সর্বশেষ
Home » শিক্ষা » বিশ্ববিদ্যালয় » ক্লাস বর্জনের ডাক – শিক্ষককে ‘চাকরিচ্যুতি’, ব্র্যাক শিক্ষার্থীদের দিনভর বিক্ষোভ

ক্লাস বর্জনের ডাক – শিক্ষককে ‘চাকরিচ্যুতি’, ব্র্যাক শিক্ষার্থীদের দিনভর বিক্ষোভ

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন শিক্ষক আসিফ মাহতাব উৎসকে চাকরিচ্যুত করার প্রতিবাদে ক্লাস বর্জনের ডাক দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনার প্রতিবাদে তারা দিনভর বিক্ষোভ করেন। পরিস্থিতি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেও তারা আশ্বস্ত হতে পারেননি। সন্ধ্যায় তারা ক্লাস বর্জনের ডাক দেন।
গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে বেলা ১২টার দিকে ‘ব্রাক ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্টস কমিউনিটি’ মানববন্ধনের আয়োজন করে। মানববন্ধন থেকে তারা তাদের দাবি তুলে ধরেন। তাদের দুটি দাবি হলো-শিক্ষক আসিফ মাহতাবকে কেন চাকরিচ্যুত করা হয়েছে তার বিষয়ে স্পষ্ট ব্যাখ্যা ও ট্রান্সজেন্ডার ইস্যুতে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্পষ্ট অবস্থান কী তা বিবৃতির মাধ্যমে জানানো। এসময় তারা (প্রশাসন) যদি কোনো উদ্যোগ গ্রহণ না করে তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেমিস্টার ফি বন্ধ ও ক্লাস বর্জনের হুঁশিয়ারি দেয়া হয়।
মানববন্ধনে প্রতিবাদকারীরা বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন। প্ল্যাকার্ডে শিক্ষার্থীরা ‘শরীফ থেকে শরীফা মানি না মানবো না’, ‘আমাদের এই বাংলায় ট্রান্সজেন্ডারের ঠাঁই নেই’ ‘ট্রান্সজেন্ডার আর হিজড়া এক না, এক না’ ‘নো টু এলজিবিটিকিউ’, ‘তোমার আমার বাংলায় ট্রান্সজেন্ডারের ঠাঁই নেই’, ‘নো টু রেইবো টেরোরিস্ট’, ‘ডাচ-ব্র্যাক সাপোর্ট এলজিবিটিকিউ? উই ব্র্যাকিয়ানস ডোন্ট’ ‘সাপোর্ট এলজিবিটিকিউ উই ডো নোট প্রমোট এলজিবিটিকিউ’, ‘সমকামিতার বিরুদ্ধে লড়াই করবো একসঙ্গে’ ‘আমার সোনার বাংলায় ট্রান্সজেন্ডারের ঠাঁই নেই’ ইত্যাদি লেখা প্রদর্শন করেন। সেইসঙ্গে দাবি আদায়ে বিভিন্ন স্লোগান দেন আন্দোলনকারীরা। মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, আসিফ মাহতাবের সঙ্গে বৈষম্য করা হয়েছে।

ট্রান্সজেন্ডার সকল ধর্মের কাছে অবৈধ, বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী এটা বৈধ না। যারা এটা বৈধতার জন্য কাজ করবে তাদের বিরুদ্ধেও আমরা লড়াই করবো। বাংলাদেশের ছাত্রসমাজ এর বিরুদ্ধে লড়াই করবে।
দিনভর আন্দোলনের পর আন্দোলরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে তিনজন প্রতিনিধি নীতি-নির্ধারকদের সঙ্গে এ আলোচনায় বসেন। বৈঠক শেষে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মুখপাত্র মুনতাসির মামুন বলেন, তারা আমাদের যথার্থ উত্তর দিতে পারেননি। তারা আমাদের দাবি মানেননি। আমরা আমাদের ন্যারেটিভে বলবৎ থাকবো। তাদের সঙ্গে তো আলোচনার কিছু নাই। এজন্য আমরা ক্লাস বয়কটের ডাক দিচ্ছি।

উল্লেখ্য, সোমবার নতুন পাঠ্যক্রমের আলোকে সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পাঠ্যসূচিতে থাকা একটি গল্পের সমালোচনার প্রেক্ষিতে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিলোসফির খণ্ডকালীন শিক্ষক আসিফ মাহতাব উৎসকে ক্লাস না নিতে বলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তিনি গত শুক্রবার রাজধানীর কাকরাইলে ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সে ‘বর্তমান কারিকুলামে নতুন পাঠ্যপুস্তক: বাস্তবতা ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তব্য দিতে গিয়ে উল্লেখিত অংশটি পাঠ্য বইয়ে অন্তর্ভুক্ত করার প্রতিবাদ জানান এবং ‘শরীফ থেকে শরীফা’ গল্পের পাতা ছিঁড়ে ফেলেন।

এই ভিডিও ভাইরাল হবার পর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চাকরিচ্যুত করা হয়। বিবৃতিতে বিশ্ববিদ্যালয়টি জানায়, চাকরি হারানো খণ্ডকালীন শিক্ষক আসিফ মাহতাব উৎসের সঙ্গে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির চুক্তি নবায়ন করা হবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *