এশিয়া কাপ আয়োজন নিয়ে যে জটিলতা ছিল, তার অবসান হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ৯ই সেপ্টেম্বর সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভারতের আয়োজনে শুরু হবে এই আসর। তবে এই টুর্নামেন্টকে সামনে রেখে বাংলাদেশ দল প্রস্তুতি সংকটে পড়েছে। ৪২ দিন পর এই টুর্নামেন্ট মাঠে গড়ানোর আগে টাইগারদের সামনে কোনো টি- টোয়েন্টি সিরিজ নেই। এরইমধ্যে ভারতের আসার কথা থাকলেও বিসিসিআই সফরটি স্থগিত করেছে। বিকল্প হিসেবে টেস্ট খেলুড়ে বড় বড় দেশগুলোর সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে সিরিজ আয়োজনও সম্ভব হচ্ছে না। আইসিসির সহযোগী দেশগুলোর সঙ্গেও আলোচনা চলছে। নেপাল, নেদারল্যান্ডসসহ পাঁচটি দেশের ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে সিরিজ আয়োজনের আলোচনা চলছে। তবে তাও শেষ পর্যন্ত হবে কিনা তা নিয়ে শঙ্কা আছে। যদি দেশের মাটিতে সিরিজ আয়োজন করতে না পারে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি), তাহলে বিকল্প কী? এ বিষয়ে বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল জানিয়েছেন, তারা সংযুক্ত আরব আমিরাতে গিয়ে একটি ত্রিদেশীয় সিরিজ আয়োজন করতে চাইছেন! দৈনিক মানবজমিনকে তিনি বলেন, ‘দেশের মাটিতে এনে দুই-একটি দেশের সঙ্গে সিরিজ আয়োজন নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। তবে এটা ছাড়াও আমরা বিকল্প ভেবে রেখেছি। আমরা চাইছি, যদি একটু আগে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যেতে পারি, তাহলে শ্রীলঙ্কা-আফগানিস্তানকে নিয়ে একটি ত্রিদেশীয় সিরিজ আয়োজনের চেষ্টা করবো। সেটি আমাদের বেশি লাভ হবে।’ অবশ্য যদি বিসিবি কোনো সিরিজ আয়োজন করতে না পারে, তাহলে পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলা সবশেষ সিরিজকেই টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের এশিয়া কাপের জন্য শেষ ম্যাচ প্রস্তুতি বলা যায়। প্রশ্ন হচ্ছে আগামী দেড় মাস তাহলে কি শুধু অনুশীলন করেই নিজেদের প্রস্তুত করবে বাংলাদেশ? জানা গেছে, ৬ই আগস্ট থেকে ফিটনেস অনুশীলন দিয়ে এশিয়া কাপের প্রস্তুতি শুরু করবে লিটন দাসের দল। সেখানে যোগ দেবেন জাতীয় দলের সব কোচ।
এ ছাড়াও তিন সপ্তাহের জন্য যুক্ত হবেন পাওয়ার হিটিং কোচ জুলিয়েন উড। দলকে প্রস্তুত করতে আপাতত দেশের মাটিতে অনুশীলনই বড় ভরসা। তবে এশিয়া কাপের আগে দলের সামগ্রিক প্রস্তুতিতে আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দিকে নজর দিচ্ছে বিসিবি। ক্রিকেটারদের শারীরিক সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য নিবিড় ফিটনেস ক্যাম্পের আয়োজন করা হবে। দীর্ঘ টুর্নামেন্টে ফিট থাকাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তাই এই ক্যাম্পের মাধ্যমে খেলোয়াড়দের শারীরিক ধকল সহ্য করার ক্ষমতা বাড়ানো হবে। আনা হতে পারে মনোবিদও। এশিয়া কাপের প্রস্তুতি নিয়ে বুলবুল আরও বলেন, ‘আমরা এখন জানি কবে শুরু হচ্ছে এই আসর। সেই হিসেবে আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহেই ক্যাম্প শুরু হবে। সেখানে প্রধান কোচ থেকে সব কোচিং স্টাফ থাকবেন। তারা পরিকল্পনা সাজাবেন কীভাবে প্রস্তুতি নেয়া যায়। আর যদি সিরিজ আয়োজন করা যায়, সেটি আরও ভালোর বিষয়। এ নিয়ে কাজ করছেন অপারেশনস কমিটির প্রধান নাজমুল আবেদিন ফাহিম ভাই। তিনি কী কী পরিকল্পনা নিচ্ছেন, তা আরও ভালোভাবে বলতে পারবেন।’
বিসিবি’র নতুন সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল আজই ব্যক্তিগত কাজে দেশের বাইরে যাচ্ছেন। ফিরবেন এক বা দুই সপ্তাহ পরে। এরই মধ্যে অবশ্য একটি বোর্ড সভাও আয়োজন হবে। সেখানে তিনি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অংশ নেবেন। এশিয়া কাপের প্রস্তুতি নিয়েও সেখানে তারা কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন বিসিবি প্রধান। অন্যদিকে আগামী ৯ই সেপ্টেম্বর থেকে ২৮শে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবি ও দুবাইয়ের মাটিতে অনুষ্ঠিত হবে এশিয়া কাপের আসর। ৮টি দলকে দুটি গ্রুপে ভাগ করা হয়েছে, যেখানে ‘বি’ গ্রুপে শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান ও হংকংয়ের সঙ্গী হয়েছে বাংলাদেশ। তাই মূলত শ্রীলঙ্কা ও আফগানদের নিয়ে একটি ত্রিদেশীয় সিরিজ আয়োজন করতে পারলে টাইগারদের লাভ দেখছে বিসিবি প্রধান। ১১ই সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ মিশন শুরু করবে হংকংয়ের বিপক্ষে। এরপর ১৩ই সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ বনাম শ্রীলঙ্কা, এবং ১৬ই সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ বনাম আফগানিস্তান ম্যাচ রয়েছে।