ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র পদ ঘোষণা ঘিরে সমালোচনার প্রসঙ্গে অবিভক্ত ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে এবং বিএনপি’র আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেন বলেছেন, আমি কিন্তু সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে হারি নাই, আমাকে হারিয়ে দেয়া হয়েছে, এটা কাগজে-কলমে প্রতিষ্ঠা পাক- সেটাই আমাদের লক্ষ্য ছিল।
শুক্রবার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের জাতীয়তাবাদী রিকশা, ভ্যান, অটোচালক দলের উদ্যোগে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঈদ শুভেচ্ছা প্রদান উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠান শেষে প্রধান অতিথি হিসেবে ছাত্র-জনতার বিপ্লবে রিকশা, ভ্যান, অটোচালকদের মধ্যে যারা নিহত হয়েছেন তাদের পরিবার ও আহত সদস্যদের হাতে তারেক রহমানের দেয়া ঈদ শুভেচ্ছা তুলে দেন বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। বৃহস্পতিবার ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. নুরুল ইসলাম ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২০২০ সালের নির্বাচনে ফজলে নূর তাপসকে বিজয়ী ঘোষণার ফল বাতিল করে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করেন। সেই নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত শেখ ফজলে নূর তাপসকে মেয়র ঘোষণা করে সরকারের জারি করা গেজেটও বাতিল করা হয়েছে। সেইসঙ্গে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করা হয়েছে।
ইশরাক হোসেন বলেন, এই আইনি লড়াইটা সম্পন্ন করার জন্য শুরু থেকেই আমরা লেগেছিলাম। তার মাধ্যমে অবৈধভাবে যে ক্ষমতা দখল করেছিল, এটা ভোট রিগিং করে মেয়র পদ দখল করেছিল। তার বিরুদ্ধে একটা আইনি ভিত্তি প্রতিষ্ঠা করাই ছিল আমাদের উদ্দেশ্য। একটি মহল এই বিষয়টি ফোকাস করছে না। তারা দেখাচ্ছে যে, আমরা বিএনপি মেয়র পদে যাচ্ছি। কিন্তু আমরা যে আইনি দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেলাম সেটা তারা বলছে না, আমরা যে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করেছি, সেটা বলা হচ্ছে না।
আল্লাহর প্রতি শুকরিয়া আদায় করে তিনি বলেন, আমি দীর্ঘ প্রায় পাঁচ বছর আইনি লড়াই করার পর বৃহস্পতিবার আদালতের এই রায় পেয়েছি। আমি ন্যায়বিচার পেয়েছি। এখন দলের হাইকমান্ড সিদ্ধান্ত নেবেন এবং সবকিছু বিচার বিশ্লেষণ করেই সিদ্ধান্তটি নেয়া হবে। সেই অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ আমরা নেবো।
ইশরাক বলেন, আমি নির্বাচনের পর ৩০ দিনের মধ্যে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে মামলাটি দায়ের করেছিলাম। এই মামলাটি ১৮০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি হওয়ার কথা থাকলে বিগত ফ্যাসিবাদী হাসিনা সরকারের আমলে এটাকে বাধাগ্রস্ত করে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী তাপস এই মামলা বাতিলের জন্য আদালতের ওপর চাপ দেন এবং মামলা বাতিল করার জন্য হাইকোর্টে আবেদন করে মামলার শুনানি বন্ধ করে রাখেন। পরবর্তীতে ৫ই আগস্টের পর আদালত শুনানি করে এবং যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া শেষে আমি রায় পাই। এখন আমি ন্যায়বিচার পেয়েছি, সেটাকে যদি বিএনপি সদস্য বলে আমার ন্যায়বিচার প্রাপ্তিকে বিতর্কিত করা হয়, তাহলে সেটার বিচার জনগণই করবে। এই রায়টি সাড়ে চার বছর আগে ১৮০ দিনের মধ্যে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার আমলে এই রায় হতে দেয়া হয়নি।