চাঁপাইনবাবগঞ্জের সীমান্তবর্তী পদ্মা নদী থেকে শফিকুল ইসলাম ও সেলিম রেজা নামে দুই যুবকের ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার (২ আগস্ট) দুপুরে শিবগঞ্জ উপজেলার তারাপুর সীমান্ত এলাকায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যদের উপস্থিতিতে লাশ দুটি উদ্ধার করা হয়।

 
 

জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের সময় তারা নিখোঁজ হন।

 

শফিকুল ইসলাম শিবগঞ্জ উপজেলার তারাপুর-হঠাৎপাড়া গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ও সেলিম রেজা একই এলাকার মর্তুজার ছেলে। তবে কীভাবে তাদের মৃত্যু হয়েছে, তা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি বিজিবি বা পুলিশ কর্মকর্তারা। স্থানীয়দের দাবি, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) নির্যাতনে মৃত্যু হয়েছে শফিকুল ও সেলিমের।  

তাদের লাশ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৫৩ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফাহাদ মাহমুদ রিংকু ও শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম কিবরিয়া।

তারা জানান, সীমান্ত সংলগ্ন পদ্মা নদীতে ভাসমান অবস্থায় শফিকুলের লাশ দেখতে পান বিজিবি সদস্যরা। পরে বিষয়টি পুলিশকে জানানো হলে তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে সেটি উদ্ধার করে। তবে কীভাবে শফিকুলের মৃত্যু হয়েছে, সে বিষয়ে তারা নিশ্চিতভাবে কিছু বলতে পারেননি।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফাহাদ মাহমুদ রিংকু বলেন, লাশ উদ্ধারের ঘটনাটি একেবারেই সীমান্ত এলাকায় ঘটেছে। তাই পুলিশকে সহযোগিতা করেছে বিজিবি সদস্যরা।

শিবগঞ্জ থানার ওসি গোলাম কিবরিয়া বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ সদস্যরা শফিকুলের লাশ উদ্ধার করে। তবে তিনি কীভাবে মারা গেছেন, তা ময়নাতদন্ত ছাড়া বলা সম্ভব নয়।

উদ্ধার অভিযানে অংশ নেওয়া নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইন্সপেক্টর তৌহিদুল ইসলাম জানান, শফিকুল ইসলামের মরদেহের বিভিন্ন অংশে এসিডে পড়ানো ফোসকার মতো ছিল। সেলিম রেজার মরদেহের গলা, উরু ও পায়ের নিচের অংশসহ একাধিক জায়গায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে।  

স্থানীয়রা জানান, শফিকুল ইসলাম পদ্মা নদীতে মাছ ধরার পাশাপাশি সীমান্তে চোরাচালান কর্মকাণ্ডের সঙ্গেও জড়িত ছিলেন। গত বৃহস্পতিবার রাতে সোহেল রানা নামে আরেক বাংলাদেশিসহ শফিকুল ও সেলিম নদীপথে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে যান। এরপর থেকেই তারা নিখোঁজ ছিলেন। শনিবার দুপুরে পৃথক দুই স্থান থেকে ভাসমান অবস্থায় সেলিম ও শফিকুলের লাশ মেলে।

সোহেল রানার কোনো খোঁজ মেলেনি। তিনি শিবগঞ্জ উপজেলার তারাপুর ঠুটাপাড়া গ্রামের গোলাম মর্তুজার ছেলে।

নিহত শফিকুল ইসলামের সম্বন্ধি ও স্থানীয় মনাকষা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মোহা. সমির উদ্দীন বলেন, শফিকুলের মৃত্যু নির্যাতনের ফলেই হয়েছে। তার শরীরজুড়ে অসংখ্য ফোসকা ছিল, যা অ্যাসিডে দগ্ধ হওয়ার মতো দেখাচ্ছিল। এছাড়াও তার অনেকগুলো দাঁত ভাঙা ছিল।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here