সর্বশেষ
Home » অন্যান্য » বিএসএফের গুলিতে বিজিবি সদস্য নিহত, যা বললেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী

বিএসএফের গুলিতে বিজিবি সদস্য নিহত, যা বললেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী

সীমান্ত হত্যা বন্ধে যখনই বাংলাদেশ সরব হয়েছে, তখন ভারতের দিক থেকে বাংলাদেশি চেরাকারবারীদের ওপর দায় চাপানো হয়েছে। বলা হয়েছে, গরুসহ চোরাই পথে মালামাল আনতে গিয়ে বিএসএফ সদস্যদের ওপর চড়াও হয় কারবারীরা। তাদের রুখতে গুলি করতে বাধ্য হয় বিএসএফ। কিন্তু এবার ঘটলো উল্টো ঘটনা। গরু পাচারকারী ভারতীয় চোরাকারবারীদের ধাওয়া করে বিএসএফ-এর গুলিতে প্রাণ হারালেন বিজিবি জোয়ান। ঘটনাটি প্রকাশের পর থেকে দেশজুড়ে নানা আলোচনা। প্রায় ১৫ বছর ধরে সীমান্ত হত্যা শূণ্যের কোটায় নামানোর চেষ্টা করছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার। যদিও ভারতের শীর্ষ পর্যায় থেকে দফায় দফায় এ নিয়ে অঙ্গীকার রয়েছে। যশোরের বেনাপোল সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বিজিবি সদস্য নিহতের ঘটনায় ভারতের তরফে কোন বক্তব্য এসেছে কি-না? জানতে চাইলে পররাষ্ট্র মন্ত্রী ‘এ নিয়ে এখনই কথা বলতে চান না’ বলে প্রশ্নটি এড়িয়ে যান। সেগুনবাগিচায় মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রী হিসাবে নিজের প্রথম বিদেশ সফর পরবর্তী ব্রিফিংয়ে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছিলেন ড. হাছান মাহমুদ।
সেখানে বিজিবি জোয়ান নিহত হওয়ার ঘটনা বিষয়ক প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “দেখুন… আমি আজ দুপুরে ফিরেছি (উগান্ডা থেকে)। আমি ডোমেস্টিক (অভ্যন্তরীণ) কোনো বিষয়ে এখনো মনোযোগ দিতে পারিনি। এ ব্যাপারে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যদি কোন বক্তব্য থাকে, সেটি অবশ্য আপনাদের বলা হবে।
এ বিষয়ে আমরা এখন কথা বলতে চাই না।” সোমবার গভীর রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিজিবি সদস্য নিহতের খবর জানান যশোর ৪৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আহমেদ হাসান জামিল। বিজিবির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সোমবার ভোর আনুমানিক সাড়ে ৫টার দিকে বিজিবি যশোর ব্যাটালিয়নের ধান্যখোলা বিওপির জেলেপাড়া পোস্ট সংলগ্ন এলাকায় ভারত থেকে আসা একদল গরু চোরাকারবারিকে সীমান্ত অতিক্রম করে আসতে দেখে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর টহল দল তাদের চ্যালেঞ্জ করে। চোরাকারবারিরা তখন দৌড়ে ভারতের দিকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় বিজিবি টহল দলের সদস্য সিপাহি মোহাম্মদ রইসুদ্দীন চোরাকারবারিদের পেছনে ধাওয়া করতে করতে ঘন কুয়াশার কারণে দলবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। প্রাথমিকভাবে তাকে খুঁজে পাওয়া না গেলে পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন মাধ্যমে জানা যায়, সে বিএসএফের গুলিতে আহত হয়ে ভারতের অভ্যন্তরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ঘটনার পরপরই এ বিষয়ে ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক করা হয়। তখন জানা যায়, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই সিপাহি মারা গেছেন।
উগান্ডায় হাছান-জয়শঙ্করের বৈঠকে যেসব আলোচনা: এদিকে উগান্ডার রাজধানী কাম্পালায় গত শনিবার জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের (ন্যাম) সম্মেলনের ফাঁকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বৈঠক করেন। সেই বৈঠকে আলোচনার প্রসঙ্গে সংবাদ ব্রিফিংয়ে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, তিনি (জয়শঙ্কর) ভারতের অভিনন্দন, সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন (দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে সরকার গঠন করায়)। তিনি (জয়শঙ্কর) আমাকে ভারত সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন, আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি যাব। সফর নিয়েও আলোচনা হয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের যে সম্পর্ক, আমাদের প্রধানমন্ত্রী ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বে যে উচ্চতায় পৌঁছেছে; সেটিকে আরও দৃঢ়, আরও বিস্তৃত করার ব্যাপারে আমরা আলোচনা করেছি। বৈঠকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে ভারতের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কাম্পালায় বৈঠক নিয়ে জয়শঙ্কর ওইদিন তার এক্স হ্যান্ডেলে বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ‘শক্তিশালী থেকে আরও শক্তিশালী’ হচ্ছে। সেই সফরে কি কি বিষয়ে আলোচনা হবে? তিস্তা আসবে কিনা? জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ বলেন, ভারত সফর নিয়ে আমরা কাজ শুরু করব। আমি মাত্রই এসেছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *