রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড়ে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে আন্দোলনরত সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। আগামীকাল বুধবার (৩০ অক্টোবর) সকালে আবার অবরোধের ঘোষণা দিয়ে তারা সড়ক ছেড়েছেন।
মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) বেলা ১২টার দিকে সায়েন্সল্যাব মোড়ে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। রাস্তা বন্ধ করে তারা বিভিন্ন স্লোগান দেন। এতে ওই এলাকায় দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। চরম ভোগান্তিতে পড়েন নগরবাসী। বিকেল ৫টা পর্যন্ত রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ ওই মোড় অবরোধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা।
বিকেলে আন্দোলনকারীদের মুখপাত্র আব্দুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, স্বতন্ত্র পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য ‘বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর কমিশন’ গঠন করতে হবে। সেই কমিশন না করা পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে। আগামীকাল সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এখানে সড়ক অবরোধ করা হবে। আর এর মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে সে বিষয়ে পরবর্তী সময়ে জানানো হবে।
এর আগে গত ২২ সেপ্টেম্বর ঢাকা কলেজে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাত কলেজের সমস্যার চিত্র তুলে ধরেন শিক্ষার্থীরা। এরপর একই দাবি জানিয়ে ২৫ সেপ্টেম্বর শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, ২৯ সেপ্টেম্বর ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান ও ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজকে স্মারকলিপি দেন তারা। একই স্মারকলিপি কলেজগুলোর অধ্যক্ষদেরও দেওয়া হয়।
এরপর গত ২২ অক্টোবর সাত কলেজ শিক্ষার্থীরা রাজধানীর নীলক্ষেত ও সায়েন্সল্যাব মোড় অবরোধ করেন। দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত এ অবরোধ কর্মসূচি চলে। বিকেলে সায়েন্সল্যাব মোড়ে কর্মসূচি থেকে তিন দফা দাবি জানিয়ে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেন শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে সেদিনের মতো কর্মসূচি স্থগিত ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সাত কলেজের একাডেমিক ও প্রশাসনিক সমস্যা নিরসনে ১৩ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে। তবে শিক্ষার্থীরা সেই কমিটি প্রত্যাখ্যান করেছে।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, তারা সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে রয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য একটি কমিশন গঠনের দাবি জানিয়ে আসছে। কিন্তু সরকার সাত কলেজের একাডেমিক ও প্রশাসনিক সমস্যা নিরসনের লক্ষ্যে ১৩ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে। এটি হাজার হাজার শিক্ষার্থীর দাবির সংঙ্গে উপহাস।
অবরোধকালে শিক্ষার্থীরা ‘অধিভুক্তি নাকি মুক্তি, মুক্তি, মুক্তি’, ‘শিক্ষা নিয়ে বাণিজ্য, মানি না, মানব না’, ‘আর নয় দাসত্ব, হতে চাই স্বতন্ত্র’, ‘ঢাবির জায়গায় ঢাবি থাক, সাত কলেজ মুক্তিপাক’, ‘নিপীড়ন নাকি অধিকার, অধিকার, অধিকার’, ‘প্রশাসনের প্রহসন, মানি না মানব না’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা ঢাকার বড় সাতটি সরকারি কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়। কলেজগুলো হলো ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ।