ডেঙ্গু ফের ভয়ঙ্কর রূপ নিচ্ছে। ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে প্রতিদিনই। দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর মিছিলও। একদিনে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। ২০২৩ সালের ভয়াবহ স্মৃতি আবার ফিরে আসছে। গত জুন মাসে রোগী ও মৃত্যুর সংখ্যা একলাফে গত পাঁচ মাসের মিলিত সংখ্যাকে ছাড়িয়ে গেছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে চলতি জুলাই এবং আগামী আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন। চলতি বছরের ডেঙ্গুতে প্রাণহানির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৬ জনে এবং আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে প্রায় ১৫ হাজার রোগী। গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৪২০ জন ডেঙ্গু রোগী। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যে মতে, গত ২৪ ঘণ্টায় যারা ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তাদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ১১৬ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৭৯ জন, ঢাকা বিভাগের অন্যান্য জেলায় ৬০ জন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ২৫ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ৫৭ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৯ জন,  খুলনা বিভাগে ২৬ জন, রাজশাহী বিভাগে ৪৫ জন,  রংপুর বিভাগে ৩ জন ডেঙ্গু রোগী রয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৮১ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। এ নিয়ে চলতি বছরে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে মোট ছাড়পত্র পেলেন ১৩ হাজার ৫৮৪ জন। 

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, এবছরের ১লা জানুয়ারি থেকে ১৩ই জুলাই পর্যন্ত সবমিলিয়ে ১৪ হাজার ৮৮০ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে পুরুষ ৫৯ শতাংশ এবং নারী ৪১ শতাংশ। দেশে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ৫৬ জনের। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ৪ হাজার ৩৪৫ জন। এরপর মাত্র এক মাসে অর্থাৎ জুনের ৩০ দিনে হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৯৫১ জনে। অর্থাৎ আগের ৫ মাস মিলে যত জন ভর্তি হয়েছিল জুনে এক মাসেই তার চেয়ে বেশি ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এই মাসে মৃতের সংখ্যাও অনেক বেশি। আগের ৫ মাসে মারা গেছে ২৩ জন আর এই এক মাসে মারা গেছে ১৯ জন। এ ছাড়া, জুলাইয়ের প্রথম ১৩ দিনে মৃতের সংখ্যা ১৪-তে দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ মৃত্যুহার দিন দিন বাড়ছে। চলতি মাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৪ হাজার ৫৮৪ জন। বছরের শুরু থেকে জুলাই পর্যন্ত ডেঙ্গুর গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী। জানুয়ারি মাসে যেখানে রোগী ছিল মাত্র এক হাজার ১৬১ জন এবং মৃত্যু ১০, সেখানে জুন মাসে আক্রান্ত প্রায় পাঁচগুণ বেশি, ৫ হাজার ৯৫১ এবং মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৯ জনে দাঁড়ায়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here