News Times BD

মিটফোর্ডের হত্যাকাণ্ড ‘রাজনৈতিক দুরভিসন্ধি’ বাস্তবায়নে ব্যবহৃত হচ্ছে: বিএনপি

ঢাকার মিটফোর্ডের হত্যাকাণ্ডকে ‘রাজনৈতিক দুরভিসন্ধি’ বাস্তবায়নে ব্যবহৃত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। সোমবার রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এ অভিযোগ করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

 
লিখিত বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘কুমিল্লার মুরাদনগরে সংঘটিত তিনটি নৃশংস হত্যাকাণ্ড, চাঁদপুর মসজিদের ইমামকে নৃশংস হত্যা, খুলনায় যুবদল নেতা মাহবুব মোল্লাকে হত্যা ও রগকাটা-এমন হত্যাকাণ্ডের ক্ষেত্রে সকলের প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর সমমানের ছিলো কিনা সে প্রশ্নও তোলা যেতেই পারে। পরিকল্পিতভাবে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য মিটফোর্ডের হত্যাকাণ্ডকে রাজনৈতিক দুরভিসন্ধি বাস্তবায়নে ব্যবহৃত হচ্ছে বলে মনে করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘‘হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দ্রুত কার্যকর করার বিষয়ে আমাদের দলীয় অবস্থান সুদৃঢ় এবং অপরিবর্তিত। নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের অন্তর্নিহিত কারণ অনুসন্ধানের জন্য আমরা উপযুক্ত ব্যক্তিবর্গের সমন্বয়ে একটি ‘তদন্ত ও তথ্যানুসন্ধানী কমিটি’ গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি যারা  প্রকৃত সত্য উদঘাটন করবেন এবং তা জনসমক্ষে  প্রকাশ করবেন। কিন্তু এ বিষয় নিয়ে যারা রাজনৈতিক পরিবেশ নষ্ট এবং জাতীয় নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত ও অনিশ্চিত করতে চান এবং প্রকারান্তর ফ্যাসিবাদ উত্থানের পথ কারা সৃষ্টি করতে চান, তাদেরকে চিহ্নিত করা ও প্রতিহত করার প্রত্যয়ও একইসঙ্গে উচ্চারণ করতে চাই।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘একটি বিবেকবান রাজনৈতিক দল হিসেবে সাম্প্রতিককালে রাজধানী ঢাকার মিটফোর্ড এলাকায় সংঘটিত লালচাঁদ সোহাগ হত্যাকাণ্ডে বিএনপি তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছে। এই হত্যাকাণ্ডে প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতা বা উপস্থিতির প্রমাণ না থাকা স্বত্বেও ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে যাদের নামে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলার আলোকে আজীবন বহিষ্কারের মতো সর্বোচ্চ সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে মামলার এজহারের অসংগতি প্রসঙ্গে বক্তব্য দেয়া হয়েছে। তাদের বক্তব্য থেকে জানা যায় যে, তাদের উল্লেখিত তিনজন অপরাধীদের নামের স্থলে এমন তিনজনের নাম সংযুক্ত করা হয় যাদের বিরুদ্ধে তাদের কোনো অভিযোগ নেই। দুঃখজনক হলেও সত্যি, নৃশংসতার মাধ্যমে এই হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশগ্রহণকারীদের এপর্যন্ত গ্রেপ্তার দূরে থাক আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা এখনও তাদের নাম-পরিচয় পর্যন্ত উদঘাটনে সক্ষম হয়নি। এছাড়াও আমরা বর্তমান সরকারের কাছে এই হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নেয়া ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার এবং দ্রুত বিচারের পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য দাবি জানিয়েছি।’

ফখরুল বলেন, ‘দৃঢ় দলীয় অবস্থান থাকা স্বত্বেও একটি চিহ্নিত মহল পরিকল্পিতভাবে আমাদের দল এবং শীর্ষ নেতৃত্বের শালীনতা ও চরিত্রহননের দুঃসাহস প্রদর্শন করছে। সার্বিক বিবেচনায় আমাদের বেশ-কয়েকটি বিষয় গুরুত্বের সঙ্গে অনুধাবন করা প্রয়োজনীয় বলে মনে করছি। কারণ বিষয়গুলি জনমনে বেশ কিছু প্রশ্নের উদ্রেক করেছে। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা কোনো রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির জন্য ব্যবহার হচ্ছে কিনা এবং এর মাধ্যমে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের পরিবেশকে বিঘ্নিত করার জন্য বিশেষ কোনো মহলের প্ররোচনায় এই ধরনের ঘটনাকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে সন্দেহ করার যথেষ্ট অবকাশ রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘প্রকাশ্য দিবালোকে অসংখ্য মানুষের সামনে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার নিকটবর্তী অবস্থান থাকা সত্ত্বেও এই রূপ ঘটনার কোনো প্রতিরোধ না হওয়ায় পুরো ঘটনাটি সম্পর্কে জনমনে প্রশ্ন উদ্রেকের যথেষ্ট কারণ রয়েছে। জনসম্মুখে এই রূপ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ এবং প্রতিরোধ ছাড়া বিনা বাধায় ভিডিও ধারণ যুক্তিসঙ্গতভাবেই অনেক প্রশ্নের জন্ম দেয়। পুলিশের বক্তব্য থেকে জানা যায় গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে এই ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের রাজনৈতিক পরিচয় সম্পর্কে কোনো তথ্য উদ্ঘাটিত হয়নি।’

Exit mobile version