে ট্রাম্প প্রশাসন। তার স্ত্রীর ধারণ করা এক ভিডিওতে দেখা যায়, ৮ মার্চ অভিবাসন বিষয়ক কর্মকর্তারা খলিলকে হাতকড়া পরিয়ে নিউ ইয়র্ক সিটিতে তার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের করে নিয়ে যাচ্ছেন। তাকে প্রথমে নিউ ইয়র্ক থেকে নিউ জার্সি এবং এরপর লিউসিয়ানাতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাকে একটি বন্দি শিবিরে আটকে রাখা হয়।
এদিকে খলিলের প্রত্যাবর্তনের বিষয়টিকে ন্যায্যতা দেয়ার জন্য মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ১৯৫২ সালের অভিবাস ও জাতীয়তা আইনের একটি বিরল ব্যবহৃত বিধান ব্যবহার করেছেন। যেখানে বলা হয়েছে, মার্কিন পররাষ্ট্র নীতির জন্য হুমকি মনে করেন এমন কোনো বিদেশী নাগরিককে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত পাঠাতে পারবেন দেশটির পররাষ্টমন্ত্রী।