শিশুদের যৌন নির্যাতনের অভিযোগে সাবেক এক ফরাসি চিকিৎসককে ২০ বছরের জেল দিয়েছে দেশটির আদালত। অভিযুক্ত ওই চিকিৎসকের নাম জো লে স্কুয়ার্নেক (৭৪)। তার বিরুদ্ধে ১৯৮৯-২০১৪ সালের মধ্যে কয়েকশ রোগীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ করা হয়েছে। যার মধ্যে বেশিরভাগই শিশু। মার্চে নিজের বিরুদ্ধে আনা ওইসব অভিযোগ স্বীকার করেন তিনি। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। ওই চিকিৎসক বর্তমানে কারাগারে আছেন। ২০২০ সালে চার শিশুকে ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের অভিযোগে তাকে ১৫ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। এর মধ্যে তার দুই ভাগ্নিও ছিলো। তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন কয়েকজন ভুক্তভোগী। শিশু বয়সে তারা যে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তা তাদের জীবনকে কীভাবে প্রভাবিত করেছে সে বিষয়ে বলেছেন তারা। মার্চে ওই চিকিৎসক ২৯৯ রোগীকে যৌন নির্যাতন করার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি তার ডায়েরিতে হেনস্থার বিষয়ে লিখে রাখেন। সেখান থেকে তথ্য নিয়ে পুলিশ ভুক্তভোগীদের শনাক্ত করেছে। এদের অনেকের অবশ্য ধারণাই নেই তাদের সঙ্গে কী হয়েছে। কারণ রোগীদেরকে অ্যানেস্থেসিয়া দেয়ার সময় বা অস্ত্রপচারের পর তাদেরকে যৌন নির্যাতন করতেন ওই চিকিৎসক। 

এদিকে গত সপ্তাহে আদালতে অনুতপ্ত হন লে স্কুয়ার্নেক । তিনি বলেছেন, আমি নিজের দিকে তাকাতে পারিনা। এটি ভেবেই লজ্জিত যে, আমি একজন শিশু নির্যাতনকারী। তিনি আরও বলেছেন, আমি কোনো সহানুভূতি চাইনা। এই মাসের শুরুতে ওই চিকিৎসক বলেছেন, দুই ভুক্তভোগীর মৃত্যুর জন্য তিনি দায়ী। শিশু বয়সে যৌন হেনস্তার শিকার হওয়ার বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি দুইজন ভুক্তভোগী। এর পরিপ্রেক্ষিতে আত্মহত্যা করেছেন তারা। চার বছর আগে মারা গেছেন এমন একজন হলেন ম্যাথিয়াস ভিনেট। চিকিৎসকের ডায়েরিতে তার নাম আছে এ তথ্য প্রকাশ পাওয়ার পর নাতির হেনস্তা হওয়ার বিষয়টি বিবিসিকে জানান তার দাদা। পনেরো বছর ধরে শিশু নির্যাতন করেও পার পেয়ে যাওয়ার কারণে জনগণের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের জন্ম দেয়। এছাড়া ২০০৫ সালে শিশু নির্যাতনের ছবি ডাউনলোড দেয়ার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসলেও তাকে কেন শিশুদের চিকিৎসা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়নি এ নিয়েও তীব্র জনরোষের সৃষ্টি হয়। এদিকে এ বিষয়ে রাজনীতিবিদরা তেমন কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীদের একটি দল। তারা বলেন, এ থেকে কোনো শিক্ষাই গ্রহণ করা হয়নি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here