সন্ত্রাসবাদে জড়িত থাকার অভিযোগে তুরস্কের ইস্তাম্বুলের মেয়র একরেম ইমামোগলুকে গ্রেপ্তার করে দেশটির পুলিশ। ২০২৮ সালের নির্বাচনে দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানের সম্ভাব্য প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী এই মেয়রকে গ্রেপ্তারের পর তার মুক্তির দাবিতে এবার দেশজুড়ে বিক্ষোভ শুরু করেছেন সমর্থকরা। যা ক্রমেই ব্যাপক আকার ধারণ করছে। যদিও সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ইমামোগলু। একটি বক্তৃতায়, এরদোগান দেশের অস্থিরতার জন্য ইমামোগলুকে দায়ী করেছেন। ইমামোগলুর বিরোধী রিপাবলিকান পিপলস পার্টি (সিএইচপি) তার বিরুদ্ধে শান্তি বিঘ্নিত করার এবং দেশের জনগণকে মেরুকরণ করার চেষ্টার অভিযোগ এনেছে। বিক্ষোভকারীরা মেয়রের গ্রেপ্তারকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আখ্যা দিয়ে তার দ্রুত মুক্তি এবং এরদোয়ানের পদত্যাগের দাবি তুলেছেন।

দেশটিতে চারদিন ধরে চলা এই বিক্ষোভকে ২০১৩ সালের সরকারবিরোধী আন্দোলনের পর সবচেয়ে বড় আন্দোলন বলে দাবি করেছেন বিরোধীরা। সরকারবিরোধী এই বিক্ষোভ সামলাতে দেশটির আইনশৃঙ্খলাবাহিনীকে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে। সন্ধ্যার দিকে জনসমাগম বেড়ে যাওয়ায় বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করার জন্য রাউন্ডের পর রাউন্ড গুলি চালায় নিরাপত্তা বাহিনী। জমায়েতের উপর সরকারী নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই ‘এখন ন্যায়বিচারের সময়’ এই স্লোগান তুলে সমস্ত বয়সের মানুষ মেয়রের বেআইনি গ্রেফতারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে থাকেন। কালো পোশাক এবং মুখোশ পরা এক নারী বিবিসিকে বলেছেন যে, তিনি রাজনৈতিক কারণে বা বিরোধীদের সমর্থন করার কারণে প্রতিবাদ করছেন না, বরং গণতন্ত্র রক্ষার জন্য প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন। অন্য একজন নারী যিনি তার ১১ বছর বয়সী ছেলেকে বিক্ষোভে নিয়ে এসেছিলেন, বলেছেন যে, ‘আমি সন্তানের ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিত। তুরস্কে দিন দিন বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে উঠছে, আমরা আমাদের জীবন নিয়ন্ত্রণ করতে পারছি না, আমরা কাকে চাই তা বেছে নিতে পারছি না এবং এখানে প্রকৃত বিচার নেই।’

শনিবার রাতে রাস্তায় নেমে অনেকেই বিবিসিকে বলেছেন যে, তারা এমন একটি ভবিষ্যতের জন্য লড়াই করছেন যার ওপর তারা ভরসা করতে পারেন। আঙ্কারা ও ইজমিরে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ওপর জলকামান নিক্ষেপ করে। গত চার রাত ধরে, হাজার হাজার মানুষ তুরস্ক জুড়ে ব্যাপকভাবে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে রাস্তায় নেমেছে।কর্তৃপক্ষ ইস্তাম্বুলে সমস্ত জমায়েতের উপর চার দিনের নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রাস্তার বিক্ষোভ দমন করার চেষ্টা করেছিল। বৃহস্পতিবার থেকে, দাঙ্গা পুলিশ বারবার বিক্ষোভকারীদের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে এবং বিক্ষোভকারীদের দিকে পেপার গ্যাস এবং জল কামান ছুড়েছে। তুর্কি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিক্ষোভের তৃতীয় দিনে ৩৪৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সূত্র : বিবিসি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here