প্রেসিডেন্টকে স্পিকারের শপথ পড়ানো কেন অবৈধ নয়, তা জানতে হাইকোর্টের রুল

0
4

স্পিকার কর্তৃক প্রেসিডেন্টকে শপথ পাঠ করানো কেন অবৈধ হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। মঙ্গলবার বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামানের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। আইন সচিব, মন্ত্রিপরিষদ সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ব্যারিস্টার ওমর ফারুক।

এর আগে প্রেসিডেন্টকে জাতীয় সংসদের স্পিকারের শপথ পাঠ করানোর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়। বিচার বিভাগের প্রধান হিসেবে প্রধান বিচারপতি যাতে প্রেসিডেন্টকে শপথ পড়ান, সেই নির্দেশনা চাওয়া হয় রিটে।

লেখক, গীতিকবি শহীদুল্লাহ ফরায়জীর পক্ষে গতকাল সোমবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট আবেদনটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ওমর ফারুক।

প্রেসিডেন্টকে শপথ পড়াবেন জাতীয় সংসদের স্পিকার, পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানে যুক্ত করা এই বিধান কেন ১৯৭২ সালের মূল সংবিধানের পরিপন্থী ঘোষণা করা হবে না এবং এই বিধান স্বেচ্ছাচারী, অসাংবিধানিক এবং সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর পরিপন্থী হওয়ায় তা কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে বিবাদীদের প্রতি রুল চাওয়া হয়েছে রিট আবেদনে।

রাষ্ট্রের মালিক হিসাবে নাগরিকের অধিকার সমুন্নত রাখতে রাষ্ট্র প্রধানের শপথ খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করে রিটে আরো বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্টের শপথ তাঁর অধীন বা একজন রাজনৈতিক ব্যক্তির (স্পিকার) কাছ থেকে নেয়া উচিত নয়। কারণ স্পিকারের কার্যাবলী রাষ্ট্রপতি নিজেই পর্যবেক্ষণ ও তত্ত্বাবধান করে থাকেন।

স্বাধীন, সাংবিধানিক সংস্থা বিচার বিভাগের প্রধান হিসেবে প্রধান বিচারপতি পদটি সম্পূর্ণ নির্দলীয় এবং নিরপেক্ষ। তা ছাড়া তিনি (প্রধান বিচারপতি) সংবিধানের অভিভাবক। সুতরাং প্রেসিডেন্টকে শপথ পড়ানোর জন্য প্রধান বিচারপতির পদটিই সবচেয়ে ভালো পদ।

রিটে বলা হয়েছে, সংবিধান দেশের সর্বোচ্চ আইন হওয়া সত্ত্বেও চতুর্থ সংশোধনী এবং পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে এই বিধানটি উদ্দেশ্যমূলকভাবে পরিবর্তন করা হয়েছিল। এর উদ্দেশ্য ছিল প্রেসিডেন্টের পদের ক্ষমতা, মর্যাদাকে ক্ষুণ্ণ করা এবং প্রেসিডেন্টের ওপর পরোক্ষ নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা।

সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীর আগে প্রধান বিচারপতিকে শপথ পাঠ করাতেন প্রেসিডেন্ট আর প্রেসিডেন্টকে শপথ পাঠ করাতেন প্রধান বিচারপতি। চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে প্রেসিডেন্টের শপথ পাঠ করানোর বিধানে পরিবর্তন আনা হয়। এরপর প্রেসিডেন্টকে শপথ পাঠ করান জাতীয় সংসদের স্পিকার।
পরে পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে এই বিধান বাতিল করে দেওয়া হয়। কিন্তু ২০১১ সালে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে প্রেসিডেন্টকে শপথ পাঠ করাবেন স্পিকার, সেই বিধান ফিরিয়ে আনা হয়। যেহেতু সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর কিছু অংশ বাতিল করা হয়েছে, তাই প্রেসিডেন্টকে শপথ পাঠ করানোর বিদ্যমান বিধানটিও বাতিল করা হোক।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here