আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি রোহিঙ্গাদের প্রথমে আসতে দেয়। যখন তারা ক্ষমতায় ছিল তারা যে সুযোগ দিয়েছিল, সেটা কি তারা ভুলে গেছে? গতকাল রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে দলীয় কার্যালয়ে ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি। ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের নেত্রী যেটা করেছেন সেটা সারা পৃথিবী প্রশংসা করেছে জাতিসংঘ সহ। তখনকার বাস্তব অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে মানবিকতার জন্য সীমান্ত খুলে দিয়েছিলেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেজন্য তাকে ‘মানবতার মা’ বলা হয়। তিনি বলেন, বিএনপি’র মাথা খারাপ হয়ে গেছে। আমেরিকা, ঋষি সুনাক একসঙ্গে কাজ করার কথা বলেছিল, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট বার্তা দিয়েছিলেন একসঙ্গে কাজ করার। এখন তো তাদের সব আশাই শেষ। তারা ভেবেছিলেন বিদেশি বন্ধু তাদের পাশে এসে দাঁড়াবে। সে আশা একেবারেই শেষ হয়ে গেছে।
আটলান্টিকের ওপার থেকেও কোনো বার্তা আসেনি, আবার ওইদিক থেকেও কোনো বার্তা আসেনি বা আসার কারণও নেই। সরকার দুর্বল ও জনমত না থাকায় মিয়ানমারের বিপক্ষে কোনো লিখিত প্রতিবাদ জানাতে পারেনি- এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, তারা পাগলের প্রলাপ বকছে। এদের মাথা ঠিক নেই। দেখে চারদিক থেকে প্রশংসা। বিদেশিরা শেখ হাসিনার সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করবে। তারা (বিএনপি) বলছে, আরে এটা তো হওয়ার কথা না, এটা কীভাবে হবে। আরও অনেক কিছুই হবে, তারা শুধু চেয়ে চেয়ে দেখবে। চেয়ে চেয়ে চোখের পানি ফেলবে।
মিয়ানমারে চলমান সংঘাত ইন্ডিয়ায় কোনো প্রভাব ফেলছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, এই রেশ ইন্ডিয়াতেও গেছে। ভারতীয় সীমান্ত দিয়েও মিয়ানমারের বেশ কিছু লোকের অনুপ্রবেশ ঘটেছে। ওদের সীমান্তরক্ষীও গেছে। ইন্ডিয়া যে মাথা ঘামাচ্ছে না, তা না। ইন্ডিয়ার নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালও আমাদের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করে গেছেন। আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারতে আছেন। তিনি ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর ও অজিত দোভাল, তাদের সঙ্গে এর মধ্যেই গুরুত্বপূর্ণ আলাপ আলোচনা করেছেন। এ আলোচনার মধ্যে মিয়ানমার ইস্যুটি গুরুত্ব পেয়েছে। মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের সৃষ্ট সমস্যায় সীমান্তে অবস্থান আরও শক্তিশালী করা হয়েছে। আমরা সীমান্ত উদারভাবে খুলে দেয়ার পক্ষপাতী নই এবং এ সুযোগ আমরা কাউকে দিবো না। মিয়ানমার সংঘাতে সৃষ্ট উদ্বেগ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে জাতিসংঘকে লিখিতভাবে জানাবে বাংলাদেশ। মন্ত্রী বলেন, যারা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে তারা তাদের সীমান্তরক্ষী ও সেনাবাহিনীর সদস্য। মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল, তারা তাদের ফিরিয়ে নিবে এবং ফিরিয়ে নিতেই হবে। ফিরিয়ে না নেয়া নিয়ে বিকল্প নেই। ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের সীমান্তে শঙ্কা জিইয়ে রাখতে পারি না। আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজ করছে। চিঠি দিবে জাতিসংঘকে।
বাংলাদেশ ক্রসফায়ারের মুখে পড়েছে বিএনপি’র এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি আসলে তাদের আন্দোলন এত ব্যর্থতার মধ্যে নিপতিত হবে- এটা তারা ভাবতেও পারেনি। তারা মনে করেছে, আন্দোলন কিছুটা এগিয়ে নিতে পারলে বিদেশিরা বাকিটা এগিয়ে নিবে, শেখ হাসিনা সরকারকে হটাবে। নির্বাচনের পর ভিসা নীতি, নিষেধাজ্ঞা আসবে- এসব আশাই শূন্য ও মরীচিকা হয়ে গেছে। কাজেই তারা যখন যা খুশি তাই বলছে। বলতে হয় তাই বলছেন। কর্মীদের তো চাঙ্গা রাখতে হয়। ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্রের চর্চা যতখানি হয় সেটা আওয়ামী লীগেই হয়। যে দল শুধু মুখে গণতন্ত্রের কথা বলে না ঘরেও চর্চা করে। আর বিএনপি একটা দল সেটা করে না। দলের কনফারেন্সও হয় না কতো বছর। এসময় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, কার্যনির্বাহী সদস্য সাহাবুদ্দিন ফরাজী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।