ইয়েমেনে বিদ্রোহী গ্রুপ হুতি। তারা দেশের ভিতরে সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। আবার তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে সৌদি আরবের নেতৃত্বে জোটবাহিনী। এই হুতিরা লোহিত সাগরে, অ্যাডেন সাগর উপকূলে মার্কিন বা পশ্চিমা বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা করছে মাঝে মধ্যেই। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও পশ্চিমা শক্তির বিরুদ্ধে এভাবে হামলা চালানোর সাহস দেখানো সহজ কথা নয়। কারণ, তারা জানে এসব হামলার জবাব কি হতে পারে। সম্প্রতি তারা লোহিত সাগরে মার্কিন জাহাজে ড্রোন হামলা করেছে। জর্ডানে মার্কিন ঘাঁটিতে ড্রোন হামলায় যে তিনজন সেনা সদস্য নিহত হয়, তার জন্য ইরানপন্থি এসব হুতিকে দায়ী করা হয়। তার ফল হিসেবে হুতিদের অবস্থানস্থলে হামলার পর হামলা চালিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, বৃটেন।
কিন্তু কারা এই হুতি? হুতিরা ইয়েমেনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে একটি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের গ্রুপ। হুসেইন আল হুতি নামের একজন হুতি আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা।
তার নাম অনুসারে তাদের নামকরণ হয় হুতি। ২০০০-এর দশকের শুরুতে ইয়েমেনের কঠোর শাসকের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি যুদ্ধ করেছে তারা। সেই শাসককে আরব বসন্তে বরখাস্ত করার পর হুতিরা রাজধানী সানার দিকে অগ্রসর হয় এবং ২০১৪ সালে ক্ষমতা দখল করে। অন্যদিকে ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট সালেহ তার অনুগত রিপাবলিকান গার্ডদেরকে হুতিদের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেন। ফলে তারা ইয়েমেনের শতকরা ৮০ ভাগের বেশি জনগণকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়। দ্রুততার সঙ্গে তাকে হত্যা করে হুতিরা। আরবের মধ্যে সবচেয়ে দরিদ্র দেশ ইয়েমেন। সেখানে হুতিরা ক্ষমতা দখলের ফলে সৃষ্ট গৃহযুদ্ধে ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় দেশটি। হুতিদের সঙ্গে যুদ্ধে কমপক্ষে দেড় লাখ মানুষ নিহত হয়েছেন। লাখ লাখ মানুষ বেঁচে আছেন খাদ্য সহায়তার ওপর। হুতিরা অনুসরণ করে সুন্নি সংখ্যাগরিষ্ঠ ইয়েমেনের শিয়া পন্থি জায়েদি শাখাকে। তারা ইয়েমেনের মোট জনসংখ্যার শতকরা মাত্র ১৫ ভাগ। তবে নিজেদেরকে তারা দেশের যথার্থ শাসক হিসেবে মনে করে।