সপ্তাহ খানেক আগে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিয়েছেন নাজমুল হাসান পাপন। দায়িত্ব নেয়ার দিনই সব ফেডারেশনগুলোর সঙ্গে বসার আগ্রহের কথা জানিয়েছিলেন বিসিবি সভাপতি। তারই ধারাবাহিকতায় আগামীকাল ৯ ফেডারেশন ও একটি সংস্থার সঙ্গে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে মতবিনিময় করবেন নতুন ক্রীড়ামন্ত্রী। এর পরের দিনই দুই শীর্ষ ফেডারেশন ফুটবল ও হকির সঙ্গে বসবেন তিনি। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে কবে ফুটবল ফিরবে, তা এখন কোটি টাকার প্রশ্ন। ঘরোয়া হকি কবে মাঠে গড়াবে সেটা ক্রীড়াঙ্গনের অনেক প্রশ্নের একটি। দেশের শীর্ষ ৩ খেলার মধ্যে ফুটবল ও হকির বর্তমান ও আগামী পথচলা কেমন হবে তা নির্ধারণের জন্যই এই দুই ফেডারেশনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বসবেন নতুন ক্রীড়ামন্ত্রী। ওপেনহার্ট সার্জারির পর বাফুফে সভাপতি কাজী মো. সালাউদ্দিন এখন বাসায় পূর্ণ বিশ্রামে আছেন। স্বাভাবিক কাজকর্মে ফিরতে আরো সময় লাগবে তার। বুধবার মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে বাফুফে সভাপতির পক্ষে কে যাবেন তা এখনো ঠিক হয়নি।
এ বিষয়ে বাফুফে সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষার বলেন, ‘আমরা বুধবার মন্ত্রীর সঙ্গে মত বিনিময় করবো। সভাপতি তো যেতে পারবেন না।
তিনিই এখন ঠিক করবেন কে তার প্রতিনিধিত্ব করবেন।’ বাফুফে সূত্রে জানা গেছে সালাউদ্দিনের বদলে মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যেতে পারেন দুই সহ-সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। মন্ত্রীর সঙ্গে প্রথম আনুষ্ঠানিক আলোচনায় ফুটবল ফেডারেশন কোন বিষয়টিকে বেশি গুরুত্ব দেবে? সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘ফুটবলের সার্বিক বিষয় নিয়েই আলোচনা হবে। তবে আমাদের অন্যতম প্রধান ইস্যু বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে কবে নাগাদ ফুটবল ফেরানো যাবে সে বিষয়টি। তারপরও আমরা সভাপতির গাইডলাইন নিয়েই মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করবো।’ ফুটবল ফেডারেশন এক ঘণ্টা মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার সুযোগ পাবে। এরপর ১২ টা থেকে হকি ফেডারেশন মত বিনিময় করবেন। তার আগে মঙ্গলবার ক্রীড়ামন্ত্রী মত বিনিময় করবেন সাঁতার, অ্যাথলেটিক্স, শুটিং, আরচারি, ভারোত্তোলন, ক্যারম, বাস্কেটবল, টেবিল টেনিস, ভলিবল ফেডারেশন ও মহিলা ক্রীড়া সংস্থার সঙ্গে। সকাল ১১টায় সভায় এসব ফেডারেশনের প্রতিনিধিদের উপস্থিত হওয়ার সময় দেয়া হয়েছে।
প্রতিটি ফেডারেশনের সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক ছাড়া একজন বাজেট কর্মকর্তা এবং একজন ট্যাকনিক্যাল ব্যক্তিকে সঙ্গে রাখার নির্দেশনা দিয়েছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। হকি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মুমিনুল হক সাঈদ বলেন, ‘এটা খুবই ভালো উদ্যোগ। আমরা বুধবার ক্রীড়াবান্ধব ক্রীড়ামন্ত্রীর কাছে আমাদের যে মূল সমস্যা স্পন্সর সেটা তুলে ধরবো। আমরা স্পন্সর ছাড়া গত বছর পাঁচটি টুর্নামেন্ট খেলেছি। বছরে মাত্র ১৬ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া একটি ফেডারেশন এভাবে স্পন্সর ছাড়া চলতে পারে না। এটা ছাড়া আমরা কিভাবে হকিটাকে আন্তর্জাতিক ভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি এ নিয়ে আগামী তিন বছরের একটি পরিকল্পনা তার কোছে জমা দিবো।’ বাংলাদেশ টেবিল টেনিস ফেডারেশনের সহ-সভাপতি খন্দকার হাসান মুনীর বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরেই মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এমন একটি সভার প্রত্যাশা করেছিলাম। মন্ত্রী মহোদয় দায়িত্ব নিয়ে আমাদের ডেকেছেন। এটা দেশের ক্রীড়াঙ্গনের জন্য সুখবর। এই সভায় আমরা আমাদের চাহিদার কথা বলতে পারবো। মন্ত্রীও আমাদের কাছে তার প্রত্যাশার কথা বলবেন। আশা করি ফলপ্রসু একটি সভা হবে।
এবার বিসিবিকে ডাকবেন পাপন
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রীর পাশাপাশি নাজমুল হাসান পাপন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডেরও সভাপতি। বিসিবি বস হিসেবে নয়, যুব ক্রীড়ামন্ত্রী হিসেবেই দ্রুত ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে বসতে চান তিনি। গতকাল মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পাপন বলেন, ‘ক্রিকেট বোর্ডও বলছে তারা বসতে চায়। তাই তাদেরকেও ডাকা হবে।’ ক্রীড়ামন্ত্রী আগামীকাল ৯টি ফেডারেশন, একটি সংস্থা এবং পরদিন (বুধবার) ফুটবল ও হকির সঙ্গে আলাদা বসবেন। ফুটবল নিয়ে নতুন ক্রীড়ামন্ত্রী বলেন, ‘ফুটবল, অলিম্পিক (বিওএ) গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এদের সঙ্গে আলাদা বিশেষভাবে বসতে হবে।’ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে নতুন করে দায়িত্ব পাওয়ার পর নাজমুল হাসান পাপন রোববার থেকে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে অফিস করছেন। গত সপ্তাহে প্রতিদিনই অফিস করেছেন তিনি। ক্রীড়ামন্ত্রী হিসেবে এক সপ্তাহ কাটানোর পর পাপন বলেন, ‘ফেডারেশনগুলোর সঙ্গে আলোচনার পর আসলে বিস্তারিত বলতে পারব। আমি এখনও তথ্য সংগ্রহ করছি।’ যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী নাজমুল হাসান পাপন গতকাল দুপুরে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম আধুনিকায়নের সংস্কারের অগ্রগতি, শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম ও প্রতিবন্ধী স্টেডিয়াম নিয়ে সভা করেন।