আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা (আইএমএফ) প্রবাসী আয়ে আয়কর আদায়ের প্রস্তাব করেছে। রাজস্ব আদায় বাড়াতে প্রবাসী আয়ের কর অব্যাহতি তুলে নিতে বলেছে সংস্থাটি।
যদিও এমন প্রস্তাবে রাজি হয়নি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। রেমিট্যান্স নিয়ে নেতিবাচক আলোচনার ফল হতে পারে হিতে বিপরীত। এমনটিই আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এক কোটির বেশি বাংলাদেশি কাজ করছেন। দেশে পাঠাচ্ছেন বছরে অন্তত ২০ বিলিয়ন ডলার। যা দিয়ে মিটছে দেশের আমদানি ও বিদেশি ব্যয়ের বড় একটি অংশ।
বৈধ পথে দেশে টাকা পাঠাতে প্রবাসীদের এই আয়কে করমুক্ত রেখেছে এনবিআর। অন্যদিকে আড়াই শতাংশ প্রণোদনা দিচ্ছে অর্থমন্ত্রণালয়। ব্যাংকগুলোও দিচ্ছে আড়াই শতাংশ পর্যন্ত। তারপরও নানা সমস্যার কারণে অনেক প্রবাসী টাকা পাঠান অবৈধ চ্যানেলে।
সম্প্রতি এনবিআরের কর বিভাগের সঙ্গে বৈঠকে প্রবাসী আয়ে কর অব্যাহতি বাতিল করার সুপারিশ করেন আইএমএফের তিন বিশেষজ্ঞ।
তাঁদের মতে, কর আরোপ হলে সরকারের আয় বাড়বে, বাড়বে ব্যয়ের সক্ষমতা। প্রায় পৌনে পাঁচ বিলিয়ন ডলার ঋণ ও সংস্কার কর্মসূচির আওতায় এমন প্রস্তাব দিয়েছে সংস্থাটি।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আইএমএফের প্রস্তাব নাকচ করেছে এনবিআর।
এ প্রসঙ্গে সেন্টার ফর পলিসি ডাইলগের (সিপিডি) ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আমার মনে হয় রেমিট্যান্সে আয়কর আদায়ের সময় এখনও আসেনি। যখন দেশে রেমিট্যান্স আসার ফ্লো আরও বাড়বে, রিজার্ভ আরও স্থিতিশীল হবে, এক্সচেঞ্জ রেটটা আরও স্থিতিশীল হবে তখন এ ধরনের চিন্তা করা যেতে পারে।’
সরকার ও ব্যাংকগুলোর নানা চেষ্টায় সম্প্রতি কিছুটা বেড়েছে রেমিট্যান্স। আইএমএফের প্রস্তাবের খবর উদ্বেগ ছড়িয়েছে নানা মহলে। বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, নীতি নির্ধারণে দেশের স্বার্থকেই প্রাধান্য দেওয়া হবে।
এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক জানান, দেশে রেমিট্যান্সের ফ্লো সম্পর্কে বাংলাদেশ ব্যাংক যথেষ্ট সচেতন। যে কোনো পলিসি নির্ধারণের আগে দেশের বৃহত্তর স্বার্থকেই প্রাধান্য দেওয়া হবে। তবে টাকা পাচারকারীরা যেন প্রণোদনার অপব্যবহার করতে না পারে, সে বিষয়ে তৎপর থাকার পরামর্শ দিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা।