ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের আওয়ামী লীগ নেতা মাদ্রাসাছাত্র আল আমিন হত্যা মামলার আসামি বাচ্চু মিয়াকে আটকের দুই ঘণ্টা পর ছেড়ে দিয়েছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। মঙ্গলবার রাতে জেলা ডিবি অফিসে প্রভাবশালী দুই বিএনপি নেতার তদবিরে ওসি ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতেই ঘটনাটি ঘটেছে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শী আয়েশা আক্তার। আটকের পরই ওসি’র মুঠোফোনে ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। এখন তিনি (ওসি) বলছেন, আমি অফিসে ছিলাম না। এ বিষয়ে আমি কিছুই জানতাম না। দারোগা ফারুক মুঠোফোনে বিষয়টি আমাকে জানিয়েছিলেন। আর দারোগা ফারুকে উত্তেজিত হয়ে মুঠোফোন বলেন সব মিথ্যা। এই ধরনের কোন ঘটনা ঘটেনি।
অনুসন্ধানে, ডিবি অফিস ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, সরাইলের মাদ্রাসা ছাত্র আল আমিন নিহতের ঘটনার মামলায় নামীয় ৭২ জনের মধ্যে অরুয়াইল ইউপি আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আবেদ আলীর ছেলে বাচ্চু মিয়া ২৯ নম্বর আসামি। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনের সড়ক থেকে বাচ্চু মিয়া, ৪৬ নম্বর আসামি ধামাউড়ার লাল মিয়ার ছেলে দুলাল মিয়া (৪০) ও ৪২ নম্বর আসামি বাদে অরুয়াইলের যুবলীগ নেতা কিরণ আলীর ছেলে ইব্রাহিম মিয়াকে (৫২) আটক করেন ডিবি পুলিশ। ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে দুলাল ও ইব্রাহিমকে ছেড়ে তারা বাচ্চুকে গাড়িতে তুলে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যান এস আই মো. উমর ফারুকের নেতৃত্বে কয়েকজন ডিবি সদস্য। সেখানে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরই ওসি’র কক্ষে প্রবেশ করেন বিএনপি’র দুই প্রভাবশালী নেতা। তারা বাচ্চুকে ছাড়িয়ে আনতে তদবির শুরু করেন। রাত সাড়ে ৮টার দিকে বাচ্চুকে ছেড়ে দেন ডিবি। হতাশ হন মামলার বাদী শফি আলী। জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, আমি মাত্র ৪-৫ দিন আগে যোগদান করেছি। আমি অফিসে ছিলাম না। এই বিষয়ে আমি কিছুই জানতাম না। আমাকে এস আই ফারুক মুঠোফোনে জানিয়েছেন, সরাইলের আওয়ামী লীগের পদধারী এক নেতাকে আটক করেছি। আধা ঘণ্টা পর ফারুক সাহেব বললেন- স্যার উনি তো আসামি বাচ্চু না। অন্য আরেক বাচ্চুকে ধরে ফেলেছি। ছেড়ে দিব? আমি এসপি স্যারকে বলেছি- এটা ওই বাচ্চু না। এরপর কী হয়েছে আমি জানি না।