শুক্রবারে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হচ্ছে এবারের পবিত্র হজ। এর আগে তারা বৃহস্পতিবার পবিত্র মক্কা থেকে তাঁবুর শহর খ্যাত মিনায় সমবেত হবেন। সেখানে ইবাদত বন্দেগিতে রাত্রি অতিবাহিত করবেন। শুক্রবার ভোরে ফজরের নামাজ শেষে তারা যাত্রা করবেন পবিত্র আরাফাতের ময়দানে। এদিন আরাফাত দিবস। হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা হিসেবে আরাফাতের ময়দানের ইবাদতকে দেখা হয়। এ লক্ষ্যে মঙ্গলবার পর্যন্ত সৌদি আরবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে সৌদি আরবে সমবেত হয়েছেন কমপক্ষে ১৫ লাখ হজযাত্রী। তাদের বেশির ভাগই গিয়েছেন আকাশপথে। মোট হজযাত্রীর মধ্যে ফিলিস্তিনের দখলীকৃত পশ্চিমতীরের ৪২০০ হজযাত্রী রয়েছেন। তবে এ বছর যুদ্ধকবলিত গাজা উপত্যকা থেকে কোনো ফিলিস্তিনি হজে যেতে পারেননি।
সৌদি আরবের কর্মকর্তারা আশা করছেন এবারের মোট হজযাত্রীর সংখ্যা গত বছরের সংখ্যাকে ছাড়িয়ে যাবে। গত বছর হজ পালন করেছেন কমপক্ষে ১৮ লাখ হাজী। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আরব নিউজ।
শুক্রবার পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হওয়া উপলক্ষ্যে সৌদি আরবে যাওয়া হজযাত্রীরা এরই মধ্যে পবিত্র মক্কায় সমবেত হওয়া শুরু করেছেন। এখন থেকেই তারা মিনার উদ্দেশে যাত্রা করবেন। রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা এসপিএ বলেছে, এবার মঙ্গলবার পর্যন্ত আকাশপথে সেখানে পৌঁছেছেন ১৪ লাখ ৮৩ হাজার ৩১২ হজযাত্রী। অন্যদিকে স্থল বন্দর দিয়ে প্রবেশ করেছেন ৫৯,২৭৩ জন। সমুদ্রপথ ব্যবহার করে গিয়েছেন ৪৭১০ হজযাত্রী।
মঙ্গলবার হজযাত্রীরা মক্কায় গ্রান্ড মসজিদের দিকে দলে দলে ছুটে যান। তারা পবিত্র কাবার চারপাশে সাতবার করে চক্কর দেন। এ সময় তারা ছিলেন ইহরাম বাঁধা অবস্থায়। সেখানে দিনের বেলায় তাপমাত্রা ছিল ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আকাশে ছিল গণগণে রোদ। তা উপেক্ষা করে হজযাত্রীরা আল্লাহকে পাওয়ার আশায় মগ্ন হয়ে পড়েন। স্বামী ও নিজের মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে হজ করতে গিয়েছেন মরক্কোর নারী রাবেয়া আল-রাঘি। তিনি বলেন, আল মসজিদুল হারামে এসে যখন পবিত্র কাবাকে দেখতে পেয়েছি, তখন চরম এক প্রশান্তি পেয়েছি। স্বস্তি পেয়েছি। আমি এখন ভীষণ খুশি।
মঙ্গলবার দিবাগত রাতে পবিত্র কাবার চারপাশ ছিল হজযাত্রীতে পরিপূর্ণ। কাঁধে কাঁধ মিলেয়ে তাওয়াফ করতে হয়েছে তাদেরকে। কখনো কখনো নিরাপত্তা রক্ষীদের দেয়া ব্যারিকেড টপকে গিয়েছেন তারা। পবিত্র মক্কায় পৌঁছে হজযাত্রীরা এই তাওয়াফ করেন। পবিত্র হজের প্রথম দিন পর্যন্ত কাবার চারপাশে বিপুল পরিমাণ হজযাত্রীর উপস্থিতি থাকবে। শুক্রবার হজযাত্রীরা মিনা থেকে ইসলামের ঐতিহ্যবাহী ও মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর স্মৃতিবিজড়িত আরাফাতের ময়দানে ছুটবেন। সেখানে সারাদিন অবস্থান করে তারা ছুটে যাবেন মুজদালিফায়। এটি অনতিদূরে একটি পাথরময় সমতল এলাকা। মুজদালিফা থেকে হজযাত্রীরা পাথর সংগ্রহ করবেন। মিনায় ফিরে শয়তানকে উদ্দেশ্য করে প্রতীকী অর্থে এই পাথর নিক্ষেপ করবেন। পবিত্র হজ হলো ইসলামের ৫টি স্তম্ভের একটি। যদি একজন মুসলিম শারীরিক এবং আর্থিক দিক দিয়ে সক্ষম হন, তাহলে তার ওপর জীবনে কমপক্ষে একবার হজ করা ফরজ। হজকে মুসলিমরা তাদের ধর্মীয় বিশ্বাসকে শক্তিশালী করার, পুরনো দিনের পাপ থেকে মুক্তি এবং নতুন পাপমুক্ত জীবন পাওয়ার একটি সুবর্ণ সুযোগ হিসেবে দেখেন।