পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুর জেলার ইটাহারের মান্নাই অঞ্চলের খিসাহারসহ বেশ কিছু গ্রামের তিনশোর বেশি পরিযায়ী শ্রমিক রাজস্থানে গিয়েছিলেন কাজ করতে। অভিযোগ, বাংলা ভাষায় কথা বলার ‘অপরাধে’ তাদের ‘বাংলাদেশি’ সন্দেহে আটক করে রাখা হয়। আটক অবস্থা থেকেই একজন শ্রমিক কোনোক্রমে গোটা ঘটনা জানিয়ে ফোন করেন ইটাহারের বিধায়ক মোশারফ হোসেনকে। বিষয়টি রাজ্য পুলিশের ডিজি’কেও জানিয়েছেন বিধায়ক। এর পরই বিধানসভায় নিজের ঘরে বিষয়টি নিয়ে সরব হন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এরপরই সরাসরি প্রশ্নের সুরে কেন্দ্রীয় সরকারকে নিশানা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এই সরকার কি বাংলা ভাষাকে নিষিদ্ধ করতে চাইছে?’ গেরুয়া-রাজনীতির সমালোচনা করে এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বারবার দেখছি, বাংলা ভাষার সঙ্গে যেন এক অদৃশ্য শত্রুতা চলছে। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা বাদ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে খবর আসছে। বাংলাকে (পশ্চিমবঙ্গ) বাদ দিয়ে কি ভারতবর্ষের ঐতিহ্য টিকবে?’
কথা প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী এদিন তুলনা টানেন দক্ষিণ ভারতের। তথ্য তুলে ধরে মমতা বলেন, ‘তামিলনাড়ুতে অনেকে সিংহলি ভাষায় কথা বলেন। কেউ কেউ নেপালি ভাষাও বলেন। তা হলে কি তাদের শ্রীলঙ্কা বা নেপালে পাঠিয়ে দেয়া হবে?’
সব শেষে মুখ্যমন্ত্রী হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘এই ঘটনা যদি অবিলম্বে বন্ধ না হয়, বাংলার (পশ্চিমবঙ্গ) মানুষের প্রতি এই অন্যায় যদি দেশের বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতে চলতেই থাকে, তা হলে আমরা কড়া আন্দোলনে নামব। বাংলাকে হেয় করার কোনও চেষ্টাই বরদাস্ত করব না।’
মনে করা হচ্ছে, এর পরেই নড়েচড়ে বসে কেন্দ্র। নড়েচড়ে বসে চাপে পড়া বিজেপি শাসিত রাজস্থান সরকার। কথা হয় দুই রাজ্যের মুখ্য সচিবের। নবান্ন সূত্রে খবর, রাজস্থানে আটক বাঙালি শ্রমিকদের ছেড়ে দেয়ার পাশাপাশি দ্রুত ইটাহারে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা হচ্ছে।