আল কায়েদার সাবেক প্রধান ওসামা বিন লাদেন যে পাকিস্তানেই ঘাপটি মেরে বসেছিল, সে কথা আবোটাবাদে মার্কিন বাহিনীর অভিযানের অনেক আগেই জানানো হয়েছিল ইসলামাবাদকে। পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচনের দিন কয়েক আগেই জিও নিউজকে দেয়া একটি সাক্ষাৎকারে চাঞ্চল্যকর দাবি করলেন প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজ়া গিলানি। গিলানি পাক প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন ২০০৮ সাল থেকে ২০১২ সালের মধ্যে চারবার পাকিস্তান সফরে এসেছিলেন তৎকালীন মার্কিন সেক্রেটারি অব স্টেটস কনডোলেজা রাইস। গিলানির দাবি, রাইসের সঙ্গে তার প্রথম দেখা হয়েছিল ২০০৮ সালের ডিসেম্বর। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে গিলানি বলেন, রাইস যখন তাকে লাদেন সম্পর্কে আশঙ্কার কথা শুনিয়েছিলেন, তখন তিনি সেই বিষয়টিতে গুরুত্ব দেননি।
গিলানির কথায়, সে কথা শুনে গুজব বলেই উড়িয়ে দিয়েছিলেন তিনি। ২০১১ সালে মার্কিন সেনার হাতে নিকেশ হয় বিন লাদেন। এরপর ওই বছরেই পাকিস্তানের জাতীয় সংসদে রাখা বক্তব্যে গিলানি দাবি করেছিলেন, আল কায়েদা নেতা পাকিস্তানে গা ঢাকার বিষয়ে ইসলামাবাদ কিছুই জানত না। পুরোপুরি চেপে গিয়েছিলেন বিষয়টি। সেই নিয়ে প্রশ্ন করা হলে গিলানির দাবি, আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলির মুখ বন্ধ করতেই তিনি সেই সময় বিষয়টি প্রকাশ্যে আনেননি। যদিও গিলানির দাবি ,‘তাদের কাছে (আমেরিকা) এই বিষয়ে কোনও প্রমাণ থাকলে, তা আমাদের দেয়া উচিত ছিল।
আমরা তাদের অবশ্যই সাহায্য করতাম। কারণ আমরাও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ছিলাম। আমরাও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করছিলাম। আমরাও অনেককে হারিয়েছে, অনেকে শহীদ হয়েছেন।’
রাইস ( ৬৯) একজন আমেরিকান শিক্ষাবিদ এবং রাজনীতিবিদ, যিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা (২০০১-০৫) এবং সেক্রেটারি অফ স্টেট (২০০৫-০৯) হিসাবে কাজ করেছেন। তিনি স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের হুভার ইনস্টিটিউশনের বর্তমান পরিচালক।
৭১ বছর বয়সী গিলানি পাকিস্তানের ১৮তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি পাকিস্তান পিপলস পার্টির একজন প্রবীণ নেতা এবং ২০২১ সালে সিনেটর হিসেবে নির্বাচিত হন। পাকিস্তানি গ্যারিসন শহর অ্যাবোটাবাদে বিন লাদেনকে পাওয়া এটি পাকিস্তানের কাছে একটি ধাক্কা ছিল কিনা, এ প্রসঙ্গে গিলানি বলেছিলেন যে ‘এটি গোটা বিশ্বের একটি গোয়েন্দা ব্যর্থতা’।
সূত্র : এনডিটিভি