সর্বশেষ
Home » বিশ্ব » পাকিস্তানে রাজনৈতিক উত্তেজনার শেষ কোথায়!

পাকিস্তানে রাজনৈতিক উত্তেজনার শেষ কোথায়!

পাকিস্তানে রাজনীতিতে নানা বিতর্ক। নানা অনিশ্চয়তা ভর করছে সময় সময়। থিয়েটারে যেমন প্রতিটি মুহূর্তে দৃশ্যের পরিবর্তন হয়। নতুন আলো, সরঞ্জামে সাজানো হয় পরের দৃশ্যের জন্য, ঠিক তেমনই অবস্থা পাকিস্তানের। দেশটি এতটা বছর পরও একটি স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশ পেল না। প্রেসিডেন্ট ড. আরিফ আলভির আপত্তি থাকা সত্ত্বেও জাতীয় পরিষদের অধিবেশন আহ্বান করছে জাতীয় পরিষদের সচিবালয়। এ নিয়ে বিস্তর বিতর্ক পাকিস্তানে। হাটে, মাঠে, ঘাটে সাধারণ মানুষের মুখে মুখে একটিই প্রশ্ন- কি হতে যাচ্ছে দেশে? দেশটির এ সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা ইমরান খানকে জেলে আটকে রেখে পার্লামেন্ট বসতে যাচ্ছে। সরকার গঠন করতে যাচ্ছে পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএলএন) ও পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)। তাতে সরকারি গুরুত্বপূর্ণ পদ ভাগাভাগি হয়েছে এই দুই দলে।

এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট পদ ভাগে পেয়েছে পিপিপি। প্রধানমন্ত্রী পেয়েছে পিএমএলএন। তাই প্রেসিডেন্ট পদে সাবেক প্রেসিডেন্ট ও পিপিপির সহসভাপতি আসিফ আলি জারদারির পক্ষে প্রচারণা চালাতে একটি কমিটি গঠন করেছেন দলটির চেয়ারম্যান ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি। তার এ কমিটি দেখাশোনা করবেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানি, রাজা পারভেজ আশরাফ, খুরশিদ শাহ ও নাভিদ কমর। এরই মধ্যে আজ বুধবার খাইবার পখতুনখাওয়া এবং বেলুচিস্তান প্রদেশের নবনির্বাচিত এমপিদের শপথ হতে যাচ্ছে। স্থানীয় সময় সকাল ১১টায় খাইবার পখতুনখাওয়া প্রদেশের শপথ বিষয়ক অধিবেশন আহ্বান করা হয়েছে। এতে শপথ নেবেন নবনির্বাচিত ১১৫ জন সদস্য। এই পরিষদে ১১৪ আসনের মধ্যে সুন্নি ইত্তেহাদ কাউন্সিলের আছে ৯০টি, জমিয়তে উলেমায়ে ইসলাম ফজলের (জেইউআইএফ) আছে সাতটি আসন এবং পিএমএলএনের আছে পাঁচটি আসন। 

অন্যদিকে স্থানীয় সময় আজ বুধবার বিকাল ৩টায় শপথ অনুষ্ঠান হবে বেলুচিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের। এতে সভাপতিত্ব করবেন জামরান খান। তাকে সভাপতি হিসেবে নিয়োগ করেছে সচিবালয়। তবে এই অধিবেশনে কোনো অতিথি উপস্থিত থাকার অনুমোদন দেয়া হয়নি। এই অধিবেশনকে কেন্দ্র করে প্রতিবাদ বিক্ষোভের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কর্তৃপক্ষ। 
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিকে ইনসাফ (পিটিআই) বলেছে, নির্বাচন কমিশনের ওপর তাদের কোনো আস্থা নেই। তারা মনে করে ৮ই ফেব্রুয়ারি নির্বাচন ছিল জালিয়াতির। এর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের শুনানি মুলতবি রেখেছে কমিশন। একইভাবে পিটিআইয়ের যেসব স্বতন্ত্র প্রার্থী তারা একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত হলেও তাদেরকে নিয়ম অনুযায়ী সংরক্ষিত আসনগুলো দেয়া হয়নি। জিও নিউজকে এসব কথা বলেছেন পিটিআই নেতা শের আফজাল মারওয়াত। তিনি আরও জানান, ইমরান খানকে কেন্দ্রীয় সরকার গঠনে প্রস্তাব দিয়েছিল পিপিপি। কিন্তু ইমরান তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। একই দলের সিনেটর সৈয়দ আলি জাফর বলেছেন, জাতীয় পরিষদের উদ্বোধনী অধিবেশন আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেননি প্রেসিডেন্ট আলভি। তবে সংবিধান অনুযায়ী পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের প্রথম অধিবেশন আহ্বানে বিদায়ী স্পিকারের কর্তৃত্বের ঘাটতি আছে। তিনি বলেন, অধিবেশন আহ্বানের বিরোধিতা করেননি প্রেসিডেন্ট। তিনি শুধু তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছেন। তাতে তিনি বলেছেন, সাংবিধানিক নিয়ম অনুসরণ করার পরই তিনি অধিবেশন আহ্বানে প্রস্তুত। 

এই চিঠির জবাব দিয়েছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার। তারা বলেছে, সংবিধানের ৯১ ধারার অধীনে নিম্ন কক্ষ অসম্পূর্ণ থাকা অবস্থায় জাতীয় পরিষদের অধিবেশন আহ্বান করায় কোনো বাধা নেই। প্রেসিডেন্ট সংবিধানের ৫৪ অনুচ্ছেদের অধীনে শুধু রুটিন অধিবেশন বন্ধ করতে পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *