নির্বাচন পরবর্তী সরকারের কাছে একাধিক চ্যালেঞ্জ আছে বলে মনে করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক প্রফেসর ড. হারুন-অর-রশিদ। তিনি বলেন, গণতন্ত্রবিরোধী শক্তির অপতৎপরতা মোকাবিলা করা, দ্রব্যমূল্য ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখা, নির্বাচনী অঙ্গীকার অনুযায়ী কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং যুব সমাজের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করাই হচ্ছে সরকারের চ্যালেঞ্জ। এ ছাড়া কোনো চ্যালেঞ্জ নেই। তিনি আরও বলেন, এ কথা মনে করার কারণ নেই যে, নির্বাচনের পর কেউ নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আসবে। আমাদের রাজনীতি হলো নিষেধাজ্ঞার মধ্যে, বিদেশিদের মধ্যে। জনগণের কাছে আর নাই। গণতান্ত্রিক রাজনীতি করলে জনগণের মধ্যে থাকতে হয়। ষড়যন্ত্রের মধ্যে থাকলে লাভ নেই। কারণ সত্যিকার গণতান্ত্রিক দল কখনো জনবিচ্ছিন্ন হয় না। জোর করে সন্ত্রাস করে গণঅভ্যুত্থান করা যায় না।
এ রাষ্ট্রবিজ্ঞানী বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আন্দোলন যখন বাস্তবায়িত করা যায়নি ও নির্বাচন ঠেকানো যায়নি তখন নির্বাচনের পরে আর কিছু করার থাকবে না।
অন্তত আরও পাঁচ বছর অপেক্ষা করতে হবে। এবার শুধু পাঁচ বছর না অনেক বছর অপেক্ষা করতে হবে নেতিবাচক রাজনীতির কারণে। তিনি বলেন, এবার বিএনপি’র অনুকূলে মাঠ ছিল। বিএনপি নির্বাচনে আসলে সরকারের জন্য এত সহজ হতো না। সারাবিশ্ব তাকিয়ে ছিল, সংবাদমাধ্যম তাকিয়ে ছিল।
হারুন অর রশিদ বলেন, নির্বাচন পূর্ববর্তী কিছু করা না গেলে পরবর্তীতেও কিছু করার থাকে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করাতে না পেরে বিএনপি নিজেরাই নির্বাচন বর্জন করছে। এখন কী বলে জনগণের কাছে যাবে? নির্বাচন যদি অবাধ, সুষ্ঠু এবং প্রভাবমুক্ত হয় তাহলে কাকে দোষ দেবে? এ দোষ কি সরকারকে দেয়া যাবে, না নির্বাচন কমিশনকে। কাজেই আফটার ইফেক্ট আরও মার্জিনালাইজড হবে। নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি হটকারী ও আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ড. হারুন-অর-রশিদ বলেন, সবার অংশগ্রহণে নির্বাচন হলে সুষ্ঠু ও ভালো নির্বাচন হতো। সেই পথটা তো বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। একদফার আন্দোলন যখন সফল হয়নি তখন তাদের (বিরোধীদের) উচিত ছিল নির্বাচনে যাওয়া ও জনগণের কাছে যাওয়া। কিন্তু তারা একদফা থেকে নড়বে না। এটা হতেই পারে। তাই বলে যে কর্মকাণ্ড তারা গ্রহণ করেছে তা কি দেশের মানুষ সমর্থন করবে? তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ ভোট বর্জন করবে কিনা তা রোববার বুঝা যাবে। যেখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হবে সেখানে দেখা যাবে মানুষ দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিচ্ছে। প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে। কমপক্ষে এক দেড়শ’ আসনে তাই হবে। বিএনপি অংশ না নেয়ায় সব আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে না সেটা বুঝাই যাচ্ছে। তারপরও প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়া একটা সিটও নেই।