ঠাকুরগাঁও ও সুনামগঞ্জ সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে দুই বাংলাদেশি যুবকের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার ভোরে ঠাকুরগাঁওয়ের মিনাপুর সীমান্তে ও শুক্রবার দিবাগত রাতে সুনামগঞ্জের দোয়ারা বাজার উপজেলার বাগানবাড়ি সীমান্তে এসব ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট বিজিবি কর্মকর্তারা।
ঠাকুরগাঁওয়ের সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত হওয়া যুবকের নাম আসকর আলী (২৪)। শনিবার (১২ জুলাই) ভোররাতে উপজেলার মিনাপুর সীমান্তের কাছে ভারতের অভ্যন্তরে এ ঘটনা ঘটে। নিহত আসকর হরিপুর উপজেলার জীবনপুর গ্রামের কানুরার ছেলে।

স্থানীয় সূত্র ও বিজিবি জানায়, ভোর আনুমানিক ৪টার দিকে আসকরসহ কয়েকজন মিনাপুর সীমান্ত দিয়ে ভারতের অভ্যন্তরে প্রবেশের চেষ্টা করছিলেন। এসময় তারা কাঁটাতারের বেড়ার কাছে পৌঁছালে ভারতের কিষাণগঞ্জ ব্যাটালিয়নের বিএসএফ সদস্যরা গুলি চালায়। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান আসকর। ঘটনার পরপরই সীমান্তে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেখানে অতিরিক্ত বিজিবি সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। দিনাজপুরে অবস্থিত ৪২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তারা ঘটনার বিষয়ে অবগত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা শুরু করেছে। নিহতের মরদেহ ফেরত আনার লক্ষ্যে বিএসএফকে পতাকা বৈঠকে বসার আহ্বান জানানো হয়েছে।

এদিকে সুনামগঞ্জের সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে শফিকুল ইসলাম (৪৫) নামের আরেক বাংলাদেশি যুবকের মৃত্যু হয়েছে। তিনি দোয়ারাবাজার উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের ভাঙ্গাপাড়া গ্রামের কিতাব আলীর ছেলে। বিজিবি সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (১২ জুলাই) দিনগত মধ্য রাতে সীমান্তের ভাঙ্গারপাড় নামক স্থান দিয়ে ১০-১২ জন বাংলাদেশি চোরাকারবারি গরু চোরাচালানের উদ্দেশ্যে প্রায় ৫০০ গজ ভারতের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। পরে গরু নিয়ে আসার সময় বিএসএফ বাঁধা দিলে তারা বিএসএফ টহল দলের উপর পাথর নিক্ষেপ করে। একপর্যায়ে বিএসএফ ৪-৫টি সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ এবং গুলি চালালে শফিকুল গুলিবিদ্ধ হয়। তাকে উদ্ধার করে তার পরিবারের সহায়তায় দোয়ারা বাজার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। 

দোয়ারা বাজার থানার ওসি জাহিদুল হক বলেন, বাগান বাড়ি সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে এক বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। সুনামগঞ্জ ২৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল একেএম জাকারিয়া কাদির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মৃত্যুর কারণ উদ্‌ঘাটনে চোরাকারবারীদেরকে শনাক্ত করতে বিজিবি কাজ করছে। এ ব্যাপারে প্রতিপক্ষ বিএসএফকে পতাকা বৈঠক ও প্রতিবাদলিপি প্রেরণের মাধ্যমে জোরালো প্রতিবাদ জানানো হচ্ছে।

 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here