নরসিংদী বেলাব থানার চন্দনপুর এলাকার ভূমিদস্যু সন্ত্রাসী নেওয়াজ আলী ভূঁইয়া ও তার বাহিনীর নির্যাতন থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য এলাকাবাসীর আহাজারি ও আতংকে দিন কাটছে সাধারণ মানুষের।
এমন কোন অপরাধমুলক কর্মকাণ্ড নেই সে করে না। সাধারণ মানুষের জমি দখল, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, নারী নির্যাতনসহ বিভিন্ন অপরাধমুলক কর্মকাণ্ড।
এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী-এমপির ছত্রছায়ায় এলাকায় পৈশাচিক নির্যাতন চালায়।
ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী বিভিন্ন নেতার ছত্রছায়ায় দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে নেওয়াজ বাহিনী। তার বাহিনীর সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা গ্রামের পর গ্রাম দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। সাধারণ কৃষকের বাপ-দাদার ভিটেবাড়ি জোর করে দখল করে নিচ্ছে।
এলাকাবাসীরা জানান, নেওয়াজ ও তার বাহিনী ফেনসিডিল, ইয়াবা ও হেরোইনের আসর বসায়। সঙ্গে ছিলো সুন্দরী নারীও। বিভিন্ন এলাকার সন্ত্রাসীদের এসব দিয়ে আপ্যায়ন করা হয় বলে জানা যায়। জমি বিক্রি করলে দিতে হয় লাখ টাকা।
ভুক্তভোগীরা আরও জানায়, নেওয়াজ ও তার বাহিনীর তাণ্ডব ও হামলার খবর বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হলে নেওয়াজ ও তার বাহিনী ভুক্তভুগিদের নানারকমের মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বেলাব এলাকার বেশির ভাগ মানুষের পেশা কৃষিকাজ। কিন্তু সম্প্রতি ওই এলাকার জমির দাম বেড়ে যাওয়ার পর থেকে বেলাব এলাকার সেকান্দার আলীর ছেলে নেওয়াজ আলী ওরফে ভুইসা নিরীহ মানুষের জমি দখল শুরু করে। ধীরে ধীরে তৈরি করে বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী।
বর্তমানে চালাচ্ছে সাধারণ মানুষের জমি জবরদখল। এসব করে অল্প সময়েই কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের মালিক বনে যায় সে। গ্রামের বাড়িতে আলিশান ডুপ্লেক্স বাড়ি এবং ঢাকার মিরপুর ১২ নাম্বারে দুইটি পাঁচতলা বাড়ি আছে এবং তার পরিবারের লোকজনের নামে বেনামে সম্পদ ক্রয় করে। এ বাহিনীর অত্যাচারে বর্তমানে দিশেহারা হয়ে পড়েছে এলাকার নিরীহ মানুষরা।
স্থানীয়দের প্রশ্ন, কবে এ সন্ত্রাসী বাহিনীর কবল থেকে মুক্তি পাবেন তারা? এ বাহিনীর ভয়ে কোনো প্রতিবাদ করার সাহসও পান না স্থানীয়রা।
স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, নেওয়াজ বাহিনীর একের পর এক তাণ্ডবের শিকার হয়ে অনেকেই ইতিমধ্যেই এলাকা ত্যাগ করে অন্যত্র বসবাস শুরু করেছেন।
যাদের জমিজমা রয়েছে তারাই থাকেন সবচেয়ে বেশি আতঙ্কে। চোখ পড়লেই জোরপূর্বক জমি দখল করে নেয় সে। প্রাণনাশের হুমকির মুখে বাধ্য হয়ে কম মূল্যে জমি বিক্রি করতে হয় তার কাছে।
স্থানীয়রা জানান, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর সন্ত্রাসী নেওয়াজ নিরীহদের জমিদখল থেকে শুরু করে বিভিন্ন অপকর্ম করে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছে। ভূমিদস্যু নেওয়াজ ও তার বাহিনীর কাছে স্থানীয়রা জিম্মি হয়ে পড়েছে। সাধারণ মানুষকে আতংকিত করতে এ বাহিনী কয়েক দিন পর পর তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছে। আর এসব তাণ্ডবের প্রতিবাদ করতে গেলেই মামলা-হামলা, মারপিট করা হয় প্রতিবাদকারীদের। তাই কেউ এ বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সাহসটুকুও পান না।
এ বাহিনীর বিরুদ্ধে জাল দলিল করারও অভিযোগ রয়েছে। জাল দলিল করে কৃষি জমি দখল করে এ বাহিনী। বিভিন্ন কায়দায় সে জনগনকে হয়রানি করতো।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেলাব থানার চন্দনপুর এলাকার এক কৃষক জানান, নেওয়াজ বাহিনী তাদের ৩৪ শতাংশ জমি দখল করে নিয়েছে। এভাবেই জমি না কিনেই নিরীহ কৃষকদের জমি দখল করে নিচ্ছে নেওয়াজ।
গত এক বছরে নেওয়াজ বাহিনী এই এলাকার নিরীহ লোকজনের উপর হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে। ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী মহলের ছত্রচ্ছায়ায় এক সময়ের ভুইসা এখন `নেওয়াজ বাহিনী`র প্রধান হয়ে উঠেছে। তাদের দিয়েই গোটা এলাকায় সন্ত্রাসের রামরাজত্ব কায়েম করে রেখেছে ভুইসা নেওয়াজ।
২০১৮ সালে জাতীয় পার্টি হতে নরসিংদী ৪ আসনে নির্বাচন করে জামানত ফেরত পায়নি। তাহার বিরুদ্ধে এখন বর্তমানে জমি সংক্রান্ত এবং চাঁদাবাজি সংক্রান্ত ১০ থেকে ১৫ টি মামলা চলমান আছে।