পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে সফররত মার্কিন প্রতিনিধি দলের বৈঠকের বিষয়ে দূতাবাস জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র একটি সমৃদ্ধ, নিরাপদ ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশকে সমর্থন করে। ফেসবুক বার্তায় মার্কিন প্রতিনিধি দলের সদস্যদের বরাতে বলা হয়, “আমরা বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে আলোচনা করেছি যে আমাদের দুই দেশ কীভাবে অর্থনৈতিক উন্নয়ন, নিরাপত্তা, শরণার্থী, জলবায়ু, শ্রম এবং বাণিজ্যসহ পারস্পরিক স্বার্থে কাজ করতে পারে। বাংলাদেশ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার।” এদিকে বন পরিবেশ ও জলবায়ু বিষয়ক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরীর সঙ্গে প্রতিনিধি দলের বৈঠক বিষয়ে দূতাবাসের পৃথক ফেসবুক বার্তায় বলা হয়, “জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর তালিকায় সপ্তম অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ ! জলাভূমি রক্ষা ও বন সংরক্ষণের বিষয়ে শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া থেকে শুরু করে, বায়ুদূষণ মোকাবেলায় তরুণ জলবায়ুকর্মীদের সহায়তা করা পর্যন্ত, যুক্তরাষ্ট্র জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় বাংলাদেশের সাথে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরীর সাথে এই যৌথ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় একসঙ্গে কাজ করার উপায় নিয়ে আলোচনা করতে পেরে আমরা আনন্দিত।” মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিশেষ সহকারী ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের (এনএসসি) ডিরেক্টর আইলিন লাউবেচার, ইউএসএআইডির এশিয়া বিষয়ক ব্যুরোর এসিস্ট্যান্ট এডমিনিস্ট্রেটর মাইকেল শিফার এবং ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেটের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার ডেপুটি এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি আফরিন আক্তার বাংলাদেশ সফরে রয়েছেন। সফরের দ্বিতীয় দিন (রোববার) সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে বৈঠক করেন তারা। যার মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী, বন ও পরিবেশমন্ত্রী, পররাষ্ট্রসচিব ছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান রয়েছেন। দূতাবাস আগেই জানায়, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে পারস্পরিক স্বার্থের অগ্রগতির জন্য কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার, চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আলোচনা হবে তাদের। সফরকালে তারা তরুণ অ্যাক্টিভিস্ট, সুশীল সমাজ, শ্রম সংগঠক এবং মুক্ত গণমাধ্যমের বিকাশের সঙ্গে জড়িতদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। মুক্ত ইন্দোপ্যাসিফিকের জন্য অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গিকে এগিয়ে নেয়া, মানবাধিকারের প্রতি সমর্থন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা, আন্তর্জাতিক হুমকির বিরুদ্ধে আঞ্চলিক সহনশীলতার শক্তিকে এগিয়ে নিতে এবং অর্থনৈতিক সংস্কারের প্রচারে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারত্বে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে দূতাবাসের বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়। স্মরণ করা যায়, ২৪ শে ফেব্রুয়ারি থেকে ঢাকায় ব্যস্ত সময় পার করেছেন উচ্চপদস্থ ৩ সদস্যের মার্কিন প্রতিনিধিদল।
সফরের প্রথম দিনে প্রতিনিধি দলের দুই প্রভাবশালী সদস্য আফেরিন আক্তার ও মাইকেল শিফার সংসদের বাইরে থাকা দেশের প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক দল বিএনপি’র সঙ্গে বৈঠক করেন। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের পর বিএনপি’র সঙ্গে মার্কিন প্রতিনিধিদলের এটাই ছিলো প্রথম বৈঠক। বৈঠকে বিএনপি’র প্রতিনিধিদলে ছিলেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ। মার্কিন প্রতিনিধিদলে আফরিন আখতার ছাড়াও ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের (এনএসসি) দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক সিনিয়র ডিরেক্টর আইলিন লাউবেচার, ইউএসএআইডির এশিয়াবিষয়ক ব্যুরোর অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেটর মাইকেল শিফার এবং ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস্ উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়।