রাশিয়ার মিসাইল হামলায় আবারও বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছিল ইউক্রেন। যদিও দ্রুত সমস্যার সমাধান করতে পেরেছে দেশটি। তারপরেও বৃহস্পতিবার দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা গেছে। ইউক্রেনের কর্মকর্তারা বলছেন, জাপোরিশিয়ার যে অংশটি কিয়েভ-নিয়ন্ত্রিত, সেখানকার ‘ডিনেপ্র হাইড্রো পাওয়ার প্ল্যান্ট’ রাশিয়ার হামলায় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিয়েভের কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, রাশিয়ান সামরিক বাহিনী আবারও ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামোতে শক্তিশালী বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করেছে। তবে মস্কোর প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এখনও এই দাবির বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
গত বৃহস্পতিবার রাশিয়ার চালানো হামলাকে বলা হচ্ছে সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে সবথেকে শক্তিশালী। হামলায় ইউক্রেনের প্রধান একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে সেখানে আগুন ধরে যায় এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। তবে ইউক্রেনের কর্মকর্তারা জোর দিয়ে বলেন যে, আশঙ্কার কোনো কারণ নেই, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত ভিডিও এবং ছবিতে দেখা যাচ্ছে যে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি সংলগ্ন একটি বাঁধে আগুন লেগেছে৷ শুক্রবার ফেসবুকে একটি পোস্টে ইউক্রেনের জ্বালানি মন্ত্রী জার্মান গালুশচেঙ্কো অভিযোগ করেছেন যে, রাশিয়ার লক্ষ্য হচ্ছে ইউক্রেনের জ্বালানি ব্যবস্থাকে অচল করে দেয়া। দুর্ভাগ্যবশত বিভিন্ন অঞ্চলে বিদ্যুৎ উৎপাদন সুবিধা, ট্রান্সমিশন এবং বিতরণ ব্যবস্থার ক্ষতি হয়েছে।
রাশিয়া যুদ্ধের শুরুতেই জাপোরিশিয়া অঞ্চল দখলে নিয়ে নেয়।
এরপর একটি গণভোটের মাধ্যমে এ অঞ্চল আনুষ্ঠানিকভাবে রাশিয়ায় যুক্ত হয়। তবে ওই গণভোটকে স্বীকৃতি দেয় না ইউক্রেন ও তার পশ্চিমা মিত্ররা। তবে জাপোরিশিয়ার কিছু অংশ এখনও ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। আর সেখানেই অবস্থিত ওই পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রটি। এর আগে জাপোরিশিয়ার একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র রাশিয়া নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়। ফলে সেখানে উৎপাদিত বিদ্যুৎও পাচ্ছে না ইউক্রেন।
বিদ্যুৎ সংকটের কারণে খারকভ, ওডেসা, ডেনপ্রোপেট্রোভস্ক, ভিনিৎসা, লভিভ, ইভানো-ফ্রাঙ্কিভস্ক এবং নিকোলাইভ অঞ্চল সহ ইউক্রেনের বেশিরভাগ এলাকায়ই ব্যাপক লোডশেডিং দেখা যাচ্ছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কির মতে, মস্কো একসঙ্গে ৬০টির বেশি ড্রোন এবং বিভিন্ন ধরনের প্রায় ৯০টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। খারকভের মেয়র ইগর তেরেখভ বলেছেন, শহরে ১৫টি বিস্ফোরণ হয়েছে। এতে শহরের পানি সরবরাহ সিস্টেম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অপরদিকে ওডেসা অঞ্চলের প্রধান ওলেগ কিপার বলেছেন, রাশিয়ার হামলায় প্রায় ৫৩ হাজার মানুষ বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছে। অবস্থা স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে।
সর্বশেষ হামলার বিষয়ে মন্তব্য করে রাশিয়ান এমপি মিখাইল শেরমেট বলেছেন যে, তারা বেলগোরোড এবং অন্যান্য সীমান্তবর্তী শহরের বেসামরিক নাগরিকদের উপর ইউক্রেনের হামলার প্রতিক্রিয়া হিসাবে এই হামলা চালিয়েছে।