রেলক্রসিংয়ে দীর্ঘ সময় অপেক্ষার ভোগান্তি লাঘব হচ্ছে, ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশনের পাশেই এবার চালু হলো ৬ লেনবিশিষ্ট রেলওয়ে আন্ডারপাস। গতকাল প্রধান উপদেষ্টার প্রতিরক্ষা এবং জাতীয় সংহতি উন্নয়ন বিষয়ক বিশেষ সহকারী লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আব্দুল হাফিজ ও রেলপথ মন্ত্রণালয়ে নিযুক্ত বিশেষ সহকারী শেখ মইন উদ্দিন এই আন্ডারপাস উদ্বোধন করেন।
৫ মিটার উচ্চতার গাড়ি নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারবে এটা দিয়ে। আন্ডারপাসের ৬ লেনের রাস্তার মধ্যে ৪ লেনে চলবে যান্ত্রিক যানবাহন। আর দুই পাশে রিকশা, সাইকেলের জন্য আলাদা লেনের পাশাপাশি পথচারীদের জন্য রাখা হয়েছে ফুটপাথ। পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের আওতায় প্রায় দুই বছরের নির্মাণ কাজের পর চালু হলো এটি। ৬ লেনবিশিষ্ট এই রেলওয়ে আন্ডারপাসে বৈজ্ঞানিক ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনার অংশ হিসেবে এখানে একটি অত্যাধুনিক পাম্প হাউজ নির্মাণ করা হয়েছে। এতে চারটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন স্বয়ংক্রিয় পাম্প থাকবে, যা সংক্রিয়ভাবে পানি নিষ্কাশন করবে। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বিগত বর্ষা মৌসুমে কাজ চলাকালীনও এখানে এক দিনের জন্য পানি জমেনি। রোড মার্কিং, মাঝের ডিভাইডারে ফুলের গাছ, সড়কের দুই পাশে ল্যাম্পপোস্ট রয়েছে আন্ডারপাসের সৌন্দর্য বর্ধনে।

 

ওদিকে, বিকল্প রাস্তা না থাকার কারণে রাস্তা বন্ধ করে তৈরি করতে হয়েছে আন্ডারপাস। যার কারণে দীর্ঘ পথ ঘুরে চলাচল করতে হয়েছে পথচারী ও যানবাহনগুলোকে। এতে দীর্ঘদিন ভোগান্তিতে ছিলেন ওই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী যাত্রীরা। এটি খুলে দেয়ার মধ্যদিয়ে দীর্ঘদিনের ভোগান্তির অবসান হচ্ছে। মতিঝিলের সঙ্গে মুগদা, মান্ডা, মানিকনগর ও সবুজবাগ এলাকার সংযোগ সড়কে ট্রেনের সিগনালে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে হবে না আর। তবে কমলাপুরে মেট্রোরেলের স্টেশনের নির্মাণকাজ শেষ না হলে এখনই আন্ডারপাসের শতভাগ সুফল পাচ্ছে না নাগরিকরা।

পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের ব্যবস্থাপক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ জামিউল ইসলাম বলেন, আমাদের সমস্যা ছিল স্পেস লিমিটেশন। ডান পাশে কমলাপুর আইসিটি কর্তৃপক্ষের কিছু জায়গা আমরা পেয়েছিলাম, কিন্তু এর বাইরে আর জায়গা উন্মুক্ত করা সম্ভব হয়নি। ফলে এখানে কোনো বাইপাস নির্মাণ করাও সম্ভব ছিল না। এ ছাড়া আন্ডারপাসের গভীরতাও অনেক বেশি। তাই সামান্য বাইপাস রোড করলেও সেটা জনসাধারণের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যেতো। তিনি আরও বলেন, স্থাপনাটির সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের দিকেও গুরুত্ব দিতে হবে। রক্ষণাবেক্ষণ শুধু একক কোনো গোষ্ঠীর নয়, বরং একাধিক স্টেকহোল্ডারকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। বিশেষ করে পাম্প হাউজটি যাতে দুর্যোগকালেও সঠিকভাবে কাজ করে তা নিশ্চিত করতে রেলওয়েকে দায়িত্ব নিতে হবে। 

প্রকল্পের প্রকৌশলী নীলাকর বিশ্বাস বলেন, টিটিপাড়া আন্ডারপাসের জন্য আলাদা একটি রেইনওয়াটার পাম্প ওয়েল করা হয়েছে। আন্ডারপাসের সব পানি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ওই ওয়েলে যাবে, যেখানে ৭৫ কিলোওয়াটের চারটি পাম্প রয়েছে। পানির স্তর অনুযায়ী পাম্পগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু হয়ে পানি পার্শ্ববর্তী সিটি করপোরেশনের ক্যানেলে পাঠিয়ে দেবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here