দক্ষিণ লেবাননের এক ফিলিস্তিনি শরণার্থী শিবিরের কাছে ইসরাইলি হামলায় কমপক্ষে ১৩ জন নিহত হয়েছে। বিবিসিকে একথা জানিয়েছে লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ইসরাইলি সামরিক বাহিনী দাবি করেছে, তারা আইন আল-হিলওয়ে এলাকার একটি প্রশিক্ষণ ঘাঁটিতে কার্যক্রম পরিচালনাকারী হামাস সদস্যদের টার্গেট করেছে। তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, ওই স্থান থেকে ইসরাইলের বিরুদ্ধে হামলার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন করা হতো। তবে হামাস এসব অভিযোগকে গড়াপেটা ও মিথ্যা বলে প্রত্যাখ্যান করেছে। হামাস-সমর্থিত হিজবুল্লাহর সঙ্গে সংঘাত স্থগিতের চুক্তির পরও ইসরাইল লেবাননে নিয়মিত হামলা চালিয়ে আসছে। বেশিরভাগ হামলার লক্ষ্য হিজবুল্লাহ হলেও, লেবাননে অবস্থানরত হামাসকেও একাধিকবার আক্রমণ করেছে ইসরাইল।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, নিহতদের পাশাপাশি কমপক্ষে চারজন আহত হয়েছে। ছবিতে দেখা গেছে, লেবাননের সবচেয়ে বড় ফিলিস্তিনি শরণার্থী শিবির আইন আল-হিলওয়ের প্রবেশমুখে উদ্ধারকর্মীরা কাজ করছেন। অনলাইনে প্রচারিত ভিডিওতে দেখা গেছে, সরু পথ দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স দৌড়ে যাচ্ছে। আর টার্গেট করা এলাকায় বিশাল ধোঁয়ার কুণ্ডলী উঠছে। প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলা হয়, হামলাটি একটি মসজিদের বাইরের এলাকায় হয়েছে। এ স্থানটি সাধারণত রাতে ব্যস্ত থাকে। হামলা নিন্দা জানিয়ে হামাস বলেছে, লেবাননের কোনো ফিলিস্তিনি শিবিরে তাদের সামরিক স্থাপনা নেই। তারা দাবি করেছে, লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হওয়া স্থানটি ছিল একটি খোলা খেলাধুলার মাঠ।
আইডিএফ তাদের বিবৃতিতে বলেছে, হামলার আগে বেসামরিক নাগরিকদের ক্ষতির সম্ভাবনা কমাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল। এর মধ্যে ছিল নির্ভুল অস্ত্র ব্যবহার, আকাশ থেকে পর্যবেক্ষণ এবং অতিরিক্ত গোয়েন্দা তথ্য। হামাস ২০২৩ সালের ৭ই অক্টোবর গাজা থেকে দক্ষিণ ইসরাইলে হামলা চালিয়ে প্রায় ১২০০ মানুষকে হত্যা করে এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করে। এর জবাবে ইসরাইলের সামরিক অভিযান গাজায় কমপক্ষে ৬৯,১৬৯ ফিলিস্তিনির প্রাণ গেছে। ৭ অক্টোবরের পরদিন হিজবুল্লাহ ইসরাইলি অবস্থানে রকেট হামলা চালালে দুই পক্ষের লড়াই ছড়িয়ে পড়ে। গাজায় ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে এই হামলা চালানো হয়েছিল বলে জানায় হিজবুল্লাহ। দুই পক্ষের যুদ্ধ ১৩ মাস ধরে তীব্র হয়ে ওঠে এবং ২০২৪ সালের অক্টোবরের ইসরাইলি বোমাবর্ষণ ও দক্ষিণ লেবাননে স্থল অভিযান দিয়ে চূড়ান্ত রূপ নেয়।
লেবানন জানায়, ইসরাইলের হামলায় সেখানে প্রায় ৪,০০০ মানুষ নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে অনেক বেসামরিক নাগরিকও ছিলেন। ১২ লাখের বেশি বাসিন্দা বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। ইসরাইল জানায়, সংঘাতে তাদের ৮০ জনের বেশি সেনা এবং ৪৭ জন বেসামরিক নাগরিক মারা গেছে।
