News Times BD

সারা দেশে মবক্রেসির রাজত্ব চলছে : যুবদলের বিক্ষোভে সালাহউদ্দিন

সারা দেশে মবক্রেসির রাজত্ব চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। বৃহস্পতিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে যুবদলের উদ্যোগে ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নির্লিপ্ততায় সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির প্রতিবাদে’ আয়োজিত এক বিক্ষোভ মিছিলপূর্ব সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন। বিকাল পৌনে ৫টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে এ মিছিল বের হয়। মিছিলটি জাতীয় প্রেস ক্লাব ও মৎস্যভবন হয়ে শাহবাগে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে আধাঘণ্টা অবস্থান নেয় যুবদল। এতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এরআগে, বিকাল ৩টায় পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মধ্যে দিয়ে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ট্রাকের উপর অস্থায়ী মঞ্চ তৈরি করে মিছিলপূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত শুরু হয়।  
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, জুলাই ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান আমরা সংগঠিত করেছিলাম গণতন্ত্রের জন্য। আমরা এখন দেখতে পাচ্ছি, সারা দেশে মবক্রেসির রাজত্ব চলছে। চেয়েছিলাম গণতন্ত্র, হয়ে যাচ্ছে মবক্রেসি। কিন্তু কেনো? যারা গণঅভ্যুত্থানের শক্তিকে চ্যালেঞ্জ করার সাহস পাচ্ছে, তারা কারা? এই দুই কেনোর জবাব হচ্ছে, সরকারের নির্লিপ্ততা এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তাদের ব্যর্থতা। 
তিনি বলেন, আজকে গণঅভ্যুত্থানের শক্তিকে চ্যালেঞ্জ করা হচ্ছে। বিভিন্নভাবে পরিকল্পিতভাবে ইস্যু সৃষ্টি করে, সেই ইস্যুর মধ্যদিয়ে দেশে ফ্যাসিবাদবিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ঐতিহ্যবাহী দল বিএনপিকে কলঙ্কিত করার একটি অপচেষ্টা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কারা ফ্যাসিবাদের আগমণ চায়, কারা দেশে ফ্যাসিবাদের প্রত্যাবর্তন চায়, পুনর্বাসন চায়- সেই প্রশ্নের জবাব আমরা দিতে পারি।
সালাহউদ্দিন বলেন, বিভিন্ন কায়দার যারা ইস্যু সৃষ্টি করছে, সুপরিকল্পিতভাবে নির্বাচনকে বানচাল ও বিলম্বিত করার জন্য যারা চেষ্টা করছে, তারা যেনো আশ্রয়-প্রশ্রয় না পায়। যেনো জনগণের মনে কোনও প্রশ্নের উদ্বেগ না হয় যে, সরকার বোধহয় একটি নির্দিষ্ট দলকে সুবিধা দেয়ার জন্য কোন না কোনভাবে চেষ্টা চালাচ্ছে। 

 
তিনি বলেন, আমরা প্রত্যাশা করিনি ফ্যাসিবাদী পতিত শক্তি গোপালগঞ্জে হোক আর যেখানেই হোক, গণঅভ্যুত্থানের শক্তির ওপর হামলা করার সাহস পাবে। কিন্তু কেনো? এই কেনোর জবাব হচ্ছে, যারা একটি নতুন রাজনৈতিক দল সংগঠিত করেছে- যাদের এখনও নিবন্ধন নেই, তারা অনেক আবেগতাড়িত হয়েছে। অপরিকল্পিতভাবে এমন সব রাজনৈতিক কর্মসূচি দিচ্ছে- সেই রাজনৈতিক কর্মসূচির কারণে পতিত ফ্যাসিবাদী শক্তি হামলা করছে। সুতরাং রাজনৈতিক ময়দানে আরও অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য আমরা সবসময় পরামর্শ দিচ্ছিলাম। আমরা তোমাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করি। দেশে গণতন্ত্রের জন্য ভবিষ্যতে তোমরা অনেক বেশি অবদান রাখবে। তোমরা জাতীয় নেতৃত্বে পরিণত হবে- সেই আশাবাদ ব্যক্ত করি। কিন্তু যেভাবে আমরা এনসিপির কর্মসূচির ধরন দেখছি, তাতে করে আমরা একটা মেসেজ পাচ্ছি- কোন না কোন বাহানায় এমন কোনও অবস্থা সৃষ্টি করা, যাতে করে বলতে পারে- এই সরকার কোনও কিছু নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। এই সরকার নির্বাচন কিভাবে দেবে?

বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, যারা বলছেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে, কিন্তু আপনারাও (এনসিপি) তো সরকারের অংশ। দেশের মানুষ সবই জানে। আপনাদের দু’জন উপদেষ্টা সেই সরকারে বসে আছেন। দু’দিন পরে আপনাদের সঙ্গে তারা জয়েন করবেন। তারপর আপনাদের সঙ্গে নির্বাচন করবে। এই দৃশ্য তো আমরা দেখার জন্য অপেক্ষা করছি। 

কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে দুপুরের পর থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে ফেস্টুন, জাতীয় ও দলীয় পতাকা সহকারে কেন্দ্রীয় যুবদলসহ মহানগরের বিভিন্ন ওয়ার্ড এবং থানা থেকে হাজার হাজার নেতাকর্মী নয়াপল্টনে জড়ো হতে দেখা গেছে। এসময়ে তারা ‘আমার নেতা আমার ভাই, তারেক রহমানের ভয় নাই, ‘রাজাকারের বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন,’ ‘স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘চাঁদাবাজের বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট অ্যাকশন,’ জামায়াত-শিবির রাজাকার, এই মুহূর্তে বাংলা ছাড়, সহ বিভিন্ন স্লোগানে রাজপথ প্রকম্পিত করে তুলেন।

যুবদলের সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্নার সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম নয়ন ও সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুজ্জামান জুয়েলের সঞ্চালনায় মিছিলপূর্ব সংক্ষপ্তি সমাবেশে বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, সংগঠনের সিনিয়র সহসভাপতি রেজাউল করিম পল, ১ নম্বর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল হোসেন তারেক, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের আহ্বায়ক খন্দকার এনামুল হক এনাম, সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম নয়ন, উত্তরের আহ্বায়ক শরীফ উদ্দিন জুয়েল, সদস্য সচিব সাজ্জাদুল মিরাজ বক্তব্য রাখেন।

Exit mobile version