ম্যাচের বয়স তখন ১ মিনিটও হয়নি, গ্যালারিতে হাজির হওয়া ৬৫ হাজার দর্শকের অনেকেই তখনও নিজেদের আসনে বসতে পারেননি। এরই মধ্যে গোল হজম করে বসে ইন্টার মায়ামি। তবে শুরুর সেই গোল শোধ করার পর আরও ৩ গোল করে শেষ পর্যন্ত নিউ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে তারা। জোড়া গোল করে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন অধিনায়ক লিওনেল মেসি। আদতে মায়ামির চার গোলেই অবদান মেসির। জোড়া গোলের সঙ্গে জোড়া অ্যাসিস্ট করেন এলএম টেন। একই দিনে মেজর লীগে নতুন এক রেকর্ডও গড়েন আর্জেন্টাইন বিশ্বকাপজয়ী এই অধিনায়ক। গতকাল সকালে মেজর লীগ সকারের ম্যাচে নিউ ইংল্যান্ডকে তাদের মাঠেই ৪-১ গোলে হারায় ইন্টার মায়ামি। মায়ামির গোলদাতার তালিকায় বাকি দুজন লুইস সুয়ারেজ ও বেঞ্জামিন ক্রেমাস্কি। এই জয়ে ১১ ম্যাচে ২১ পয়েন্ট নিয়ে মেজর লিগ সকারের ইস্টার্ন কনফারেন্সের পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে মায়ামি।
১০ ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে সিনসিনাতি, আর তিনে থাকা নিউ ইয়র্ক রেড বুলসের পয়েন্ট ১৭। পরের ম্যাচে ঘরের মাঠে মায়ামি প্রতিপক্ষ রেড বুলস। লীগে ৭ ম্যাচ খেলে মেসির গোল এখন ৯টি। চলতি মৌসুমে মায়ামি অধিনায়কই এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ গোলদাতা। একই সঙ্গে এ নিয়ে টানা পাঁচ ম্যাচে একাধিক গোলে অবদান রাখেন মেসি। মেজর লীগ সকারের ইতিহাসে কোনো ফুটবলার প্রথম এমন কিছু করে দেখালেন। ঘরের মাঠে এদিন ম্যাচ শুরুতেই এগিয়ে যায় নিউ ইংল্যান্ড।
নিউ ইংল্যান্ডের কার্লেস জিল প্রতিপক্ষের দুজনের মাঝ থেকে চোখধাঁধানো লবে বল বাড়িয়ে দেন সামনে, সেটিকেই দুর্দান্ত এক গোলে পরিণত করেন তমাস শনকালায়। ঘড়ির কাটায় সময় তখন ৩৭ সেকেন্ড। ম্যাচের ৩২তম মিনিটে মায়ামিকে সমতায় ফেরান মেসি। প্রতিপক্ষের দুজনের মাঝ দিয়ে মেসিকে বক্সের ভেতর চমৎকার পাস দেন রবার্ট টেইলর। বাঁ পায়ের শটে বল জালে জড়ান মায়ামি অধিনায়ক। দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণের ধার বাড়ায় মায়ামি। ম্যাচের ২৪ ঘণ্টা আগে ভাইরাসের আক্রান্ত হয় নিউ ইংল্যান্ড ফুটবলাররা। মাঠেও তার প্রভাব পড়ে, ফুটবলাররা ক্লান্ত হয়ে পড়ে দ্বিতীয়ার্ধে। ৬৭তম মিনিটে মায়ামিকে লিড এনে দেন মেসি। বার্সেলোনার সাবেক অধিনায়ক সার্জি বুসকেটস নিউ ইংল্যান্ডের বক্সের বেশ বাইরে থেকে অসাধারণ এক থ্রু বল দেন মেসিকে। চোখের পলকে প্রতিপক্ষের ডিফেন্স চেড়া সেই থ্রু পেয়ে যান মেসি, এরপর লক্ষ্যভেদ করতে কোনো সমস্যা হয়নি তার। ৮৩তম মিনিটে হ্যাটট্রিকের সুযোগ হাতছাড়া হয় মেসির। বক্সে ঢুকে পাস দেন মাতিয়াস রোহাস, ফাঁকায় থাকা মেসি খুব কাছ থেকে জোরাল শট নিলে সেটা দুর্দান্ত রিফ্লেক্সে ফিরিয়ে দেন নিউ ইংল্যান্ড গোলকিপার। তবে ফিরতি বল জালে পাঠিয়ে দেন ক্রেমাস্কি। এর পাঁচ মিনিট পরই স্কোর ৪-১ করেন লুইস সুয়ারেজ। ম্যাচের ৮৮তম মিনিটে সুয়ারেসকে বক্সের মাথায় আলতো করে বল দেন মেসি। বল ধরে প্রতিপক্ষের বেশ কয়েকজনকে হতভম্ব করে শট নেন উরুগুয়ের ফরোয়ার্ড। ফুল লেংথ ডাইভ দিয়েও তা ঠেকাতে পারেননি গোলকিপার। এটি লীগে সুয়ারেজের সপ্তম গোল।