নির্বাচনের পর জোট সরকার গঠনের দিকে দৃষ্টি দিয়েছে নওয়াজ শরীফের পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএলএন)। তারা নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। ফলে বিলাওয়াল ভুট্টোর পাকিস্তান পিপলস পার্টিসহ (পিপিপি) অন্য ছোট দলগুলোকে নিয়ে একটি ঐক্যমত্যের সরকার গঠনের কথা বলছেন নওয়াজ শরীফ। সেক্ষেত্রে যদি নওয়াজ শরীফ নিজেকে প্রধানমন্ত্রী পদে প্রার্থী করেন, তাহলে সেই জোটে পিপিপি যোগ না-ও দিতে পারে বলে জানিয়ে দিয়েছেন পিপিপির প্রথম সারির নেতা খুরশিদ শাহ। এ খবর দিয়েছে অনলাইন জিও নিউজ।
বৃহস্পতিবার নির্বাচন হয়ে যাওয়ার পর শুক্রবার পর্যন্ত সরকারি নয়, বেসরকারি যে ফল প্রকাশ হয়েছে, তাতে নওয়াজ শরীফ তার দলকে একক বৃহৎ দল হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন। অন্য দলগুলোকে পরবর্তী সরকার গঠনে যোগ দেয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। এর জবাবে জিও নিউজকে খুরশিদ শাহ বলেন, নওয়াজ শরীফ প্রধানমন্ত্রী হতে চাইছেন। কিন্তু তিনি নিজেকে যদি প্রধানমন্ত্রী পদে প্রার্থী করেন, তাহলে এই জোটে আমার দল যোগ না-ও দিতে পারে।
উল্লেখ্য, পিপিপির পক্ষ থেকে দলটি চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারিকে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী দেখতে চায়। তাই খুরশিদ শাহ বলেছেন, নওয়াজ শরীফ যে ঘোষণা দিয়েছেন তা অপরিপক্ব। তিনি নিজেকে তিনদিন আগেই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন।
পিপিপির এই নেতা কেন্দ্রীয় সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি শুক্রবার আরও বলেন, নির্বাচনের সরকারি ফল ঘোষণার পর স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সামনে ৭২ ঘণ্টা সময় থাকবে কোনো দলে যোগ দেয়ার। যথাযথ ঘোষণার পর আমরা সিদ্ধান্ত নেব। এ সময় নওয়াজ শরীফকে কঠোরভাবে সমালোচনা করেন খুরশিদ শাহ। তিনি বিস্ময় প্রকাশ করেন- পিএমএলএন কতটা সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে?
ওদিকে ৮ই ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের পর পিএমএলএন থেকে প্রধানমন্ত্রী পদে নিজের প্রার্থিতা ঘোষণা আগেই করেছেন নওয়াজ শরীফ। তিনি অন্য দলগুলোকে নিয়ে সরকার গঠনের প্রক্রিয়া ঘোষণা করেছেন। শুক্রবারই তিনি বিজয় ঘোষণা দিয়েছেন লাহোর মডেল টাউনে নিজের বাসভবন থেকে। তিনি বলেছেন- আমি ফজলুর রেহমান, খালিদ মকবুল সিদ্দিকী এবং আসিফ আলি জারদারির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে নির্দেশনা দিয়েছি শেহবাজ শরীফকে। এর জবাবে পিএমএল-কায়দের (পিএমএলকিউ) নেতা চৌধুরী সালিক হোসেন বলেছেন, শনিবার নির্বাচনের ফল প্রকাশ হলে তারা পিএমএলএনের প্রস্তাব বিবেচনা করবেন। তিনি বলেন, আমরা দেখবো পিপিপি নাকি পিএমএলএন, কাদের ম্যানিফেস্টো ভাল। তবে তিনি নওয়াজের প্রস্তাব একেবারে প্রত্যাখ্যান করেননি।
নওয়াজ শরীফের এসব উদ্যোগের জবাবে ইমরান খানের দল পিটিআইয়ের নেতা আসাদ কায়সার বলেছেন, নির্বাচনে একক বৃহৎ দল হিসেবে উঠে এসেছে পিটিআই। আমাদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হয়েছে সরকারি মেশিনারি। আমাদের সামনে তিন থেকে চারটি সুযোগ আছে। আমরা আন্তঃদলীয় নির্বাচনের বিষয়টি বিবেচনা করছি। আমরা আদালতেও যাবো। শনিবার সিদ্ধান্ত নেবো আমাদের ভবিষ্যত পরিকল্পনা কি হবে। কিন্তু নওয়াজ শরীফ যে ভাষণ দিয়েছেন এর নেপথ্য কারণ কি তা আমরা জানি না।