বিডিআর হত্যাকাণ্ডের প্রতিবেদন যাচাই চলছে, সম্পৃক্ততা পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। সোমবার ট্রাইব্যুনালে এক ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন তিনি।
তাজুল ইসলাম বলেন, ‘বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশন একটি প্রতিবেদন দিয়েছেন। এটা বাংলাদেশের ইতিহাসে একটা অসম্ভব গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। আমি মনে করি, এইখানে আমাদের কাছেও কমপ্লেইন এসেছে বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে। সেটা আমরা এখন পর্যন্ত যাচাই-বাছাই সেভাবে করিনি। আমরা যাচাই-বাছাই করে দেখবো, এই রিপোর্টটা পড়ে দেখবো। তারপরে যদি আমাদের কাছে মনে হয় যে এই বিচারটা ক্রাইমস এগেইনস্ট হিউম্যানিটির মধ্যে পড়ছে বা আমাদের এখানে বিচার করার উপযুক্ত, তাহলে এখানে হবে। আদারওয়াইজ সুপারিশ অনুযায়ী বাংলাদেশের প্রচলিত সকল আইন, আমাদের আইন ছাড়াও অন্যান্য আইন যেগুলো রয়েছে, সেগুলোর অধীনেও বিচার হতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘যেটা ইম্পরট্যান্ট, সেটা হচ্ছে যারা পারপিট্রেটর ছিল, যারা পরিকল্পনাকারী ছিল, পেছন থেকে মদদদাতা ছিল, বেনিফিশিয়ারি ছিল, কারা কারা এখানে সম্পৃক্ত ছিল—এই সব জিনিস যেহেতু উদ্ঘাটন করা গেছে, আশা করি এর মাধ্যমে এদের বিচারও নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।’
এর আগে গতকাল রোববার বিডিআর বিদ্রোহে সংঘটিত বর্বরতম হত্যাযজ্ঞ তদন্তের জন্য গঠিত জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এ প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে এক প্রতিক্রিয়ায় চিফ প্রসিকিউটর আরও বলেন, ‘মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক পেজ থেকে ওই রিপোর্টের একটা সারসংক্ষেপ জেনেছি। সুতরাং এই সারসংক্ষেপ থেকেই বোঝা যাচ্ছে একটা অসাধারণ কাজ হয়েছে। এই দীর্ঘদিন ধরে জাতির ইতিহাসে এত বড় রক্তক্ষরণ, স্বাধীন বাংলাদেশের রাজধানীর বুকে এতগুলো সামরিক বাহিনীর অফিসারকে হত্যা করা হয়েছে, আমাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, সামরিক বাহিনী, সেনাবাহিনীর মনোবল ভেঙে দেয়া হয়েছিল—সেটার সঠিক তদন্ত এতদিন পর্যন্ত আলোর মুখ দেখেনি। সেই জিনিসটাই এই সরকার করেছেন, জাতির সামনে উন্মোচন করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘পেছনের কারা মাস্টারমাইন্ড ছিল, কারা হত্যাকারী ছিল, কারা এটার বেনিফিশিয়ারি, কেন এটা করা হয়েছিল, কী উদ্দেশ্য ছিল—এটা মনে করি আমাদের জাতির জন্য একটা অনেক বড় সাহসী কাজ হয়েছে।’



