প্রক্টর ও সহপাঠীকে দায়ী করে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ফাইরুজ অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় উত্তাল হয়ে উঠেছে ক্যাম্পাস। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে শুক্রবার দিবাগত রাতেই ছুটি যান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. সাদেকা হালিম। সেখানে তাঁকে প্রধান ফটকে আটকে দেন ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। এসময় তিনি তাদের শান্ত হতে বললে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। এদিকে, ফাইরুজ অবন্তিকার মৃত্যুর জন্য দায়িদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। আজ শনিবার বিকেল তিনটায় জবির শান্ত চত্বরে এই বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
শুক্রবার (১৫ মার্চ) রাতে ওই শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর মাঝরাত থেকেই শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে উত্তাল হয় জবি ক্যাম্পাস। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা অভিযুক্ত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর সর্বোচ্চ বিচারের দাবি জানান। সেখান থেকেই ‘নিপীড়নের বিরুদ্ধে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়’ ব্যানারে বিক্ষোভের ডাক দেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনে উত্তাল জবি ক্যাম্পাসে রাতেই ছুটে যান উপাচার্য ড. সাদেকা হালিম। দিবাগত রাত ১টায় উপাচার্য ক্যাম্পাসে গেলে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে আটকে দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তখন ড. সাদেকা হালিম শিক্ষার্থীদের শান্ত করার চেষ্টা করলে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ায় ঘোষণা দেন।
জবি ক্যাম্পাসে থাকাকালে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য সাত কর্মদিবস সময় নিতে চাইলে, শিক্ষার্থীরা তা প্রত্যাখ্যান করে ১২ ঘণ্টায় মধ্যে তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পেশ করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থার দাবি জানান। এছাড়া, রাতের মধ্যেই অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান তারা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, এর আগেও জবিতে নারী শিক্ষার্থীদের যৌন হয়রানি ও আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু প্রশাসনের অবহেলার কারণে অভিযুক্তরা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছেন। এই কারণেই এরকম ঘটনা আবারো ঘটেছে।
জবি’র প্রক্টর ও অবন্তিকার সহপাঠী
এদিকে, এর আগে উপাচার্যের নির্দেশে অভিযুক্ত সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ও অভিযুক্ত শিক্ষার্থী আম্মানকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে প্রশাসন। একই সঙ্গে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কমিটিতে আহ্বায়ক হিসেবে রয়েছেন আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মাসুম বিল্লাহ, সদস্য সচিব হিসেবে রয়েছেন আইন কর্মকর্তা রঞ্জন কুমার দাস। কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবুল হোসেন, সঙ্গীতের চেয়ারম্যান ঝুমুর আহমেদ।
এর আগে শুক্রবার রাত ১০টায় কুমিল্লা জেলা সদরের নিজ বাসায় গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ফাইরুজ অবন্তিকা। পরে তাকে তাৎক্ষণিক জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।