নির্বাচনের আগের দিন খুলনার ৬টি সংসদীয় আসন থেকে লাঙ্গল প্রতীকের জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রার্থীরা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। কালো টাকার ব্যবহার, ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে যাওয়ার অনীহা, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড না থাকা, সরকারি দলের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ, জাতীয় পার্টির শীর্ষ নেতাদের সমন্বয় অভাব ও প্রশাসনের অসহযোগিতার কথা উল্লেখ করে কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান, জেলা সভাপতি ও খুলনা-৬ আসনের প্রার্থী শফিকুল ইসলাম মধুসহ ৬টি আসনের প্রার্থীরা নির্বাচনী মাঠ ছেড়ে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন।
গত ১৮ই ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা শুরু হলেও জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা ২৬শে ডিসেম্বর মাত্র একদিন প্রচার প্রচারণা করেন। দলীয় সূত্র জানায়, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ খুলনার একটি আসনেও জাতীয় পার্টিকে ছাড় না দেয়ার কারণে দলটির নেতা-কর্মীরা ক্ষুব্ধ ছিলেন। এ অবস্থায় গত ২০শে ডিসেম্বর নগরীর ডাকবাংলো মোড়ে জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে দলের জেলা ও মহানগর শাখার জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সভায় অধিকাংশ নেতাই নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার পক্ষে মত দেন। সভায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলা হয়, খুলনার ৬টি সংসদীয় আসনের মধ্যে একটি আসন জাতীয় পার্টির জন্য ছেড়ে দেয়া উচিত ছিলো। বিশেষ করে খুলনা-৬ আসনটি জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। পরে ক্ষুব্ধ নেতাকর্মী ও প্রার্থীদের বুঝিয়ে ভোটের মাঠে নামানো হলেও তারা মাত্র একটি দিন প্রচারণা করে ঘরে উঠে যান। এরপর আর তাদের নির্বাচনী মাঠে দেখা যায়নি।
খুলনা-১ আসনের প্রার্থী কাজী হাসানুর রশিদ, খুলনা-২ আসনের প্রার্থী মো. গাউসুল আজম, খুলনা-৩ আসনের প্রার্থী মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন, খুলনা-৪ আসনের প্রার্থী মো. ফরহাদ হোসেন ও খুলনা-৫ আসনের প্রার্থী মো. শাহীদ আলম নির্বাচনী এলাকায় যাচ্ছেন না। আর খুলনা-৬ আসনের প্রার্থী শফিকুল ইসলাম মধু প্রচারণাই করেননি।
জানতে চাইলে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও খুলনা জেলা সভাপতি, খুলনা -৬ আসনের প্রার্থী শফিকুল ইসলাম মধু বলেন, ভোটের মাঠে থাকার পরিবেশ নেই।
নির্বাচনে লেভেল পেয়িং ফিল্ড তৈরি হয়নি। আমার মনে হয় অধিকাংশ ভোটাররাই ভোট কেন্দ্রে যাবেন না। প্রশাসন সরকারি দলের পক্ষে কাজ করছে। বারবার বলা সত্ত্বেও কেন্দ্র থেকে কোন সহযোগীতা পাচ্ছিনা। তারা আনুষ্ঠানিকভাবে বর্জনও করছেনা। কিন্তু এ পরিবেশে খুলনার কোথাও নির্বাচন করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।