সর্বশেষ
Home » অন্যান্য » নেত্রকোনা পূর্বধলার এহসান কানাডার নাগরিক পরিচয়ে তরুণীদের ফাঁদে ফেলতো

নেত্রকোনা পূর্বধলার এহসান কানাডার নাগরিক পরিচয়ে তরুণীদের ফাঁদে ফেলতো

নেত্রকোনা পূর্বধলা উপজেলার নারান্দিয়া এলাকার আব্দুর রবের ছেলে এহসান আহমেদ (৩০)। নিজেকে পরিচয় দিতো কানাডায় স্থায়ী বসবাসের গ্রীন কার্ডধারী পিএইচডি সম্পূর্ণ করা এবং দেশের একটি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মালিকের সন্তান। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অভিজাত ও ধনাঢ্য পরিবারের তরুণীদের টার্গেট করতো। বিশেষ করে যারা বিদেশে উচ্চশিক্ষায় যেতে ইচ্ছুক এমন তরুণীদের সঙ্গে পরিচিত হতেন। এরপর সরাসরি দেখা করতেন। সেখানে তার পরিচয় ও বেশভূষা বিশ্বাসযোগ্য করতে নামিদামি গাড়ি ভাড়া করে নিয়ে যেতেন। এভাবে শতাধিক নারীকে ফাঁদে ফেলেছেন তিনি।
সম্প্রতি ভিকারুননিসা নূন স্কুলের এক সাবেক শিক্ষার্থী ও বর্তমানে এক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি সাহিত্যের শিক্ষার্থীকে টার্গেট করেন এহসান। কানাডায় স্ত্রী হিসেবে নিয়ে যাওয়ার প্রলোভনে গড়ে তোলেন প্রেমের সম্পর্ক। নানা কৌশলে হাতিয়ে নেন ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও। এরপরই শুরু করেন ব্ল্যাকমেইল।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও পরিচিতদের কাছে প্রকাশ করে দেয়ার ভয় দেখিয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা করে আসছিলেন তিনি। রাজধানীর মুগদা থানায় ভুক্তভোগীর দায়ের করা মামলার প্রেক্ষিতে বুধবার রাজধানীর রমনা এলাকায় অভিযান চালিয়ে এহসানকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি)’র সাইবার এন্ড স্পেশাল ক্রাইম (উত্তর) ওয়েব বেইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম। গতকাল রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি’র অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের কাছে এ তথ্য জানান।
অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিকারুননিসা নূন স্কুলের সাবেক এক ছাত্রীর সঙ্গে পরিচয় হয় প্রতারক এহসানের। তিনি নিজেকে কানাডা প্রবাসী, পিএইচডি ডিগ্রিধারী, বড় শিল্পপতি পরিবারের সন্তান পরিচয় দেন। তাদের গুলশানে বাড়ি ও বিলাসবহুল গাড়ি রয়েছে এমন তথ্য দেন। এই সকল পরিচয় ব্যবহার করে প্রথমে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। প্রেমের সুযোগে ভুক্তভোগী তরুণীর কাছ থেকে হাতিয়ে নেন ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও। এই সকল ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও স্বজনদের কাছে প্রকাশ করে দেয়ার হুমকি দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে টাকা হাতিয়ে নিয়ে আসছিলেন।
তিনি বলেন, এর আগেও ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ ফারদিন, সাকিবের মতো অনেক প্রতারককে গ্রেপ্তার করেছে। এসব প্রতারক নিজেদের মন্ত্রী, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, সচিব, বড় ব্যবসায়ীর সন্তান দাবি করে মেয়েদেরকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে নামিদামি বাড়ি গাড়ির প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক ও আর্থিক প্রতারণা করে আসছিল। গ্রেপ্তারকৃত এহসান পড়াশোনা না করেও নিজেকে পিএইচডিধারী পরিচয় দিতেন। এমন কি কোনো দিন বিদেশে না যাওয়া এহসানের কানাডায় গ্রিণকার্ড রয়েছে। বিভিন্ন তরুণীদের কানাডায় নিয়ে যাওয়ার প্রলোভন দেখাতেন। গোয়েন্দা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তারের পর আমরা এখন পর্যন্ত শতাধিক নারীকে ফাঁদে ফেলার প্রমাণ পেয়েছি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বন্ধুত্ব গড়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানিয়ে হারুন বলেন, ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কেউ বড়লোক, ব্যবসায়ী বা সরকারি চাকরিজীবী পরিচয় দিলে যাচাই করা উচিত। এ ছাড়া অনলাইনে বন্ধুত্বের নামে ব্যক্তিগত ছবি আদান-প্রদানে সতর্ক হতে হবে। তবে কেউ যদি কারও মাধ্যমে প্রতারিত হন তাহলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে অভিযোগ দিতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *