হঠাৎ করে চেনাব নদীতে পানির প্রবাহ উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি করেছে ভারত, যা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ‘পানি আগ্রাসনের’ শঙ্কা তৈরি করেছে। বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় সম্পাদিত সিন্ধু পানি বণ্টন চুক্তি (ইন্দাস ওয়াটারস ট্রিটি) একতরফাভাবে স্থগিত করার কয়েক দিনের মধ্যেই দিল্লি এই পদক্ষেপ নিয়েছে। এ খবর দিয়েছে দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ৬৫ বছর পুরনো চুক্তির আওতায় থাকা পশ্চিমাঞ্চলীয় তিনটি নদীর একটি হচ্ছে চেনাব। সোমবার রাত ৯টায় হেড মারালায় নদীর পানিপ্রবাহ ছিল ৩,১০০ কিউসেক, যা মঙ্গলবার বেড়ে দাঁড়ায় ২৬ হাজার কিউসেকে। মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে এই অস্বাভাবিক বৃদ্ধি ঘটেছে।
পাঞ্জাবের সেচমন্ত্রী কাজিম পিরজাদা চেনাব নদীতে এই ‘অস্বাভাবিক পরিবর্তন’ নিশ্চিত করেছেন। বার্তা সংস্থা এএফপিকে তিনি বলেন, আমরা চেনাব নদীতে এমন পরিবর্তন লক্ষ্য করেছি, যা একেবারেই স্বাভাবিক নয়। একদিন আগে প্রবাহ স্বাভাবিক ছিল,আর পরদিন তা অনেকটা কমে গেছে। তিনি সতর্ক করেন, যেসব এলাকায় বিকল্প জলপ্রবাহ নেই, সেগুলো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
সিন্ধু নদীর কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রকাশিত তথ্যানুযাযী, বিভিন্ন রিম স্টেশন থেকে মোট এক লাখ ৩২ হাজার কিউসেক পানি ছাড়া হয়েছে। যাতে পানির প্রবাহ ছিল এক লাখ ৮৮ হাজার ৮০০ কিউসেক। আর মারালাতে ছাড়া হয়েছে ৭ হাজার ৭০০ কিউসেক পানি।
১৯৬০ সালে পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে স্বাক্ষরিত সিন্ধু পানি চুক্তি
(আইডব্লিউআই) অনুযায়ী, ভারত যৌথ নদীগুলোর পানি সেচের কাজে ব্যবহার করতে পারলেও এর প্রবাহ ঘুরিয়ে দেয়া বা ভাটির অঞ্চলমুখী প্রবাহে পরিবর্তন আনতে পারে না। তবে গত ২৩ এপ্রিল একতরফাভাবে সেই চুক্তি স্থগিত করে ভারত। পেহেলগামে ২৬ জন পর্যটক হত্যাকাণ্ডে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে এই পদক্ষেপ নিয়েছে তারা।
সিন্ধু পানি চুক্তি অনুযায়ী ভারত চেনাবসহ পশ্চিমাঞ্চলীয় নদীগুলোতে পানি ব্যবহার করতে পারলেও রিজার্ভয়ার ফ্লাশিং করতে হলে আগে পাকিস্তানকে জানাতে হবে। কিন্তু সম্প্রতি ভারত তা না জানিয়েই করেছে। যা সুস্পষ্ট চুক্তির লঙ্ঘন।