মুদ্রাস্ফীতি এবং পণ্যের ঘাটতির জেরে ইতোমধ্যেই দেশের মানুষের নাভিশ্বাস ওঠার জোগাড়, এর মধ্যেই গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মতো জ্বালানির দাম ৫০০-শতাংশ বাড়িয়ে দিলো কিউবা সরকার। ১ কোটি ১০ লক্ষ জনসংখ্যার দেশ ১৯৯০-র দশকের পর সব থেকে ভয়ংকর আর্থিক সঙ্কটের মুখোমুখি হয়েছে। করোনাকাল থেকেই অর্থনীতির পতন, সাম্প্রতিক বছরগুলিতে মার্কিন অনুদানে রাশ টানা ও পরিকাঠামোগত দুর্বলতার কারণে ক্রমশ ধসে যাচ্ছে কিউবার অর্থনীতি। কমিউনিস্ট দ্বীপের নগদ-সংকটে ভোগা সরকার তার বাজেট ঘাটতি কাটানোর জন্য কয়েকটি পদক্ষেপের অংশ হিসাবে ১ ফেব্রুয়ারি থেকে জ্বালানির নতুন দাম ধার্য করেছে। যার জেরে এক লিটার নিয়মিত গ্যাসোলিনের দাম ২৫ পেসো (২০ ইউএস সেন্ট) থেকে বেড়ে ১৩২ পেসোতে পৌঁছে গেছে যেখানে প্রিমিয়াম পেট্রোলের দাম ৩০ থেকে ১৫৬ পেসো ধার্য করা হয়েছে।
ডমিঙ্গো ওং এএফপিকে বলেছেন, তার মোটরবাইকের জন্য দশ লিটার জ্বালানি কিনতে এখন তার মাসিক বেতনের প্রায় অর্ধেক ব্যয় করতে হবে।কিউবা, ছোট্ট একটা দেশ। সেখানেই মূল্যবৃদ্ধির প্রভাবে ৫ গুণ বেড়েছে জ্বালানি তেলের দাম। শুধু তো জ্বালানির দামই বাড়েনি। এর সঙ্গে বিদ্যুতের খরচও একধাক্কায় অনেকটা বেড়েছে। সরকারের তরফে বিদ্যুতের দাম ২৫ শতাংশ বৃদ্ধির ঘোষণা করা হয়েছে।
সরকারি অনুমান অনুসারে, কিউবার অর্থনীতি ২০২৩ সালে দুই শতাংশ হ্রাস পেয়েছে, যেখানে মুদ্রাস্ফীতি ২০২৩ সালে ৩০ শতাংশে পৌঁছেছে।
কিউবার সরকার, যা প্রায় সমস্ত প্রয়োজনীয় পণ্য ও পরিষেবাগুলিতে ভর্তুকি দেয়, ইতিমধ্যে গত মাসে জানিয়েছিল যে তারা জ্বালানির দাম বাড়াতে চলেছে। জ্বালানি মন্ত্রী ভিসেন্টে দে লা ও লেভি বলেছেন যে দাম বৃদ্ধির উদ্দেশ্য ছিল ঘাটতি কমিয়ে একটি স্থিতিশীল সরবরাহ বজায় রাখা। কর্তৃপক্ষ আরও ঘোষণা করেছে যে পর্যটকরা এখন বৈদেশিক মুদ্রায় জ্বালানির জন্য অর্থ প্রদান করবে এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলারের বিপরীতে বিনিময় হার সামঞ্জস্য করার কথা বিবেচনা করছে। অর্থনীতিবিদ ওমর এভারলেনি পেরেজ এএফপিকে বলেছেন যে বাকি বিশ্বের তুলনায় কিউবায় জ্বালানি সস্তা হতে পারে “কিন্তু আপনি যদি দেশের বেতনের সাথে তুলনা করেন তবে এটি খুব ব্যয়বহুল।” দেশের নাগরিক জুয়ান আন্তোনিও ক্রুজাটা বলছেন, “আমাদের ক্রয়ক্ষমতা যথেষ্ট নয়, এটি আমাদের সকলকে প্রভাবিত করবে।”
সূত্র : এনডিটিভি