সর্বশেষ
Home » রাজনীতি » জাতীয় পার্টি » রওশনকে নিয়ে এগোচ্ছে জাপা’র বঞ্চিতরা

রওশনকে নিয়ে এগোচ্ছে জাপা’র বঞ্চিতরা

জাতীয় পার্টির বিক্ষুব্ধ, বঞ্চিত নেতাকর্মীদের নিয়ে এগুচ্ছেন দলটির প্রধান পৃষ্ঠপোষক বেগম রওশন এরশাদ। চেয়ারম্যান জিএম কাদের ও মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নুর উপর অনাস্থা জানানো নেতাকর্মীদের একজোট করার চেষ্টা করছেন রওশনপন্থি নেতারা। এরই মধ্যে আজ নিজ বাসভবনে বহিষ্কৃত নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন রওশন এরশাদ। সূত্র জানায়, গত কয়েকদিন ধরেই দলের বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ বাড়িয়েছেন। তাদের এই তৎপরতার অংশ হিসেবেই আজকের মতবিনিময়। সূত্র জানায়, রওশন এরশাদকে সামনে রেখে তৃণমূলের বঞ্চিত নেতাকর্মীরা এখন সামনে এগোতে চান। এ কারণে যেকোনো সময় দলের বিকল্প নেতৃত্বের ঘোষণা দেয়া হতে পারে। প্রয়োজনে তৃণমূল জাতীয় পার্টি নতুন দলেরও ঘোষণা দিতে পারেন তারা।
ঢাকা মহানগর উত্তরের ৬৭১ জন নেতাকর্মী গণপদত্যাগের পর থেকেই ফের আলোচনায় এসেছে নতুন নেতৃত্বের বিষয়টি। গণপদত্যাগের সংবাদ সম্মেলনে বৃহস্পতিবার রওশন এরশাদকে নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দেন নেতারা। জানতে চাইলে সিলেট-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য বহিষ্কৃত ভাইস চেয়ারম্যান ইয়াহইয়া চৌধুরী বলেন, আমরা কিন্তু নতুন দল করতে যাচ্ছি না।
রওশন এরশাদের নামের পিছনে এরশাদ আছে উনি কেন নতুন দল করতে যাবেন? উনি পুরাতন, বিক্ষুব্ধদের ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করছেন। রওশন এরশাদ তৃণমূল নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করছেন। আজ তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের খোলাসা করে সব তুলে ধরবেন। প্রয়োজনে নেতৃত্বের পরিবর্তন আনবেন। কিছু লোক বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন যে তিনি তৃণমূল জাতীয় পার্টি গঠন করছেন।
বেগম রওশন এরশাদের রাজনৈতিক সচিব গোলাম মসীহ বলেন, রওশন এরশাদ সবাইকে একত্র করতে চাইছেন। নতুন দল ঘোষণা করার কোনো কারণই নাই। যা সিদ্ধান্ত হবে কাউন্সিলে হবে। সেখানেই সিদ্ধান্ত হবে। জাতীয় পার্টির কাউন্সিল তো ইতিমধ্যে ৬ মাস দেরি হয়ে গেছে।

ঢাকা মহানগর উত্তরের বহিষ্কৃত আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম সেন্টু বলেন, জিএম কাদের দলকে মুদি দোকানে পরিণত করেছেন। রাতে বাসায় যান। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এক হাজারের বেশি। উপদেষ্টা করা হয়েছে একশ’ জন। এত পদধারী লোক কিন্তু তিনি মিটিং করার লোক পান না। তার মিটিংয়ে দলের থেকে বেশি মিডিয়ার লোক থাকে। একজন সে মিথ্যা কথা বলা শুরু করেছেন। ৬৭১ জন পদত্যাগ করা সবার পদ আছে। আমাদের কর্মসূচির কথা জানতে পেরে বৃহস্পতিবারই তিনি মহানগর উত্তরের সভা ডাকেন। সেখানে কেউ যান নাই। লোকজন না হওয়ার কারণে মিথ্যা কথা বলছেন। তারা স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন। তারা দল করতে চান এরশাদের। তারা রওশন এরশাদের সঙ্গে থাকতে চান।
তিনি আরও বলেন, খুব শিগগিরই আমরা নতুন ঘোষণা দিতে যাচ্ছি। দলকে টিকিয়ে রাখার জন্য আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। সারা দেশের অধিকাংশ নেতাকর্মী জিএম কাদের-মুজিবুল হক চুন্নুর সঙ্গে থাকতে চান না। তারা নির্বাচনে গিয়ে সকলেই অপদস্ত হয়েছেন। এখন আমরা নিজেদের রওশন এরশাদের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ করবো।

গতকাল গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে পার্টি মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু ৬৭১ জন নেতাকর্মীর পদত্যাগের বিষয়ে বলেন, শফিকুল ইসলাম সেন্টুর এত কর্মী কি আকাশ থেকে এসেছে? দলে এত সক্রিয় কর্মী ছিল, এত শক্তি ছিল, আমি মহাসচিব হিসেবে জানতাম না। এটা তো আমার ব্যর্থতা। তারা আবার পদত্যাগ করছেন, এতে আমি অবাক হয়ে গেলাম। রাতারাতি এত কর্মী এলো কোথা থেকে, সেটা নিয়ে গবেষণা করতে হবে। যদিও পদত্যাগকারীদের মধ্যে যারা ছিলেন, তাদের মধ্যে আমি ৭ থেকে ৮ জনকে চিনি, আর কাউকে কোথাও দেখিনি।

তিনি আরও বলেন, নেতাকর্মীরা পদত্যাগ করলেও দলে কোনো প্রভাব পড়বে না। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি থেকেও অনেক কর্মী চলে গেছেন। এতে দলের কোনো ক্ষতি হয় না। পদত্যাগকারী নেতাদের বিষয়ে চুন্নু বলেন, নতুন দল করলে তাদের স্বাগত জানাই। এটা গণতন্ত্রের জন্য শুভ লক্ষণ। তবে তাদের পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ হলে তা দেখার বিষয়। জাতীয় পার্টির নেতৃত্বে জি এম কাদের, এটাই একমাত্র পার্টি। এরশাদের আদর্শ থেকে বিচ্যুতির অভিযোগ তুলে ইতিপূর্বেও অনেকে দল ছেড়ে চলে গেছে। কিন্তু তারা জানেই না এরশাদের আদর্শ কী। বলতে পরলে আমি পদত্যাগ করবো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *