জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশন উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। রোববার এ ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
কমিশন চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় কমিশন গভীরভাবে উদ্বিগ্ন এবং ক্ষুব্ধ। বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো পবিত্র স্থানে এধরনের অপরাধ কোনোভাবেই কাম্য নয়। উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে এর আগেও কয়েকবার নারীর প্রতি ধর্ষণ, যৌন নিপীড়নের নজিরবিহীন, নিকৃষ্ট এবং ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়ে সারা দেশকে হতবাক করেছিল। বারবার একই স্থানে এমন ঘটনার পেছনের কারণ খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। অভিযুক্তকে দ্রুতসময় গ্রেপ্তার করায় কমিশন আইন- শৃঙ্খলা বাহিনীকে সাধুবাদ জানায়। বলেন, তবে, দ্রুত, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ তদন্তপূর্বক ছাত্র নামের এমন কুলাঙ্গার দোষীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে যাতে করে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করা যায়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে উক্ত ঘটনায় কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গন নারীর জন্য নিরাপদ করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আহ্বান জানায় কমিশন।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এক দম্পতিকে ডেকে এনে স্বামীকে আবাসিক হলে আটকে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগ নেতাসহ দুজনের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেতা মোস্তাফিজসহ ৩ জনকে আটক করেছে পুলিশ। ভুক্তভোগী নারীর বরাত দিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয় যে, তাদের বাড়ি আশুলিয়ার জিরানী এলাকায়।
তাদের বাসায় ভাড়া থাকতেন অভিযুক্ত মামুন। বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিক–বিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজের সঙ্গে মামুনের পূর্বপরিচয় ছিল। ঘটনার দিন ভুক্তভোগীকে নিয়ে দোকানে যাওয়ার কথা ছিল তার স্বামীর। তাই ফোন করে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে বলেন এবং আসার সময় বাসা থেকে মামুনের জন্য কিছু জামা-কাপড় নিয়ে আসতে বলে তার স্বামী। কারণ, মামুন কয়েক দিন ক্যাম্পাসে মোস্তাফিজের কাছে থাকবেন। এরপর মোস্তাফিজ ও মামুন মিলে ভুক্তভোগীর স্বামীকে মীর মশাররফ হোসেন হলের ‘এ’ ব্লকের ৩১৭ নম্বর কক্ষে আটকে রাখেন। পরে জামা-কাপড় নিয়ে ওই নারী ক্যাম্পাসে এলে তার কাছ থেকে সেগুলো নিয়ে কক্ষে রেখে আসতে যান মামুন। এরপর মামুন কক্ষ থেকে ফিরে এসে ওই নারীকে বলেন, তার স্বামী হলের অন্য ফটক (জঙ্গলের দিক) দিয়ে আসবেন, সেদিকে যেতে। পরে তাকে হলসংলগ্ন জঙ্গলে নিয়ে মোস্তাফিজ ও মামুন ধর্ষণ করেন বলে ভুক্তভোগী অভিযোগ করেন।