চট্টগ্রামের হালদা পাড়ের সন্তান ডা. বাবর আলী এভারেস্ট জয় করেছেন। পেশায় চিকিৎসক বাবর এখন ৬ষ্ঠ বাংলাদেশি এভারেস্ট বিজয়ী। সর্বোচ্চ চূড়া থেকে নেমে ক্যাম্পে ফিরে তিনি লোৎসে অভিযানেও যাবেন। রোববার সকাল সাড়ে ৮টায় পৃথিবীর সর্বোচ্চ উঁচু স্থান মাউন্ট এভারেস্টের চূড়ায় আরোহণ করেছেন তিনি। তার এভারেস্ট অভিযানের সমন্বক ফরহান জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার বুড়িচ্চরে জন্ম নেয়া বাবর আলী চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ৫১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। তিনি নানা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গেও জড়িত।
জানা যায়, শনিবার দিবাগত রাতে ৭ হাজার ৯০০ মিটার উঁচু ক্যাম্প-৪ থেকে এভারেস্ট শিখরের পথে যাত্রা করেন বাবর। গত ১লা এপ্রিল এই তরুণ এভারেস্ট জয়ের উদ্দেশ্যে দেশ ছেড়েছিলেন। অভিযানের সমন্বয়ক ফরহান জামান জানান, মাউন্ট এভারেস্টে অভিযান নিঃসন্দেহে দুরূহ একটা কাজ। আজ সেটি সম্পন্ন করে বাবর ২৭ হাজার ৯৪০ ফুট উচ্চতার মাউন্ট লোৎসে আরোহণে যাত্রা করবেন।
বাংলাদেশ থেকে আগে এভারেস্ট আরোহণ হলেও একই অভিযানে এভারেস্ট এবং লোৎসে আরোহণের চেষ্টা হয়নি পূর্বে। সেই চ্যালেঞ্জই নিয়েছেন বেশ কয়েক বছর ধরে নিজেকে হিমালয়ের নানান চূড়ায় অভিযানের জন্য প্রস্তুত করা বাবর। তিনি বলেন, এই অভিযানে মোট খরচ হচ্ছে ৪৫ লাখ টাকা। যাতে মূল পৃষ্ঠপোষক হিসেবে আছেন ভিজ্যুয়াল নিটওয়্যার লিমিটেড। এ ছাড়া সহ-পৃষ্ঠপোষক ছিলেন এভারেস্ট ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, ঢাকা ডাইভার্স ক্লাব, বীকন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, ব্লু জে, চন্দ্রবিন্দু প্রকাশনী, গিরি, ভার্টিক্যাল ড্রিমার্স।
এ ছাড়াও অভিযানের জন্য গণতহবিল সংগ্রহে অংশ নিয়েছেন দেশ-বিদেশের নানা সামাজিক ও ক্রীড়া সংগঠন এবং অগণিত শুভাকাংক্ষী। অভিযানের সার্বিক সমন্বয় করেছে ডা. বাবর আলীর ক্লাব ভার্টিক্যাল ড্রিমার্স।
জানা যায়, ২০১৪ সালেই ক্লাব কর্তৃক আয়োজিত নেপালে এক হিমালয় অভিযানে বাবর সামিট করেন পাঁচ হাজার মিটার উচ্চতার পর্বত। সেটিই তার হিমালয়ে পথচলা শুরু। এরপর পর্বতারোহণের বিশুদ্ধতম ধরন বলে পরিচিত আল্পাইন স্টাইলে ২০১৬ সালে ক্লাব থেকে সামিট হয় ভারতের মাউন্ট ইয়ানাম। যা ছিল বাংলাদেশ থেকে প্রথমবার কোনো ২০ হাজার ফুট উচ্চতার পর্বত সামিট এবং সেই দলের সদস্য ছিলেন তিনি। পর্বতারোহণকে ধ্যানজ্ঞান মেনে তিনি বেসিক মাউন্টেনিয়ারিং কোর্স করেন ভারতের নেহেরু ইনস্টিটিউট অফ মাউন্টেনিয়ারিং থেকে। ২০১৪ সাল থেকে প্রায় প্রতিবছর করেছেন এক বা একাধিক হিমালয় অভিযান। এ ছাড়াও নিজেকে উপযুক্ত করে তুলতে বাবর নিয়মিত দৌড়ান, করেছেন ক্রস কান্ট্রি সাইক্লিং, করেন কায়াকিং, পায়ে হেঁটে টানা ৬৪ জেলা ভ্রমণ করেছেন সিঙ্গেল ইজার প্লাস্টিকের বিরুদ্ধে। ২০২৩ সালে তিনি ভারতের সর্ব উত্তরের কাশ্মীর থেকে সর্ব দক্ষিণের বিন্দু কন্যাকুমারী পর্যন্ত সাইকেলে চড়ে ভ্রমণ করেছিলেন।