চঞ্চলতা শিশুর সহজাত ধর্ম। কিন্তু আঘাত কালো কাম্য নয়। তবে মাথায় আঘাত ভীষণ এবং সবচেয়ে বেশি মারাত্মক। শিশুর মাথার হাড় যেমন পাতলা থাকে তেমনিভাবে তাদের রক্তনালীও বড়দের চেয়ে কমজোরি হয়। তাই আঘাতজনিত কারণে ক্ষতির সম্ভাবনা বড়দের চেয়ে শিশুদের বেশি। মজার বিষয় হলো আমরা গুরুত্ব দেই শিশু কত উঁচু থেকে পড়েছে তার উপর। কিন্তু শিশুদের ক্ষেত্রে সামান্য চেয়ার এমনকি ছোট টুলে উঠতে গিয়ে সরাসরি মাথার উপর আঘাত পাওয়াও মারাত্মক সমস্যা তৈরি করতে পারে। অনেক সময় ছোট শিশুরা একসঙ্গে খেলতে গিয়ে এমন ঘটনা হয়। তখন অন্য ছোট শিশু তাকে সাহায্য করতে যায়। কিন্তু তখন পড়ে যাওয়া শিশুকে উঠাতেতো পারেই না, বরং আবার ফেলে দেয় এটা আরও ভয়ঙ্কর।
মনে রাখতে হবে মস্তিষ্ক পুরো শরীর নিয়ন্ত্রণ করে তাই শিশুর মাথায় ব্যথা পাওয়ার ঘটনাকে এড়িয়ে যাওয়া যাবে না।
শিশুকে খেয়াল করুন
# কেটে গিয়ে রক্ত পড়ছে কিনা। তাহলে পরিষ্কার কাপড় দিয়ে চেপে ধরুন। সম্ভব হলে বরফ ব্যবহার করুন রক্ত বন্ধ করার জন্য। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করুন।
# ফুলে গেলে বরফ চাপা দিন। এরপর নিচের কোনো সমস্যা হয় কিনা দেখুন।
# বেশি ব্যথা, কথা বলতে সমস্যা, দেখতে সমস্যা, শরীরের ভারসাম্য রক্ষা করতে না পারা।
# স্মৃতি ভুলে যাওয়া।
# বমি করা।
# নাক/কান দিয়ে রক্ত বের হওয়া, অস্বাভাবিক আচরণ।
# খিঁচুনি।
এসবের মধ্যে যেকোনো একটি সমস্যা যদি দেখা যায় দ্রুত শিশুকে শিশুবিশেষজ্ঞ দেখাতে হবে।
এমনকি অনেক সময় তৎক্ষণাৎ কোনো লক্ষণ বোঝা নাও যেতে পারে। তারপরও ২৪ থেকে ৭২ ঘণ্টা শিশুকে সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখতে হবে। কারণ এ সময়ের মধ্যে যেকোনো সমস্যা হতে পারে।
মনে রাখবেন, মাথায় আঘাত পাওয়ার পর অন্ততপক্ষে চারঘণ্টা শিশুকে না খাওয়াইয়া রাখা ভালো।
কারণ যদি আঘাতজনিত কারণে শিশু বমি শুরু করে, তাহলে তা শ্বাসনালীতে ঢুকে মারাত্মক সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এ সময় শিশুকে জোর করে জাগিয়ে রাখার দরকার নাই। ঘুমাতে চাইলে ঘুমাতে দিন। ব্যথার জন্য প্যারাসিটামল ছাড়া অন্যকোনো ওষুধ ব্যবহার করা যাবে না। বাচ্চাকে অকারণে নাড়ানো যাবে না। মাথা সোজা রেখে বালিশ ছাড়া সমান স্থানে শুইয়ে রাখলে বেশি ভালো। তবে যেকোনো প্রকার মাথার আঘাতই হোকনা কেন এবং এরপর শিশুকে দেখতে সম্পূর্ণ সুস্থ মনে হলেও প্রত্যেকেরই উচিত শিশুকে শিশুবিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখানো।