লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার পথে ভূমধ্যসাগরে মারা যাওয়া ৮ বাংলাদেশির লাশ দেশে পৌঁছেছে। গতকাল দুপুরে তিউনিসিয়া থেকে উড়োজাহাজে করে তাদের মরদেহ হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আনা হয়। নিহত বাংলাদেশিরা হলেন- মামুন শেখ, সজল বৈরাগী, নয়ন বিশ্বাস, রিফাত শেখ, সজীব কাজী, ইমরুল কায়েস, মো. কায়সার ও রাসেল শেখ। তাদের মধ্যে ৫ জনের বাড়ি মাদারীপুরে ও ৩ জনের বাড়ি গোপালগঞ্জে। নিহত ব্যক্তিদের স্বজনদের অভিযোগ, ৩০ জন যেতে পারবেন এমন একটি ছোট নৌকায় ৫২ জনকে নিয়েছিল দালালেরা। যে ৮ জন মারা গেছেন, তাদের নৌকার পাটাতনের নিচে জোর করে রাখা হয়েছিল। তারা অক্সিজেন সংকটের কারণে পাটাতন থেকে বের হয়ে আসার চেষ্টা করেন। কিন্তু দালালেরা তাদের মারধর করে আবার সেখানে পাঠান। এভাবে নির্যাতন ও অক্সিজেন সংকটের কারণেই তারা মারা গেছেন। এ ঘটনায় নিহত সজল বৈরাগীর বাবা সুনীল বৈরাগী বাদী হয়ে গত ১৯শে এপ্রিল ৭ জনকে আসামি করে বিমানবন্দর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উত্তরা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার তৌহিদুল ইসলাম।
মামলা নম্বর-১০। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় ইতিমধ্যে দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে বিমানবন্দর থানা পুলিশ। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে আন্তর্জাতিক মানবপাচার চক্রের ভয়ঙ্কর তথ্য উঠে এসেছে। নিহত মো. কায়সারের ভগ্নিপতি শাওন ফকির বলেন, দালালেরা লিবিয়া থেকে কায়সারকে ইতালি নিয়ে যাওয়ার জন্য ৮ লাখ টাকা নিয়েছিল। বলেছিল বড় নৌকায় করে ইতালি পৌঁছে দেবে। বেশি লোক হওয়ার কারণে কায়সারসহ ৮ জনকে নৌকার পাটাতনের নিচে রাখা হয়। কায়সারের ছোট দুটি মেয়ে রয়েছে। বাবাকে ছাড়া কীভাবে মেয়ে দুটি মানুষ হবে। অনেক স্বপ্ন নিয়ে বিদেশের উদ্দেশ্যে পারি দিয়েছিল। পরিবারের সুখের আশায় ধার-দেনা করে শেষ পর্যন্ত তার মৃতদেহ এভাবে দেখতে হবে কখনো ভাবিনি। আমাদের মতো আর কেউ যেন স্বজন হারা না হয় বলে জানান তিনি।