পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোকে আবারও হুমকি দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি বলেছেন, রাশিয়ার ভূখণ্ডে ইউক্রেনকে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দেয়ার অর্থ হচ্ছে ন্যাটো এই যুদ্ধে জড়িয়ে পড়বে। এ খবর দিয়েছে জার্মানভিত্তিক গণমাধ্যম ডয়চে ভেলে। এতে বলা হয়, শুক্রবার মার্কিন ও বৃটেনের শীর্ষ নেতারা সেই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। রাশিয়ার ভূখণ্ডে পশ্চিমা অস্ত্র ব্যবহার নিয়ে অনেক আগে থেকেই ন্যাটোকে সতর্ক করে আসছেন পুতিন।
২০২২ সালে ইউক্রেনের উপর হামলা শুরুর পর থেকেই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পশ্চিমা বিশ্বের উদ্দেশ্যে একাধিক হুমকি দিয়েছেন। ইউক্রেনের জন্য কোনো বিশেষ অস্ত্র বা সামরিক সহায়তার সম্ভাবনা দেখা দিলেই তিনি সরাসরি ন্যাটোর সঙ্গে রাশিয়ার সামরিক সংঘাত সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়েছেন। তাতে কিছুটা কাজও হয়েছে। কিছু পশ্চিমা নেতা দ্বিধা-দ্বন্দ্ব দেখিয়ে সহায়তায় বিলম্ব করেছেন অথবা অস্ত্র সরবরাহ করেও সেটির প্রয়োগের উপর কিছু শর্ত বসিয়েছেন। এবার ইউক্রেন রাশিয়ার ভূখণ্ডের গভীরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ছাড়পত্র চাইতে রুশ প্রেসিডেন্ট আবার তার ‘লাল সীমা’ নিয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। পুতিন বৃহস্পতিবার সেন্ট পিটার্সবার্গ শহরে বলেন, ন্যাটোভুক্ত দেশগুলো ইউক্রেনকে রাশিয়ার ভূখণ্ডের গভীরে হামলার সবুজ সংকেত দিলে রাশিয়া সেই পদক্ষেপকে ন্যাটোর যুদ্ধে প্রবেশ হিসেবে গণ্য করবে। সেক্ষেত্রে হুমকি অনুযায়ী রাশিয়া উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নেবে।
শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও বৃটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার ওয়াশিংটনে তাদের আলোচনায় ইউক্রেনের অনুরোধ বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। একাধিক সংবাদ মাধ্যমের সূত্র অনুযায়ী এই দুই দেশ ইউক্রেনকে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র প্রয়োগের ক্ষেত্রে আরো স্বাধীনতা দিতে চলেছে। তবে বাইডেন ও স্টারমার সম্ভবত সরাসরি এমন ঘোষণা দেয়া থেকে বিরত থাকবেন বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই মার্কিন কর্মকর্তা সংবাদ সংস্থা এপি-কে জানিয়েছেন।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদোমির জেলেনস্কি চাইছেন, রাশিয়ার যে সব সামরিক ঘাঁটি থেকে ইউক্রেনের উপর আকাশপথে হামলা চালানো হচ্ছে, তার দেশ সেগুলির উপর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর ‘ন্যায্য’ অধিকার প্রয়োগ করার ছাড়পত্র পাক। আসন্ন শীতকালের আগে রাশিয়া ইউক্রেনের বিদ্যুৎ অবকাঠামোর উপর আবার হামলা শুরে করে দেওয়ায় জেলেনস্কি দ্রুত পাল্টা হামলা চালাতে চাইছেন। সেইসঙ্গে তিনি রাশিয়ায় হামলা চালাতে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে দূর পাল্লার আরো অস্ত্র পাঠানোর অনুরোধ করছেন। তবে ৩০০ কিলোমিটারেরও বেশি দূর থেকে রাশিয়া তার গ্লাইড বোমা নিক্ষেপ করে যে হামলা চালাচ্ছে, সেই মার্কিন মিসাইল সেই ঘাঁটির নাগাল পাবে না বলে মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন। মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন গত সপ্তাহে বলেন, ইউক্রেনকে দূর পাল্লার অস্ত্র প্রণালী দিলেই যুদ্ধক্ষেত্রে কোনো বড় সাফল্য আশা করা যাবে না। তিনি মনে করিয়ে দেন, ইউক্রেন ইতোমধ্যেই নিজস্ব অস্ত্র ও ড্রোন প্রয়োগ করে রাশিয়ায় হামলা চালাতে পারছে।