মিয়ানমারের সামরিক জান্তার টার্গেট এখন স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়। না, টার্গেট মানে হামলা নয়। তারা এসব প্রতিষ্ঠান টার্গেট করেছে প্রফেসর, শিক্ষক ও ছাত্রদের সামরিক প্রশিক্ষণ দেয়ার জন্য। প্রশিক্ষণ শেষে তাদেরকে যোগ দেয়াবে সেনাবাহিনীতে। এরই মধ্যে আয়েওয়াদি অঞ্চলের রাজধানী পাথেইনের চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ছাত্রদের প্রশিক্ষণ দেয়া শুরু করেছে তারা। এ সপ্তাহে শুরু হয়েছে এই প্রশিক্ষণ। এর মধ্য দিয়ে এটা ফুটে উঠেছে যে, বাইরের কোনো দেশের সঙ্গে যুদ্ধ নয়, নিজের দেশের ভিতরে বিদ্রোহী গ্রুপগুলোর সঙ্গে লড়াইয়ে তারা কতটা বেকায়দায় আছে। এ খবর দিয়ে অনলাইন দ্য ইরাবতী বলছে, প্রথম দিনেই পাথেইন ইউনিভার্সিটিতে এমন সামরিক প্রশিক্ষণে যোগ দিয়েছিলেন মোট ১১৬ জন প্রফেসর ও ছাত্র। তারা তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের এবং একটি কলেজের। এগুলো হলো পাথেইন ইউনিভার্সিটি, টেকনোলজিক্যাল ইউনিভার্সিটি, কম্পিউটার ইউভিার্সিটি এবং এডুকেশন কলেজ।
ওই অঞ্চলে এটাই বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষক ও ছাত্রদের প্রথম প্রশিক্ষণ। দ্য ইরাবতীকে এ তথ্য দিয়েছে প্রতিরোধ গ্রুপের পাথেইন স্পেশাল টাস্কফোর্স। বলা হয়েছে, এই প্রশিক্ষণ শেষ করতে সময় লাগবে ১৫ থেকে ৪৫ দিন। তবে সেনাবাহিনীপন্থি টেলিগ্রাম চ্যানেল থেকে বলা হচ্ছে, এসব মানুষ স্বেচ্ছায় এই প্রশিক্ষণে যোগ দিয়েছেন। পাথেইন স্পেশাল টাস্কফোর্স এ তথ্যকে মিথ্যা বলে দাবি করেছে। তারা বলেছে, প্রফেসররা এবং ছাত্রারা কখনো সামরিক প্রশিক্ষণ নিতে চায় না। এ নিয়ে ওইসব ইউনিভার্সিটি এবং কলেজের শিক্ষক ও ছাত্রদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ইরাবতী। কিন্তু তারা এ বিষয়ে কোনো উত্তর দেয়নি।
উল্লেখ্য, গত বছরের শেষের দিক থেকে প্রতিরোধ যোদ্ধা বা বিদ্রোহী গোষ্ঠীর কাছে মারাত্মকভাবে পরাজিত হচ্ছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু শহর এবং ঘাঁটি দখল করেছে তারা। শান, রাখাইন, কারেনি এবং চিন রাজ্যে মারাত্মক লড়াই চলছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ইউ থান শয়ে নাইং বলেছেন, নিজেদের বাহিনীকে গড়ে তোলা এবং ‘বসন্ত বিপ্লবে’ সফলতা প্রতিরোধ করতে শাসকগোষ্ঠী এখন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ও ছাত্রদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। তবে এতে তারা সফল হবে না। তাতে উল্টো ফল দেবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে পুরো দেশের জনগণ সেনাবাহিনীর ওপর হতাশ। ফলে যাতই প্রশিক্ষণ দেয়া হোক, তাতে সেনাবাহিনীর শক্তি বৃদ্ধি হবে না।