ইরানের অস্তিত্বের প্রতি যদি ইসরাইল হুমকি হয়, তাহলে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির দিকে ধাবিত হবে তারা। দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনির উপদেষ্টা কামাল খারাজি বলেছেন, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাকে যদি ইসরাইল টার্গেট করে তাহলে ইরানের হাতে কোনো বিকল্প থাকবে না। তিনি বলেন, এমন হলে আমাদের সামরিক কর্মকাণ্ডে পরিবর্তন আনতে হবে। ইরানের স্টুডেন্ট নিউজ নেটওয়ার্ককে উদ্ধৃত করে এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা। তার ভাষায়, ইহুদি শাসকরা যদি আমাদের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়, তাহলে আমরা আমাদের কর্মসূচি পরিবর্তন করবো। উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরে ইরান বলে আসছে তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ উপায়ে ব্যবহারের জন্য। তবে পশ্চিমাদের সন্দেহ ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে। এমন পরিস্থিতিতে কামাল খারাজি ওই মন্তব্য করলেন।
তবে শেষ কথা বলবেন আয়াতুল্লাহ খামেনি। তিনি ২০০০-এর দশকে একটি ফতোয়ার সাহায্যে দেশে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি বন্ধ করে রেখেছেন। বলেছেন, ইসলামে পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধ বা হারাম।
কিন্তু ২০২১ সালে ইরানের তখনকার গোয়েন্দা বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, ইরানের ওপর পশ্চিমাদের চাপের ফলে ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির দিকে ধাবিত হতে পারে। ইরান শতকরা ৬০ ভাগ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে। কিন্তু পারমাণবিক অস্ত্র তৈরিতে শতকরা প্রায় ৯০ ভাগ খাঁটি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ হতে হয়। যদি বর্তমান পারমাণবিক পদার্থকে আরও সমৃদ্ধ করা হয়, তাহলে দুটি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করা যাবে বলে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার একজন কর্মকর্তা বলেছেন।
ইরান এবং ইসরাইলের মধ্যে ছায়াযুদ্ধ তুঙ্গে ওঠে এপ্রিলে। এর আগে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানের কন্স্যুলেটে ১লা এপ্রিল ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইসরাইল। তাতে কন্স্যুলেট ভবন বিধ্বস্ত হয়। নিহত হন ইরানের রেভ্যুলুশনারি গার্ডের কমান্ডার মোহাম্মদ রেজা সহ কমপক্ষে সাত সদস্য। এর জবাবে ১৩ই এপ্রিল ইরান কমপক্ষে ৩০০ ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায় ইসরাইলে। ২০১৭ সাল থেকে ইরান এবং লেবাননের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত হিজবুল্লাহকে টার্গেট করে নিয়মিত হামলা চালায় ইসরাইল। গত অক্টোবর থেকে এই হামলা জোরালো হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার গোলান উপত্যকা থেকে ছোড়া হয় ইসরাইলি ক্ষেপণাস্ত্র। তা গুলি করে ভূপাতিত করার দাবি করে সিরিয়ার বিমান প্রতিরক্ষা বাহিনী।