নতুন সরকার গঠনের তৎপরতা শুরু হয়েছে। টানা চতুর্থবারের মতো আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করতে যাচ্ছে। আগামী সপ্তাহে গঠিত হতে পারে নতুন মন্ত্রিসভা। তবে এর আগে নির্বাচন কমিশন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত সদস্যদের গেজেট আকারে প্রকাশ করবে। তারপর নতুন সরকার গঠন করা হবে।
গতকাল সচিবালয়ে নতুন নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের শপথের বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ আশা প্রকাশ করে বলেছেন, আগামী ১৫ই জানুয়ারির মধ্যে নতুন সরকারের মন্ত্রিসভা গঠিত হতে পারে। সরকারের অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ হবে নিরবচ্ছিন্ন ও সাশ্রয়ী মূল্যে বিদ্যুৎ-জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করা।
মন্ত্রিপরিষদ সূত্র বলছে, নতুন মন্ত্রিপরিষদ গঠনের আগে নির্বাচন কমিশন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত সদস্যদের গেজেট প্রকাশ করবে। তারপর নতুন সরকার গঠন হবে। মন্ত্রিপরিষদের এক কর্মকর্তা বলেন, তারা প্রস্তুত রয়েছেন। হয়তো দু’-একদিনের মধ্যে নতুন সরকার গঠনের বিষয়ে তাদেরকে নির্দেশনা দিতে পারে। তখন মন্ত্রিপরিষদ নতুন সরকার গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করবে।
আগামী ১০ থেকে ১৪ই জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচনে জয়ী সদস্যদের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
জানা যায়, সংসদ সদস্যদের নির্বাচনের বিষয়টি নিশ্চিত করে গেজেট প্রকাশের কাজ শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন। সংবিধান অনুযায়ী, গেজেট প্রকাশের তিনদিনের মধ্যে শপথ পড়াতে হবে। নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের গেজেট প্রকাশের পরপর স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী তাদের শপথ পড়াবেন। নতুন নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের শপথ আগামী ১৪ই জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। ১০ই জানুয়ারি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস।
এদিকে আওয়ামী লীগের টানা চতুর্থ মেয়াদের সরকারে কারা থাকছেন, বর্তমান মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের মধ্য থেকে কারা বাদ পড়ছেন আলোচনা চলছে এখন সর্বত্র। সূত্র জানিয়েছে, বর্তমান মন্ত্রিসভার সদস্যদের মধ্য থেকে বেশ কয়েকজনের নতুন মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে গত পাঁচ বছরের মূল্যায়নে যাদের পারফরম্যান্স খারাপ তারা সবাই বাদ পড়বেন। সেক্ষেত্রে বয়স এবং দলীয় পদ বিবেচনায় নেয়া হবে না বলে জানা গেছে। সম্ভাব্য তারুণ্যনির্ভর মন্ত্রিসভায় নতুন মুখ দেখা যেতে পারে।
৭ই জানুয়ারি দেশের ২৯৯টি আসনে একযোগে ভোট অনুষ্ঠিত হয়। বেসরকারি ফলাফল অনুযায়ী, এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পেয়েছে ২২২টি আসন। স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৬২টি আসনে জয় পেয়েছেন। এছাড়া জাতীয় পার্টি ১১টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) একটি, বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টি একটি এবং বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি একটি আসনে জয় পেয়েছে। এখন এই নির্বাচনের ফলাফল আনুষ্ঠানিকভাবে গেজেট আকারে প্রকাশ করবে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশন গেজেট প্রকাশের পর তিনদিনের মধ্যে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের শপথ অনুষ্ঠিত হবে। তবে এবার জাতীয় সংসদে বিরোধী দল কারা হবে, সেটি এখন বেশ আলোচনায় রয়েছে।
২০১৮ সালের ৩০শে ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট বিরাট ব্যবধানে জয় পায়। এ নির্বাচনে জয় পাওয়া সংসদ সদস্যদের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয় ২০১৯ সালের ৩রা জানুয়ারি।